Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সচিব পদ-পদবি অন্য প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার থাকছে না

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অধীন অফিসগুলোতে সরকারি পদ-পদবি না রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সচিব পদ নিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব পদনাম সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সরকারের কয়েকটি বিধি দিয়ে সরকারি পদনাম ও পদবি সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব, ও সিনিয়র সচিব নির্ধারিত। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ইউজিসিসহ কয়েক প্রতিষ্ঠানে সচিব পদ নিয়ে বিড়ম্বনা তৈরি হয়েছে। আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি পদনাম অপব্যবহার করায় এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
গত ১৯ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অধীন অফিসগুলোতে পদনাম ও পদবি সৃজনের ক্ষেত্রে সরকারি পদনাম ও পদবি সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব এবং সিনিয়র সচিব যেন ব্যবহার না হয় এবং ইতোপূর্বে অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামোতে বিদ্যমান ত্রæটি/বিভ্রান্তি নিরসনে মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরপত্র অনুযায়ী আওতাভ‚ক্ত সরকারের ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধিমালা-২০০২ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পদনামসূহ পরিবর্তন করে গ্রেড অনুযায়ী অনুরূপ ক্ষেত্রে দফতর সংস্থার জন্য প্রযোজ্য পদনাম অন্তুর্ভুক্ত করে পদনাম সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলসহ ২৫টি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে। দুই দফায় এই চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়/বিভাগে ব্যবহৃত সরকারের বিভিন্ন পদনাম ও পদবিসমূহের বিধি বর্হিভ‚ত ব্যবহার নিয়ে এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত এই পরিপত্রে বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫৫(৬)-এর আলোকে প্রণীত রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬, সচিবালয় নির্দেশমালা, ২০১৪ এবং অন্যান্য বিধি দ্বারা সরকারের বিভিন্ন পদনাম ও পদবি সজ্ঞায়িত। সরকারের সিনিয়র সচিব/ সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব ও সহকারী সচিব পদসমূহে ক্যাডার কর্মকর্তাগণের নিয়োগ ও পদোন্নতি সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা, ২০০২ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, সরকারের পদনামসূহ বিধি বর্হিভ‚তভাবে বিভিন্ন আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/সংগঠন, অধস্তন অফিস ও সংযুক্ত দফতরসমূহ এবং বেসরকারি অফিসমূহে ব্যবহৃত হচ্ছে। উপরিউল্লিখিত বিধিমালা দ্বারা নিয়োগ বা পদোন্নতিপ্রাপ্ত নন এমন ব্যক্তি সরকারের পদনামসূহ অনুমোদিত ব্যবহারের ফলে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। বিধি বর্হিভ‚তভাবে বা আংশিক পরিবর্তন করে উল্লিখিত সরকারি পদনামসূহের ব্যবহার নৈতিকতা পরিপন্থি এবং দন্ডবিধি-১৮৬০ ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিপত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্দেশনায় বলা হয়, মন্ত্রণালয়/বিভাগের অধীন অফিসগুলোতে পদনাম ও পদবি সৃজনের ক্ষেত্রে সরকারি পদনাম ও পদবি সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব, ও সিনিয়র সচিব যেন ব্যবহৃত না হয় এবং ইতোপূর্বে অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামোতে বিদ্যমান ত্রæটি/বিভ্রান্তি নিরসনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সরকারের মন্ত্রণালয়/ বিভাগ, সংযুক্ত দপ্তর ও অধীন অফিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের স্ব স্ব সাংগঠনিক কাঠামোতে অনুমোদিত পদনাম ও পদবি পূর্ণাঙ্গ ও সঠিকভাবে তাদের দাপ্তরিক সিলমোহর, নেমকার্ড, নেমপ্লেট, নথি এবং ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে হবে। রাষ্ট্রীয়/জাতীয় অনুষ্ঠানসমূহে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে রক্ষিত কর্মকর্তাদের তালিকা অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পরিপত্রের বাস্তবায়ন অগ্রগতিও জানতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
একজন কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, নির্বাচন কমিন বিটিআরসি, বিআইডবিøউটিএ, শিপিং করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন সংস্থায় সরকারির পদনামগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা ক্যাডার সার্ভিসের কেউ নন, অথচ তাদের পদনাম ব্যবহার নিয়ে ব্রিবত হতে হয় সরকারি কর্মকর্তাদের। আর যারা এসব সংস্থায় সচিব পদে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ পান তারা উপসচিব বা তার নিচের পদের।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিটিআরসিতে কমিশনের যে সচিব আছেন তিনি উপসচিব পদমর্যাদার ক্যাডার সার্ভিসের সরকারি কর্মকর্তা। অপরদিকে ইউজিসিতে যে সচিব তিনি ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তা নন। সরকারের একজন সচিব বা অতিরিক্ত সচিব কিংবা যুগ্মসচিব কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এসব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সচিবরাও নিজেদের পরিচয় দিলে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসব জটিলতার কারণেই পদনাম সংশোধন বা ব্যবহার না করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
##



 

Show all comments
  • N Islam ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    সিদ্ধান্তটি ভালই । কিন্তু একই সাথে ডেপুটি কমিশনার (ডিসি)-দেরকে জেলা প্রশাসক লেখা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে । কয়দিন পরে হয়তো দেখবো ইউএনও-রা উপজেলা প্রশাসক লেখা শুরু করেছে ।
    Total Reply(0) Reply
  • মো: শামসুল আলম ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:৪২ পিএম says : 0
    পদবী বরং জেলা শাসক করা যেতে পারে; পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে এমনটিই আছে, কোন অসুবিধা হচ্ছে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ