পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফ্রান্সের ইতিহাসে মুসলমানদের এতো অবদান থাকার পরও তারা যেভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে তা’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ নবী (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশে সহযোগিতা করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর বিরুদ্ধে শক্ত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। ফ্রান্সের পন্য বয়কট করতে হবে। ফ্রান্সে মহানবী (সা.) এর অবমাননার তীব্র প্রতিবাদ এবং একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ইসলাম ও দেশ বিরোধী কর্মসূচির প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১৩টি ইসলামী দল আহুত মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ আন্তর্জাতিকভাবে পালনের মাধ্যমেই ব্যঙ্গচিত্র তৈরিকারী ও কটুক্তিকারীদের মৃত্যুদ- কার্যকর করা সম্ভব। মাতৃভাষা দিবসের মত সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফকেও আন্তর্জাতিকভাবে পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিতে হবে।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি পীরজাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারীর সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, চরনপুর দরবার শরীফ পীর সাহেব মাওলানা আব্দুস সালাম, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সবুর মিয়া (রানীপুরা), হাফেজ ক্বারী মুহম্মদ শাহ আলম ফরাজী, হাফেজ মুহম্মদ আব্দুল বারী, কারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামান আল কাদেরী, আলহাজ মুহম্মদ খোরশেদ আলম রেজভী, কাজী অধ্যাপক মাওলানা মুহম্মদ নোমান চৌধুরী, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আল আমীন, মাওলানা মুফতী মুহম্মদ আব্দুল গফুর, মুফতী মাওলানা ফেরদৌস আহমদ কুরাইশি কুয়াকাটা পীর সাহেব, মাওলানা মুহম্মদ ওমর ফারুক গোপালগঞ্জী ও হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সোবাহান। মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্রান্সের এমন অসংখ্য সড়ক, পাড়া, গ্রাম ও শহরের নাম রয়েছে, যা আরবি ভাষা থেকে গৃহীত। এমনকি কিছু ফরাসি পোশাক ও খাবারের নাম রয়েছে, যা ফ্রান্সে মুসলিম শাসনের স্মৃতি বহন করে। বিশেষত মুসলিমরা ফ্রান্সের কৃষিব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছিলেন। দক্ষিণ ফ্রান্সের স্থাপত্যশৈলীতেও মুসলমান স্থাপত্যরীতির প্রভাব লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া মুসলিম স্পেনের জ্ঞান ও বিজ্ঞানের আলো ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ফ্রান্সকেও আলোকিত করেছিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ফরাসি বিপ্লব ৯০ দিনও টিকতে পারত না যদি উত্তর আফ্রিকার মুসলিম শাসক মোহাম্মদ ঘেইস জাহাজ ভর্তি করে গম না পাঠাতেন। সে সময় দক্ষিণ ফ্রান্সে দুর্ভিক্ষ চলছিল। রাজতান্ত্রিক ইউরোপ যখন বিপ্লব ধ্বংসের জন্য লড়ছে, তখন একমাত্র মুসলিম দুনিয়াই ছিল ফ্রান্সের পক্ষে। ১৭৯৫ সালে বিপ্লবী কমিটি ইসলামের ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আন্তধর্মীয় চুক্তি আরবি থেকে ফরাসিতে অনুবাদ করার ঘোষণা দেয়।নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ মুসলমানদের মধ্যে যদি ১২ রবিউল আউয়ালের চেতনা ও জজবা থাকত তাহলে কোনো কাফের মুশরিক ব্যঙ্গচিত্র বা কটুক্তি করার সাহস পেতো না। মহানবী (সা.) এর শানে মানহানীকর বক্তব্য, লেখা, প্রকাশনা, টিভি প্রোগ্রাম, রেডিও প্রোগ্রাম, ইন্টারনেটে স্ট্যাটাসসহ যে কোন বিষয় প্রচার, প্রকাশ ও প্রদানকারীর শাস্তি মৃত্যুদ- দিতে হবে। মানববন্ধনে ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়, দাবি সমূহ হচ্ছে, যথাযথভাবে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন এবং সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফের জজবা ধারণের মাধ্যমেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিদ্বেষী কাফের, মুশরিক ব্যঙ্গচিত্রকারীদের মৃত্যুদ- দেয়া সম্ভব, ১২ রবিউল আউওয়াল শরীফ দিবসকে আন্তর্জাতিক দিবস পালনের উদ্যোগ নিতে হবে, ফ্রান্স নেদারল্যান্ড, সুইডেনসহ যেসব রাষ্ট্রে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে, ওআইসিকে সাথে নিয়ে সারা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক জনমত তৈরী করতে হবে, জাতিসংঘের উপর শক্ত চাপ প্রয়োগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক আদালতে শক্ত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। ফ্রান্সের পণ্য বয়কট করতে হবে।
ফ্রান্সকে সমর্থনকারী রাষ্ট্র ভারতের মুসলমান নিপীড়ন ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী কর্মকা-ের জন্য সরকারী-বেসরকারিভাবে তীব্র প্রতিবাদ ও সক্রিয় প্রতিরোধ করতে হবে। ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে হবে।
ফ্রান্সের ঘটনার পক্ষে এবং সারাদেশে কটুক্তিকারী অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়াচ্ছে একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
পরে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় বিক্ষুদ্ধ জনতা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করে। মিছিল শেষে শহীদ বঙ্গবন্ধুর রূহের মাগফিরাত কামনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হায়াতে তৈয়বার জন্য দোয়া মোনাজাত করেন আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।