পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নৌবাহিনীর এক লেফটেন্যান্টকে মারধরের ঘটনায় ছেলে ইরফান সেলিম গ্রেফতার হয়। অতঃপর বাসায় টর্চারসেল, বাড়িঘর জমিদখলসহ হাজী সেলিম ও তার ছেলের নানা অপকর্মের ভয়াবহ চিত্র মিডিয়ায় উঠে আসে। বাসায় র্যাবের অভিযানের সময় আত্মগোপনে চলে যান ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিম। এরপর এক সপ্তাহের বেশি সময় অন্তরালে ছিলেন পুরান ঢাকা নিয়ন্ত্রণের এই ‘মহারাজা’। গত শুক্রবার গাড়ীর বহর নিয়ে পুরান ঢাকার চকবাজার শাহী জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করলেও জনসম্মুখে আসেননি। তবে গতকাল জেলহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে দেখা মিললো ঢাকা-৭ আসনের বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের। ৩ নভেম্বর সকালে নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান তিনি। এ সময় বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম তার সঙ্গে ছিলেন।
জানা গেছে, সকাল সোয়া ৯টার দিকে একটি সাদা এসইউভিতে চড়ে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে জেলহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন হাজী সেলিম। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান পৌনে ১০টার দিকে। গাড়ি থেকে নেমে তিনি দাঁড়ান কারাগারের পুরোনো মালখানার কাছে। মন্ত্রীর ইশারা পেয়ে এগিয়ে যান আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। এ সময় হাজী সেলিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সালাম দিয়ে তার পাশে দাঁড়ান। পরে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হাজী সেলিমের মধ্যে সেই সময় বাক্যালাপ হতে দেখা যায়নি। সকাল সোয়া ১০টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারাগার থেকে চলে গেলে হাজী সেলিমও সাড়ে ১০টার দিকে বেরিয়ে যান। ছেলে গ্রেপ্তার হাওয়ার পর সোনারগাঁয়ে তার মালিকানাধীন মদিনা সিমেন্টের নামে দখল করা ১৪ বিঘা জমি উদ্ধার এবং ঢাকার দখলে রাখা অগ্রণী ব্যাংকের দখল করা এক বিঘা জমি উদ্ধার করা হলেও তিনি বাধা দেননি। মাঝখানে পুরান ঢাকার অনুসারিদের দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ‘হাজী সেলিম ও ওয়ার্ড কমিশনার এরফান সেলিম সৎ’ দাবি করা হলেও তাকে দেখা যায়নি। মূলত হাজী সেলিমকে বাইরে খুব একটা দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২৫ অক্টোবর রাতে ধানমন্ডির কলাবাগারে এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করেন ওয়ার্ড কমিশনার ইরফান সেলিম। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও পরদিন ভোরে হাজী সেলিমের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলার পর র্যাব পুরান ঢাকায় চকবাজারের ২৬ দেবীদাস লেনে হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালায়। পরে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে হেফাজতে নেয়। বাসায় অবৈধভাবে মদ ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুজনকে এক বছর করে কারাদন্ড দেন। এরপর কয়েকটি মামলা নিয়ে এখন ডিবির রিমান্ডে আছেন ইরফান।
২৭ অক্টোবর ডিএসসিসির কাউন্সিলর পদ থেকে ইরফানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এছাড়া সংসদ সদস্যের পরিবারের ‘অবৈধ সম্পদের’ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে দুদক। ছেলের ওই ঘটনার পর থেকে আড়ালে ছিলেন হাজী সেলিম। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন হাজী সেলিম বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মরহুম মেজর জেনারেল (অব) মীর শওকত আলীর কর্মী ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। সে সময় সাবেক ঢাকা-৮ আসনের বিএনপিপ্রার্থী আবুল হাসনাতকে হারালেও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান বিএনপিপ্রার্থী নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর কাছে। তবে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের সময় গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘদিন নেপালে পালিয়ে ছিলেন। সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওই আসনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বিএনপির প্রার্থী নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে প্রার্থী ও ভোটারবিহীন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে পরাজিত করে এমপি হন হাজী সেলিম। এরপর ২০১৮ সালে আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে হারান তিনি। বিগত দশম জাতীয় সংসদে ১৬ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের নিয়ে আলাদা একটি জোট করে ওই জোটের নেতা হন। স্থানীয়রা জানান, সংসদ সদস্যের প্রভাব খাটিয়ে শত শত কোটি টাকার জমি-ঘরবাড়ি দখল করলেও দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে হাজী সেলিম কথা বলতে পারেন না। শুধু ইশারায় আদেশ-নির্দেশ দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।