Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কক্সবাজারে সুপারির বাম্পার ফলন

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত সুপারি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বহু স্থানে বাজারজাত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নই এ সুপারি সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি হয় বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফে ১ হাজার ৮শ’ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ ২০ মেট্রিকটন। উখিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিউটন চৌধুরী জানান, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৯শ’ ৫০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৭শ’ ৮০ মেট্রিকটন। অপরদিকে টেকনাফ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৮শ’ ৫০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭শ’ ৪০ মেট্রিকটন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উখিয়া ও টেকনাফ সমুদ্র উপক‚লীয় হওয়ায় এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি বাগানের উপযোগি। তাই অত্র এলাকায় প্রতিটি ঘরে ঘরে সুপারি বাগান রয়েছে। তারা আরও জানান, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে শত শত একর জায়গায় সুপারি বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে।
সরোজমিনে জানা যায়, জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া, ইনানী, নিদানিয়া, মাদার বুনিয়া, ছেপটখালী ও মনখালি এলাকায় গ্রামজুড়ে সুপারির বাগান। রত্মাপালং, রাজাপালং, পালংখালী হলদিয়া পালং ইউনিয়নে অসংখ্য সুপারির বাগান রয়েছে। এছাড়াও টেকনাফ উপজেলার শাপলাপুর বাহারছড়া হোয়াইক্যং নীলা টেকনাফ সদরসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর পরিমাণ সুপারি বাগান রয়েছে। বর্তমানে সোনারপাড়া বাজার শাপলাপুর বাজার ও বাহারছড়ায় সুপারি ক্রয়-বিক্রয় হাট বসছে। এদিকে, আবহাওয়ার পরিবেশ অনুক‚ল থাকায় সুপারির বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় বাগান মালিকরাও খুব খুশি।

শাপলাপুরের আব্দুল কাইয়ুম ও সোনারপাড়ার আব্দুস সালাম জানান, বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারির গাছের ফুল আসে। আর ফলন হয়ে গাছে সুপারি পাকা শুরু করে কার্তিক ও অগ্রাহায়ন মাসে। তারা আরও জানান, মূলত অগ্রহায়ণ ও কার্তিক মাস হচ্ছে সুপারির ভরা মৌসুম। এবারে আশ্বিন মাসের শেষের দিকে বাজারে আসতে শুরু করে সুপারি। ব্যবসায়ী শাকের উদ্দিন সাগর ও আবুল কালাম জানান, এ বছর সুপারির প্রতি পোন (৮০টি) ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা এবং প্রতি কাউন (১২৮০টি) সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মানভেদে দাম আরও বেশি।

পান সুপারি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুলতান আহমদ জানান, প্রতি মওসুমে এ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে লাখ লাখ টাকার সুপারি বাজারজাত হচ্ছে। এসব সুপারি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন আড়তে চলে যাচ্ছে। এছাড়া এসব সুপারি প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও রফতানি হচ্ছে। সোনারপাড়া গ্রামের বাগান মালিক আব্দুর জব্বার ও শামসুল আলম জানান, সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরও অধিক সুপারি বাগান গড়ে সম্ভব হতো।

টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসনজিৎ তালুকদার জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদন হয়েছে। সুপারি বাজারজাত করে কৃষকরা লাভবান হওয়ার কারণে এলাকাভিত্তিক সুপারি চাষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ