পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জলবায়ু-সংক্রান্ত সবগুলো প্রকল্পেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র পেয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ-সংক্রান্ত সাতটি প্রকল্পের ওপর গবেষণা করে এমন তথ্য পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সবগুলো প্রকল্পই রাজনৈতিক সুপারিশের ভিত্তিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্পের অনুমোদনে সাবেক একজন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীকে ১০ শতাংশ প্রকল্পের অর্থ অগ্রিম ঘুষ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন, অর্থায়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় একটি প্রকল্পের আওতায় ৬৫০ কিলোওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও ভোক্তা পর্যায়ে দৈনিক মাত্র ৫০ কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্বাহী আদেশ না থাকায় বিদ্যুতের অপচয় করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পের আওতায় উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করার সুযোগ না থাকায় অবমুক্তকরণের নামে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের অপচয় করা হচ্ছে। সড়কবাতি-সংক্রান্ত দুটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে যাচাই না করেই অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলনসহ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
টিআইবির তথ্যে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে প্রাক্কলিত প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা জোগানের পরিকল্পনার বিপরীতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই অর্থের মাত্র ৬% (১২,৬৯৯.৭০ কোটি টাকা) তহবিল আন্তর্জাতিক উৎস থেকে প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় উৎস থেকে ২০২০ সাল নাগাদ যথাক্রমে ৬০৮.৬২ কোটি এবং ১২,০৯১.০৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের (বিসিসিটিএফ) মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে অর্থায়ন করা হয়েছে এবং গেøাবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ), স্পেসিফিক ইনভেস্টমেন্ট লোন (এসআইএল), ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (সিআইএফ), গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ), বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ রেজিলিয়েন্স ফান্ডের (বিসিসিআরএফ) মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে প্রশমন কার্যক্রমে তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রশমন কার্যক্রমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অর্থায়নের অনুপাত যথাক্রমে ৫:৯৫।
বাংলাদেশে প্রশমন অর্থায়নের সিংহভাগ আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করা হলেও এই আন্তর্জাতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থায়নের মাত্র ৬৭% অর্থ শুধু প্রশমন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়েছে।
টিআইবি বলছে, জাতীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে কার্যকর অবদান রাখতে বিসিসিএসএপিতে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা ও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে একটি কৌশলগত জ্বালানি পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। বাস্তবে বিগত ১১ বছরেও জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে সময়াবদ্ধ সুর্নিদিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি হয়নি। ফলশ্রæতিতে, নবায়নযোগ্য খাত থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়ে অগ্রাধিকারভিত্তিক বিনিয়োগ/অর্থায়নের বিষয়ে কোনো কৌশলগত দিকনির্দেশনা না থাকায় সহজেই পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লা ও এলএনজিতে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
টিআইবির গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, নির্বাচিত ৭টি প্রকল্পের মধ্যে ৫টি প্রকল্পের স্থানীয় বাস্তবায়ন কার্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তার উপস্থিতি এবং চাহিদাভিত্তিক তথ্য প্রদানের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ৭টি প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটিতে তথ্য বোর্ড থাকলেও তথ্য বোর্ডে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলির ঘাটতি রয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে জনদৃষ্টির আড়ালে নামসর্বস্ব তথ্য বোর্ডগুলো বসানো হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সমন্বিত তথ্য বোর্ড না থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় তথ্য বাতায়নে অঞ্চল এবং প্রতিষ্ঠানভিত্তিক তথ্য প্রকাশ ও হালনাগাদের সুযোগ রাখা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে অঞ্চলভিত্তিক তথ্য বাতায়নে তথ্য হালনাগাদের বিষয়টি অনুপস্থিত।
এসব অনিয়ম দূর করতে একাধিক সুপারিশ করেছে টিআইবি। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ কয়লা ও এলএনজির মতো জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক শক্তিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য খাতে বিনিয়োগ ও অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের অযৌক্তিক ব্যয় কমিয়ে সুলভে উৎপাদনে সরকারি প্রকল্পের ন্যায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগকারীদেরও একই ধরনের প্রণোদনা (কর অব্যাহতি এবং ক্যাপাসিটি চার্জ মুক্ত) প্রদান করতে হবে। বনায়ন ও বন্যপ্রাণী আবাস সংরক্ষণসহ বন ব্যবস্থাপনায় অগ্রাধিকারম‚লক প্রশমন অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্প তদারকি, নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন প্রতিবেদন জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে ইত্যাদি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।