Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সফল হয়নি সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র

জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের অনেক চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র হয়েছে কিন্তু তা সফল হয়নি। জনসমর্থন না থাকলে ষড়যন্ত্র করে হত্যাকান্ড ঘটানো যায়, কিন্ত ক্ষমতায় আসা কিংবা টিকে থাকা যায় না। তাই আওয়ামী লীগকে নিয়ে যত বেশি নাড়াচাড়া কিংবা ষড়যন্ত্র করা হবে, আওয়ামী লীগের জনসমর্থনের শিকড় আরও বেশি শক্তিশালী হবে- এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়েই প্রতিবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের মঙ্গলে ও কল্যাণে কাজ করেছে, যার শুভ ফলও জনগণ পাচ্ছে। এতো অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যাকান্ডের পরও আওয়ামী লীগ টিকে আছে শুধুমাত্র জনগণের সমর্থনেই।

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, কারোর দয়া বা দাক্ষিণ্যে নয়, আওয়ামী লীগ জনগণের সমর্থন নিয়েই চার চারবার ক্ষমতায় থেকে দেশের সেবা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে কাজ করে বলেই ক্ষমতায় টিকে আছে। যারা ক্ষমতায় থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ সৃষ্টি ও মানুষ হত্যা করে, দেশের কল্যাণ করতে পারে না, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে যে দলের জন্ম- তাদেরকে (বিএনপি) কেন দেশের জনগণ ভোট দেবে?

গতকাল জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যে সমস্ত সন্ত্রাসী, খুনিচক্র ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তারা বসে নেই। ১৫ আগস্ট ও ৩ নবেম্বরের ঘটনা ঘটিয়েও তারা ক্ষমতাকে ভোগ করতে পারেনি জনগণের কারণে, এটাই তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ।

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে হয়তো ভুলে যান, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে শুধুমাত্র ভোট চুরির অপরাধেই খালেদা জিয়াকে দেশের জনগণ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মাত্র দেশমাসের মাথায় পদত্যাগ করতে বাধ্য করিয়েছিল। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে দেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিল, বাংলা ভাই-জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছিল।

তিনি বলেন, দেশের একটি শ্রেণী আছে তাদের কাজই হচ্ছে সরকারের সমালোচনা করা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে জিয়া, এরশাদ এবং এরপরে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছে। এদের মূল লক্ষ্যই ছিল- দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, খুন ও সমাজে সংঘাত সৃষ্টি করা।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গীবাদের কারণেই দেশে ওয়ান ইলেভেনের সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারও খালেদা জিয়ার হাতেই তৈরি। প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন আহমদকে খালেদা জিয়াই নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর বানিয়েছিল। ৯ সিনিয়র জেনারেলকে ডিঙ্গিয়ে মঈন উ আহমদকে সেনা প্রধানও করেছিলেন এই খালেদা জিয়া। এরা সবাই তাঁর পছন্দের লোক ছিলেন। কিন্তু ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে নতুন দল গঠনের চেষ্টা করলো। যাকে আমি গ্রামীণ মোবাইল ফোনের লাইসেন্স দিয়েছিলাম সেই ড. মুহাম্মদ ইউনুস আর ডেইলী স্টারের সম্পাদককে নিয়ে নতুন দল গঠনের চেষ্টা করা হলেও জনগণ তাতে সমর্থন দেয়নি।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আরেকজন যিনি মারা গেছেন (ফেরদৌস আহমেদ কোরাইশি), তাকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না, তাকে দিয়েও কিংস পার্টি গঠনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেখানেও জনগণ কোন সাড়া দেয়নি।

আক্ষেপ করে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বেসরকারি টেলিভিশনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। কিন্তু এখানেই একেক জন একেক কথা বলেন। ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর হত্যাকান্ডের সঙ্গে খুনী মোশতাক ও জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনী মোশতাক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেই প্রথমে জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান করে। এতেই স্পষ্ট হয়, এই ষড়যন্ত্রে খুনী মোশতাকের ডানহাত ছিল এই জিয়াউর রহমান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় শুধু ক্ষমতা দখল নয়, খুনীদেরকে ইনডেমনিটি দেয়া এবং আমাদের যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সেই চেতনা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়া শুরু করলো এবং সারা বাংলাদেশটা হয়ে গেল একটা খুনীদের রাজত্ব। জেলহত্যাকান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুব স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে, সবসময় সূর্য ডোবার আগেই কারাগার লকআপ হয়। এরপর কেউ আর প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু সেইদিন গভীর রাতে যখন কারাগারে এই ১৫ আগস্টের খুনীরা হাজির হল প্রবেশ করার জন্য, তখন কারাগারের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল তারা সেখানে বাধা দিয়েছিল। কারণ তারা বলেছিল এভাবে কারাগারে প্রবেশ করা যায় না। সেই সময় অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোন যায় যে, তাদেরকে প্রবেশ করতে দেয়া হোক। এরপরই খুনীরা কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে একটি ঘরে নিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে।

তিনি বলেন, শুধু হত্যাকান্ডই নয়, একটা জাতিকে ও একটা প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। একের পর এক ক্যুর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসার, সৈনিক, আওয়ামী লীগের অগনিত নেতাকর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছিল, কত পরিবার লাশ খুঁজে পায়নি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকতে। ##



 

Show all comments
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৪ নভেম্বর, ২০২০, ২:০১ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আপনাকে শত সহস্র সালাম। বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশের পরিচিতি নতুন অর্থনৈতিক পরাশক্তির বাংলাদেশ দেশ হিসাবে। আপনি বিশ্বের প্রভাবশালী নেতা। দক্ষিণ এশিয়াতে দক্ষ বিচক্ষন বিশালাকার ব‍্যাক্তিত্বের অধিকারী নেতা। বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং জীবন্ত কিংবদন্তি। শান্তির জন্যে বাংলাদেশের দশভাগের একভাগ পার্বত্য চট্টগ্রামের রক্তাক্ত জনপদের শান্তির স্বপ্ন সারথী আপনি। গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পদ্ধাসেতুর কাজ বিশ্ব ব‍্যাংক ও দাতা সংস্থার টাকা বন্ধকরেদিল। পদ্ধাসেতু হবেনা। আপনি তেজুদীপ্ত কন্ঠে বিশালাকার ব‍্যাক্তিত্ব ও সাহসিকতার মাঝেই ঘোষণা করলেন পদ্ধাসেতু হবেই। দেশীয় অর্থদিয়ে দাতা সংস্থা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে বিরাট চ‍্যালেঞ্জ নিয়ে ছিলেন। আজ পদ্ধাসেতু দিশ‍্যমান। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কন‍্যার পক্ষেই সম্ভব হয়েছিল। আর কাওকে দিয়ে কল্পনা করা যাবে? আপনি আকাশবিজয়ী। আপনি সাগর বিজয়ী। ডিজিটাল বাংলাদেশেরসূর্য সারথী। আন্তর্জাতিক ভাবে অনেক পুরুস্কারে সম্মানিত আপনি।মিয়ানমারের গনহত‍্যা রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত নারী শিশু যুবক বৃদ্ধা অসহায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আশ্রয় দাতা হিসাবে হাজার হাজার মানুষের জীবন বাচানোর জন্যে আন্তর্জাতিক ভাবে মানবতার মা পুরুস্কার প্রাপ্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তির জন্যে। এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবন বিশালাকার শান্তির জন্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত প্রয়োজন ছিল। শান্তিতে মানবতার সেবায় নোবেলজয়ী ঘোষণা করা। নোবেল শান্তি পুরুস্কার দেওয়া বাংলাদেশের মানুষকে এই প্রাপ‍্য সম্মাননা হতে বঞ্চিত করা হলো বাংলাদেশ। যখনই বিশ্ব গন মাধ্যমে ওয়াশিংটন পোষ্ট বিশ্ব ব‍্যাংক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শক্তিশালী অবস্থানের প্রশংসা করছে অনেক গুলো সুচকে ভারত কে পিছনে পেলেছে বাংলাদেশের রিজার্ভ নিরাপদ আপনি পারবেন রিজার্ভ ট্রিলিয়ন ডলারের ঘরেবাংলাদেশ কে নিয়ে যেতে। বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে শক্তিশালী উন্নশীল দেশের কাতারে নিয়ে যেতে ভীষন আপনার মহাপরিকল্পনা দৃশ্যমান হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের জ্বালা যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আজ বাংলাদেশ। আপনার বিচক্ষন বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে দেশ নিরাপদ। বাংলাদেশের লক্ষ কোটি মানুষের দোয়া আপনি এগিয়ে যান ইনশাআল্লাহ আল্লাহ্ আপনার সহায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Sharkar Mahdi Hasan ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৭ এএম says : 0
    আমরাও রাজপথে এইসকল ষড়য্ন্ত্রকারীদের জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত l জয় বাংলা l
    Total Reply(0) Reply
  • Rajib Isan ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৭ এএম says : 0
    এরা সংখ্যায় বেশি না,এদের চিন্হিত করে রাখা দরকার।বিশেষ করে যারা দেশ ও জনগনের ভাগ্য নিয়ে চিনিমিনি খেলতে চাই।এরা দেশ ও জনগনের দুশমন।
    Total Reply(0) Reply
  • Sipar Ahmed ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৮ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ বাংলার জনগন সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়াবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ নূরুল আলম ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৮ এএম says : 0
    যথার্থই বলেছেন জাতির জনকের হীরক কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।।
    Total Reply(0) Reply
  • Ronju Nuruzzaman ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৮ এএম says : 0
    ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সকল অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে , সুস্থ রাখুন, সুসাস্হ ও দীর্ঘ জীবন দান করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Rashidul Islam ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৯ এএম says : 0
    গণতন্ত্রের মানসকন্যা বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্র সঠিক জবাব দিবো।
    Total Reply(0) Reply
  • Aktheruzzaman Dipu ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৩০ এএম says : 0
    শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। উনাদের আত্তার মাগফেরাত কামনা করি, আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Nasim Akhtar ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৩০ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এদেরকে কিন্তু চিহ্নিত করা কঠিন।তবুও এদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্হা নিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Mazedur Rahman ৪ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৩০ এএম says : 0
    আল্লাহ সহায় থাকলে কেউ; কিছুই কোরতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ জাকির হোসেন ৪ নভেম্বর, ২০২০, ২:০৭ পিএম says : 0
    আশা করি আপনি আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকবেন। কিন্ত .........................
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ