পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই। গতকাল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলার শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেকেই হেফাজত আর চরমোনাইকে বিপরীত মেরুতে দাঁড় করাবার চেষ্টায় আছে! এরাতো বিপরীত মেরুর লোক না। হেফাজতের সাথে চরমোনাই এর তো কোনো সংঘর্ষ নেই। তাদের রুট আর আমাদের রুট সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজনৈতিক সংগঠন। হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন। দুটোর রুটই ভিন্ন। আপনি সংঘর্ষে দাঁড় করান কেন? তারা কি আমার প্রতিপক্ষ? আমার প্রতিপক্ষ ওই ব্যক্তি যে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম কায়েম করতে বাধা দেয়! আর যে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম কায়েম করতে বাধা দেয় না বরং একই কাজ করে সে আবার আমার প্রতিপক্ষ হয় কিভাবে? আর দ্বিতীয় কথা হল হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তাদের কোনো মার্কা নেই। ইসলামী আন্দোলনের মার্কা আছে। কাজেই আপনাদের সাথে ফাসেল বা বিপরীত হবে কিভাবে? প্রতিপক্ষ হবে কিভাবে? প্রতিপক্ষ বানাচ্ছেন কেন? কে বানাচ্ছে এটা? হেফাজতের সাথে চরমোনাইর বিরোধ যারা করছে তারা শত্রু। তারা অবশ্যই দুশমন। উভয়ের দুশমন। কেননা আমরা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুমত কায়েম করার চেষ্টা করছি। আর তারা প্রতিবাদ করার জন্য চেষ্টা করছে। একটা হল কায়েম করা। আরেকটা হল প্রতিবাদ করা। আর প্রতিবাদের জন্য একটি স্টেজ থেকে ভিন্ন ভিন্ন স্টেজ হওয়া ভালো। আজকে যদি এক স্টেজ থেকে প্রতিবাদ করি। যে কোনো প্রতিবাদ যতই বড় হোক না কেন একবার হলো। কিন্তু প্রতিবাদ যদি ভিন্ন ভিন্ন স্টেজ থেকে হয়; তাহলে প্রতিবাদ দীর্ঘ হলো। সার্বজনীন হলো। এজন্য যারা কোনো প্রতিবাদমুখী সংগঠন তারা আমাদেরই সংগঠন। কারণ প্রতিবাদ করতে গিয়ে যখন কোন হুকুমত কায়েম হবে, তখন তাদের যেহেতু কোনো মার্কা নেই। তাহলে তারা ইসলামের পক্ষেই সাপোর্ট দিবে। আর যদি তখন ইসলামের বাইরে সাপোর্ট দেয়, তখন আমরা মনে করব, তারা ইসলামের পক্ষের শক্তি না বরং ইসলামের বিপক্ষে শক্তি। তাই তুমি কেন তাকে বিপরীত দাঁড় করাচ্ছো? হেফাজতের সাথে আমাদের কিসের সংঘর্ষ? হেফাজত আর আমরা ভিন্ন কোনো বস্তু নয়; যখন উভয়টির রুটই ভিন্ন, তখন মোকাবেলা হবে কিভাবে? সেও কর্মসূচি দেবে। তুমিও কর্মসূচি দাও। সমস্যা কি?
তিনি সবার উদ্দেশে প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা সবাই যদি ঐক্য চান, তাহলে সমস্ত মাদরাসাগুলোকে এক করে ফেলুন। আচ্ছা সমস্ত মাদরাসাগুলো এক করা ভালো নাকি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় করা ভালো? যদি ঐক্য চান তাহলে সমস্ত মসজিদগুলোকে এক করে ফেলুন। আচ্ছা সমস্ত মসজিদ কি এক জায়গায় আসা ভালো নাকি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থাকা ভালো? যদি ঐক্য চান তাহলে সমস্ত মাহফিলগুলোকে এক করে ফেলুন। মাহফিল কি এক জায়গায় হওয়া ভালো নাকি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় হওয়া ভালো? আমি তো মনে করি এক হয়ে যাওয়া এটা মারাত্মক কঠিন একটি সমস্যা।
তিনি বলেন, এটা দুই কারণে; এক নম্বর কারণ হলো, যদি প্রতিবাদগুলো এক স্টেজ থেকে না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্টেজ থেকে হয়ে তাহলে এটা ভালো। যদি সারা পৃথিবীতে একটাই সংগঠন হয় তাহলে গোটা দুনিয়ার ইসলামের দুশমনরা এটাকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করবে। এদেরকে কেনার চেষ্টা করবে। নেতাদের হাত করার চেষ্টা করবে। যেমনটা আমরা বিগত দিনে দেখেছি। যখনই কোন সংগঠন বড় রূপ লাভ করেছে, তখন তার নেতাদের কনভার্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে পুরো দলটাই বিলিন হয়ে যায়। কিন্তু যদি সব জায়গায় হকপন্থীরা থাকে, তাহলে তাদের হাত করা দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সবাইকে কন্টোল করা যায় না। এটা সম্ভব না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সব সময় ঐক্য চায়। এরা সব সময় ঐক্যপ্রয়াসী। এদের চেয়ে ঐক্য বেশি চাওয়ার মত কেউ নাই। কিন্তু আমরা অরিজিনাল অন্তর থেকে ঐক্য চাই। আর অনেকে মুখ থেকে ঐক্য চায়। এটা হলো দুটোর মাঝে পার্থক্য। এর দলিল হল, আমরা সব সময় বলি যে, ঐক্য হবে নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে। নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে যখন ঐক্যের ডাক যে দিবে আমরা সেখানে এক নম্বরে আছি। কিন্তু যখনই ঐক্য গড়তে চায় তখনই দেখি সেখানে নীতি ও আদর্শ থাকে না। পিছনে কালো থাবা থাকে। ওই কালো থাবার ঐক্য হয়। কিন্তু অরিজিনাল ইসলামী হুকুমত কায়েম হয় না। এজন্য আমি সবাইকে বলবো যে খবরদার! ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কোন দুনিয়াবী লোভ-লালসার সংগঠন নয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একমাত্র রেজায়ে মাওলা বা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এক সংগঠনের নাম। কাজেই তাজকিয়ায়ে নফস করতে হবে। তাজকিয়া ছাড়া হবে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রতিটি নেতাকর্মীকে বলবো, কোন সময় কোন অহেতুক-বেহুদা কারো গীবত শেকায়েতে যুক্ত হবেন না।
ফয়জুল করীম বলেন, আমি যা মনে করি, বর্তমানে ঐক্যের সবচেয়ে বড় বাধা হলো ফেসবুক। বর্তমানে পরিকল্পিতভাবে ফেসবুক অনৈক্য সৃষ্টি করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।