Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তরুণদের নেশায় আসক্ত করতে নতুন হুমকি ই-সিগারেট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৯ পিএম

সিগারেট কোম্পানিগুলো তরুণদের মাঝে ই-সিগারেটের ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশলে ই-সিগারেটের প্রমোশনা চালাচ্ছে। যা তরুণ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। তাই খুব বেশি দেরি হয়ে যাবার আগেই বাংলাদেশ এর তরুণ সমাজকে রক্ষায় এখনই ই-সিগারেট বন্ধ করা জরুরি। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে সংশোধনে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি বিদ্যমান অর্থ আইনে প্রদত্ত ই-সিগারেট আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয়া জরুরি।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) ট্যোবাকো কন্ট্রোল এন্ড রির্সাচ সেল (টিসিআরসি) এর উদ্যোগে ঢাকায় অফিসার্স ক্লাব ঢাকা মিলায়তনে তরুণদের নেশায় আসক্ত করতে নতুন হুমকি ই-সিগারেট: বন্ধের উপায় শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তরা এ কথা বলেন।

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারির সভাপত্বিতে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি স্পীকার সংসদ সদস্য এড. ফজলে রাব্বি মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু। অনলাইন জুম সফটওয়ারের মাধ্যমে যুক্ত হন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু, রানা মোহাম্মদ সোহেল, সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত, সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার, সংসদ সদস্য প্রফেসর মাসুদা রশিদ চৌধুরি। এছাড়াও অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার এম এ মালেক, নাটাবের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এবং দি ইউনিয়ন পরিচালক গেন কোয়ান।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তার প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিয়ে স্পষ্ট কোন আইন না থাকায় অহরহ যত্রতত্র ই-সিগারেট বাংলাদেশে আমদানি ও বিক্রয় করা হচ্ছে অত্যন্ত সুলভ মূল্যে। সিগারেট কোম্পানীগুলো ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর বলে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করছে। তবে ইতিমধ্যে ই-সিগারেটের ভয়াবতা থেকে জনগণকে রক্ষার জন্য ভারতসহ বিশে^র ৪২ টি দেশে ই-সিগারেট এবং এইচটিপি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৫৬টি দেশ ই-সিগারেট ক্রয়-বিক্রয়ের উপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে।

 

এড. ফজলে রাবি মিয়া বলেন, আমাদের ই-সিগারেট বন্ধে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে আমরা ককাস তৈরি করব। আমরা বিশ^াস করি ২০৪০ সালের আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত তামাকমুক্ত দেশ বাস্তবায়ন করব।

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করে তামাক কোম্পানীগুলো ইউটিউব, ফেসবুক, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এছাড়াও যারা ধূমপান ছাড়তে চায় তাদেরকে প্রচলিত সিগারেটের বদলে ই-সিগারেট ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। ই-সিগারেটের প্রসার বন্ধে এখনই কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি।

শামসুল হক টুকু বলেন, ধূমপান মাদকের প্রবেশ দ্বার। আমাদের নতুন প্রজন্ম ই-সিগারেট নামে ক্ষতিকর পণ্যে আসক্ত হয়ে পড়ার আগেই আমাদের এর প্রসার রুখতে হবে। আইনের ফাকফোকর ব্যবহার করে ই-সিগারেট আমদানী করা হচ্ছে তা নির্ণয় করে আমদানী বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে একটি বিশেষ অধ্যাদেশ রাজি করতে হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ই-সিগারেট তরুণদের তামাক সেবনের প্রেরণা দেয়। সিগারেট থেকে ই-সিগারেট নিরাপদ তা ভাবার কোন কারণ নেই। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুনাফার জন্য আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ঝুকিতে ফেলেছে ই সিগারেট ব্যবসায়ীরা। আমরা সকল সংসদ সদস্য মিলে ই-সিগারেটের ভয়াবতা থেকে তরুণদের রক্ষা করতে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।

প্রফেসর ডা. এমএইচ মিল্লাত বলেন, সিগারেটের কোম্পানীগুলো আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে হত্যা করছে। আমরা সকল সংসদ সদস্য ই সিগারেট বন্ধে একমত। সরকারী-বেসরকারী সবাই মিলে ই-সিগারেটের প্রসার বন্ধে কাজ করতে হবে। শিরিন আক্তার বলেন, ই-সিগারেটের প্রসারের আগেই এর আমদানী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে । আর এর জন্য এখনই আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রফেসর মাসুদা রশিদ চৌধুরি বলেন, স্বাস্থ্যের ক্ষতি বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম রক্ষার স্বার্থে এ মূহুর্তে ই-সিগারেট নিষিদ্ধের বিকল্প নেই। এছাড়াও দেশে বিদেশ থেকে শতাধিক তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মী জুম সফটওয়ারের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন।



 

Show all comments

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ