পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেনাবাহিনী দেশের মানুষের বিশ্বাস ও ভরসার প্রতীক। দেশের সংবিধান এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য এ বাহিনীকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনও ধরনের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য সদা সতর্ক থাকতে হবে। এ বাহিনীর সব সদস্যকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
গতকাল সকালে পটুয়াখালীর লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাসে নবপ্রতিষ্ঠিত তিনটি ব্রিগেড ও ৫টি ইউনিটের পতাকা উত্তোলনে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে পটুয়াখালীর লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাসে যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে লেবুখালীতে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তি চাই, বন্ধুত্ব চাই। বৈরিতা চাই না, যুদ্ধ চাই না। কোনও ধরনের সংঘাতে আমরা জড়িত হতে চাই না। কিন্তু যদি কখনও আক্রান্ত হই, সেটা মোকাবিলা করার মতো শক্তি যেন আমরা অর্জন করতে পারি, সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাই এবং সেভাবে তৈরি থাকতে চাই।
বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, মানুষের আস্থা অর্জন করে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে দেশের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে পেশাদারিত্বের কাক্ষিত মান অর্জনের জন্য আপনাদের সবাইকে পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনও ধরনের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত স্পষ্ট, যেটা জাতির পিতা দিয়ে গেছেন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়েই আমরা বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নত করতে চাই। কিন্তু যদি কখনও আমরা আক্রান্ত হই, সেটা মোকাবিলা করার মতো শক্তি যেন আমরা অর্জন করতে পারি, সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাই এবং সেভাবে তৈরি থাকতে চাই। শান্তির পথ বেয়ে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী জনগণের বাহিনী, সেনাবাহিনী জনগণের বাহিনী। এ দেশের উন্নতি হলে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পরিবারের উন্নতি হবে। সে কথা মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
করোনাকালে দেশের মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাঁড়ানোর জন্য সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে ধন্যবাদ জানান এবং পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা এই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সম্পূর্ণ বঞ্চিতই ছিলাম। কাজেই সেখানেই আমাদের একটা এখন ডিভিশন হলো। সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনার আলোকে প্রাকৃতিক শোভাকে নষ্ট না করে পরিবেশবান্ধব সেনানিবাস গঠনের পরিকল্পনার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই এলাকায় সেনানিবাস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও প্রাণসঞ্চার করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সেনাবাহিনীর ভেতরে মূল চালিকাশক্তি, ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, দায়িত্ববোধ এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা বজায় রেখে আপনাদের স্বীয় কর্তব্য যথাযথভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাবেন সেটাই আশা করি।
অনুষ্ঠানস্থলে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্ব-স্ব ইউনিটের পতাকা তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল আবুল কালাম মো. জিয়াউর রহমানসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নতুন ব্রিগেডগুলো হলো সদর দফতর ৭ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড, প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড, সদর দফতর ২৮ পদাতিক ব্রিগেড। ইউনিটগুলো হলো ৪৯ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১২ সিগন্যাল ব্যাটালিয়ান, ৬৬ ইস্টবেঙ্গল, ৪৩ বীর এবং ৪০ এসটি ব্যাটালিয়ন।
২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি সপ্তম পদাতিক ডিভিশনের পতাকা উত্তোলন করে এই সেনানিবাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর একনেকে এই সেনানিবাসের প্রকল্প অনুমোদন হয়। এর নির্মাণ ব্যয় ১ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। এর আয়তন এক হাজার ৫৩২ একর। বরিশাল ও পটুয়াখালীর সীমান্তবর্তী পায়রা নদীর তীরে এই সেনানিবাস প্রতিষ্ঠিত। ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর অংশ হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এই সেনানিবাস প্রতিষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।