পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে অধ্যাপক জন আইওনিডিস, কেভিন ডব্লিউ বয়াক এবং নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ারের তিন গবেষক বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকা প্রকাশ করেছেন ‘প্লজ বায়োলজি’ জার্নালে । তালিকায় বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ সরোয়ার জাহানসহ বাংলাদেশের স্বনামধন্য ২৬ জন বিজ্ঞানীর নাম ওঠে আসে। ড. মোহাম্মদ সরোয়ার জাহান সম্পর্কে ইনকিলাব পাঠকদের জন্য খোঁজখবর নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন মোহাম্মদ আবদুল অদুদ।
জানা যায়, ড. জাহান বিসিএসআইআর এর পাল্প এবং পেপার রিসার্চ ডিভিশনের ডিভিশন ইনচার্জের দায়িত্বের পাশাপাশি সম্প্রতি মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদ হতে পদোন্নতি পেয়ে বিসিএসআইআর এর সর্ববৃহৎ ইউনিট ‘ঢাকা গবেষণাগার এর পরিচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। ড. জাহানের গবেষণার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় পাল্পিং কেমিস্ট্রি এবং তিনি বায়োরিফাইনারি, ব্লিচিং, উড কেমিস্ট্রি এবং ন্যানো সেলুলোজ নিয়ে এখনও গবেষণা করে চলেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ড. জাহান বিদেশে বহু স্বনামধন্য বিজ্ঞানীদের সাথে কলাবোরেশন রিসার্চের সাথে জড়িত। সম্প্রতি তিনি কানাডায় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব নিউ ব্রান্সউইক ইউনিভার্সিটি অব নিউ ব্রাঞ্চউইক থেকে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে রিসার্চ শেষ করে দেশে ফিরেছেন। এর আগেও তিনি দু’বার সর্বমোট আড়াই বছর মেয়াদে একই ইউনিভার্সিটিতে ভিসিটিং সায়েন্টিস্ট হিসেবে গবেষণা সম্পন্ন করেন। ড. জাহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ফলিত রসায়ন বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষ করে ১৯৯২ সালে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে বিসিএসআইআর এ যোগদান করেন। এরপর উড এবং পাল্পিং কেমিস্ট্রিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডক্টরাল ডিগ্রী গ্রহণ করেন। ড. জাহান যথাক্রমে চীন এবং কোরিয়াতে উড এবং পাল্পিং কেমিস্ট্রির উপর এক বছর মেয়াদে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। তিনি দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক মানের খ্যাতিসম্পন্ন বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে ১৯০ টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেন এবং তার গবেষণা পত্রের মোট সাইটেশন সংখ্যা ৩০১০ টি।
এসম্পর্কে চীনের ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ফেলো অজয় কান্তি মন্ডল এই প্রতিবেদককে জানান, ভাবতেই গর্বে বুক ভরে যায়, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় আমার প্রাণের প্রতিষ্ঠান বিসিএসআইআর এর বিজ্ঞানী ড. মো. সরোয়ার জাহান স্যারের নাম। প্রতিষ্ঠানের নামটা সবার কাছে অচেনা লাগতে পারে। সহজ বাংলায় সবাই প্রতিষ্ঠানটিকে ‘সাইন্স ল্যাব’ হিসেবেই ভালো চেনেন। বাংলাদেশ সরকারের সর্ববৃহৎ বহুমুখী গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই ‘সাইন্স ল্যাব’। যেখানে বিজ্ঞানের সকল শাখায় গবেষণা চর্চার পাশাপাশি উদ্ভাবনী পণ্যকে সহজে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ’ (বিসিএসআইআর) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী পন্যকে শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-এ-খুদার হাত ধরে ১৯৫৫ সালে তৎকালীন পিসিএসআইআর নামে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান।
অজয় কান্তি মন্ডল আরও বলেন, বিশ্বের সেরা গবেষকদের গবেষণাগারের কাতারে আমাদের বিসিএসআইআর মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। বাংলাদেশও একদিন গবেষণায় সবচেয়ে সেরা দেশের কাতারে নিজের নাম লেখাবে। ড. জাহানের হাত ধরে এগিয়ে যাবে বিসিএসআইআর, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বিশ্ব।সেই দিন বেশি দূরে নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।