পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনাঘাট এলাকায় অন্তত ১১ বিঘা খাসজমি দখল করে রেখেছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা গ্রুপ। সরকারি সম্পত্তি দখলের কথা স্বীকারও করেছেন গ্রুপটির একজন কর্মকর্তা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে বালু ভরাট করে ১১ দশমিক ৩৮ বিঘা খাসজমি দখল করা হয়। সে সময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি জমি চিহ্নিত করে লাল পতাকা টানিয়ে দেন। কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই পতাকা তুলে ফেলে দেয় মদিনা গ্রুপের লোকজন। পরে দখল করা জমির চারদিকে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে গ্রুপটি। এমপির প্রতিষ্ঠানের দখল করা ওই সম্পত্তির বর্তমান বাজারমূল্য ১৭ কোটি ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-মামুন বলেন, মদিনা গ্রুপের দখলে থাকা প্রায় ১১ বিঘা সম্পত্তি চিহ্নিত করেছি। দু’এক দিনের মধ্যে ওই সরকারি সম্পত্তির ওপর সাইনবোর্ড ও লাল পতাকা টানানো হবে এবং স্থাপনা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হবে। সরকারি খাসজমি দখলমুক্ত রাখতে সে সময় উপজেলা ও জেলা প্রশাসন মদিনা গ্রুপকে একাধিকবার উচ্ছেদ নোটিশ পাঠিয়েছিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় থেকে পাওয়া নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হুসাইন তদন্ত করে জেলা প্রশাসক ও হাজী সেলিমকে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মদিনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী সেলিম তার মালিকানাধীন মদিনা গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান করার জন্য মেঘনাঘাট এলাকায় চর রমজান সোনাউল্লাহ মৌজায় দিয়ারা ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ৭৪১০, ৭৪১২, ৭৪১৪, ৭৬২৮, ৭৬৩৫, ৭৬৩৬, ৭৬৪৪, ৭৬৪৫, ৭৬৫৩ ও ৭৬৫৭ এই ১০টি দাগে ১ দশমিক ০৮৪৪ একর এবং ৯৬০১ দাগে ২ দশমিক ৩৩২০ একর ভ‚মি অবৈধভাবে বালু ফেলে দখল করে নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দখল করা সম্পত্তি স্থায়ী বন্দোবস্ত পেতে ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট মদিনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কোম্পানির প্যাডে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেন হাজী সেলিম। এতে তিনি তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের পাশের জমিকে খাস সম্পত্তি উল্লেখ করে তা নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে স্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে অনুরোধ করেন। তবে ওই আবেদনে সাড়া দেয়নি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, তিনি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি জমি দখলে নিয়েছেন। এরপর বন্দোবস্ত নেয়ার জন্য চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন। আগে দখল, পরে আবেদনের বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। তবে তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আর এগোয়নি প্রশাসন। তবে নতুন করে উচ্ছেদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
গত শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দখল করা খাস জায়গার চারদিকে সীমানাপ্রাচীর। ভেতরে বিভিন্ন স্থাপনা। সেখানে চলছে সিমেন্ট উৎপাদনের কাজ। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর কারখানার ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেননি নিরাপত্তাকর্মীরা।
মদিনা গ্রুপের উপব্যবস্থাপক (ল্যান্ড) মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমাদের কারখানার ভেতরে সরকারি সম্পত্তি রয়েছে, এ কথা সত্য। সম্পত্তিগুলোর স্থায়ী বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাজী সেলিম নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলেন। আবেদনে প্রশাসন কোনো সাড়া না দেয়ার কারণে আমরা আর সামনে এগিয়ে যেতে পারিনি। প্রশাসন এখনো যদি খাসজমিগুলো আমাদের কোম্পানির নামে বন্দোবস্ত দিতে রাজি হয় তবে নিয়ম মোতাবেক সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দিয়ে বন্দোবস্ত নিতে রাজি আছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, মদিনা গ্রুপের দখল করা সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে সবকিছু দৃশ্যমান হবে। তিনি আরও বলেন, বিনা অনুমতিতে সরকারের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি দখল করার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।