Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাইকোর্টে তদন্ত প্রতিবেদনে জড়িত স্বামীও

গৃহবধূকে বিবস্ত্র করার দায় রয়েছে ওসি-এএসপি’র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নোয়াখালির বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ডিডিও ধারণ, ধর্ষণ চেষ্টা এবং ইন্টারনেটে ভাইরাল করার ঘটনায় এএসপি, ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কেউই দায় এড়াতে পারেন না। ঘটনার সঙ্গে ওই নারীর স্বামীও জড়িত। এ মন্তব্য করা হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,ওই ঘটনায় নারীর স্বামীর সম্পৃক্ততা ছিল। গত ১০-১২ বছর ধরে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু তিনি ঘটনার ৫-৬ দিন আগে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এসেছিলেন।

নারীকে শ্লীলতাহানি করার ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি), বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও চৌকিদারের অবহেলা রয়েছে। ওই নারীকে শ্লীলতাহানির অবহেলা ও দায়ীর ঘটনায় এএসপি, ওসি, স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও চৌকিদারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে। উপস্থাপিত তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামি ২৯ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল আদালতে বিষয়টি আদারতের দৃষ্টিতে আনয়নকারী অ্যাডভোকেট জেডআই খান পান্না, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন, সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষে ব্যারিস্টর খন্দকার রেজা-ই-রাকিব শুনানিতে অংশ নেন।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর নোয়াখালির বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ফৌজদারি মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান হাইকোর্ট। ওইদিন আদালতের নজরে আনার পর ফুটেজ শ্লীলতাহানির ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সরানোর জন্যে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে, সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষণ করে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে ফুটেজ সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

এছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরণের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালির পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে, ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি-না, তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দেন আদালত।

নোয়াখালির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকবেন জেলা সমাজসেবা অফিসার এবং চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ। কমিটি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। গত ২৮ অক্টোবর ওই প্রতিবেদন জমা দিতে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়।
গত ২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালির বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৩২ দিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ৪ অক্টোবর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেধে রাখে স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগীরা। এরপর গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে তারা মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। পরে সেটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হয়।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওসি

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ