পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে।
সমঝোতা অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-কভ-২ এজেডডি ১২২২ (অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিন) সরবরাহ করবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ভ্যাকসিন তৈরি হলে প্রথম দফাতেই তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে সিরাম ইনস্টিটিউট। এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে নিয়ে আসবে বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস। যখনই এটা তৈরি হবে তখনই বাংলাদেশকে প্রথম সুবিধামতো সময়ে দেবে। বেক্সিমকো এই ভ্যাকসিন আনার ব্যবস্থা নেবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ডিপোতে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা দেড় কোটি মানুষকে এই ভ্যাকসিন দিতে পারবো। কারণ, একজন মানুষের দুই ডোজ করে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে। একটি ডোজের ২৮ দিন পর আরেকটি ডোজ দিতে হবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ডোজ দিতে পারবে বলে তারা জানিয়েছেন। এখানে স্টোরেজের ব্যবস্থা উনারাও করবে, আমরাও করবো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন নিতে হবে বলে সমঝোতায় বলা আছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার এই টিকা কিনবে। সøাপাইয়ারের কাছ থেকে আনার খরচসহ প্রতি ডোজের দাম পড়বে ৫ ডলার।
কারা এই টিকা পাবে এমন প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী এসব টিকা বিতরণ করা হবে। স্বাস্থ্যকর্মী, বয়স্কসহ যারা ফ্রন্টলাইনে কাজ করেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবাইকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সাংবাদিকেরাও ফ্রন্টলাইনার হিসেবে অগ্রাধীকার পাবেন।
জাহিদ মালেক বলেন, বেক্সিমকো সিরাম ইনস্টিউটের অথরাইজ এজেন্ট। তারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। ওখান থেকে আনার দায়-দায়িত্ব বেক্সিমকোর। তারা আমাদের কাছে পৌঁছায় দেবে। যারা প্রাইভেটলি দিতে চায় তাদেরও বেক্সিমকো দেবে, তবে দাম সম্ভবত আলাদা হবে। আগামী জানুয়ারিতে এই টিকা আসতে পারে বলে ধারণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা মনে করি এই ভ্যাকসিনটি নিরাপদ হবে। বিভিন্ন দেশে ট্রায়াল হয়েছে, কার্যকরি প্রমাণিত হয়েছে। এটার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আমাদের তাড়াতাড়ি পাওয়াটাও একটা বিরাট বিষয়, এটা আমরা পাবো। জনসংখ্যার দিকে আমরা ছয় নম্বরে আছি কিন্তু, করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হারের দিক থেকে আমরা ৩১ নম্বরে, অনেক পেছনে আছি। আমাদের সুস্থতার হারও ভালো।
ভ্যাকসিন কখন কার্যকর হবে তা সময় দেবে বলে। আপনারা নিজেকে নিরাপদে রাখতে চাইলে মাস্ক ব্যবহার, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
সমঝোতা স্মারকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল এবং সিরাম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক সন্দীপ মলায় এবং বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নুর ও ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আমরা সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের যোগসূত্র করে দিয়েছি। যখনই বাজারে আসবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে তখনই নিয়ে আসা হবে। সবচেয়ে কম দামে তারা আমাদের ভ্যাকসিন দেবে। তিনি বলেন, করোনা মহামারির শুরু থেকেই আমরা কাজ করছি, আমাদের কমিটমেন্ট ছিল সরকারের পাশে দাঁড়ানোর।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, গত মার্চ মাস থেকে নয় মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণা ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর গাইডলাইনে কাজ করেছি এবং তার সুফল পাচ্ছি। সারা দুনিয়ায় যেভাবে সংক্রমণ হচ্ছে বাংলাদেশে মাত্র ছয় হাজার মৃত্যুবরণ করেছে, যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশে ঊর্ধমুখী।
বিশ্বের ভ্যাকসিন নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, কোভিডের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য ১৬৬টি কোম্পানি কাজ করছে। এরমধ্যে ২৮টি কোম্পানি হিউম্যান ট্রায়াল স্টেজে চলে গেছে। মাত্র নয়টি কোম্পানি থার্ড ট্রায়াল করতে ক্যাপাবিলিটি ডেভলপ করেছে। ভ্যাকসিন গবেষণা এবং উৎপাদনকারী ছয়টি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ শুরু থেকে যেগাযোগ করছে। এরমধ্যে সবচেয়ে আশার আলো নিয়ে এসেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন মানবদেহে সাফল্যজনক প্রয়োগ করানোতে আমরা আশাবাদী হয়ে উঠেছি।
তিনি বলেন, সিরাম ইনস্টিটিউট ভারতের সবচেয়ে বড় সিরাম (ভ্যাকসিন) উৎপাদনকারী কোম্পানি, তাদের সঙ্গে অক্সফোর্ডের যে চুক্তি হয়েছে এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো চুক্তি করেছে। আমরা দ্রæত সময়ে ভ্যাকসিন পাবো বলে আভাস পাচ্ছি এবং কাছাকাছি চলে যাচ্ছি। এই চুক্তির ফলে সারা দেশের ১৮ কোটি মানুষ আশার আলো দেখবে এবং আশ্বস্ত হবে যে বেঁচে থাকার একটা অবলম্বন।
ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, সিরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বে পরিচিত ও বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের বেক্সিমকো সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে তাতে খুব সহজেই ভ্যাকসিন পাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।