৩ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা আত্মসাত মামলায় প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে হালদার) দেশে ফেরা মাত্র গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন বিচারপতি বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া পিকে হালদার আগামি ২৫ অক্টোবর দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ফেরার টিকিট কেটেছেন-মর্মে জানান আবেদনকারীর কৌঁসুলি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। ওইদিন বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তিনি দেশে ফেরামাত্র তাকে গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দেন আদালত। এর আগে আত্মসাতকৃত অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা করতে নিরাপদে তার দেশে ফেরার নিশ্চয়তা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন পিকে হালদার। গতকাল আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানির পর উপরোক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।

নির্দেশনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি খুরশিদ আলম খান বলেন, পিকে হালদার দেশে ফিরতে পারবেন। কিন্তু তিনি দেশে ফেরার পর বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। এছাড়া সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এ সময় গোপনে কানাডায় পাড়ি জমান পি কে হালদার। দীর্ঘদিন সেখানে অবস্থান শেষে তিনি দেশে ফিরতে আগ্রহ দেখান। এজন্য তার নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং একটি আবেদন জানায়। তাতে বলা হয়, পি কে হালদার দেশে ফিরতে চান। এজন্য তিনি নিরাপত্তা চান। বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করতেই তার এ উদ্যোগ বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত ২১ জানুয়ারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পিকে হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন আদালত। সেই আদেশ স্থগি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়ায় হাইকোর্টের আদেশ থেকে যায়। এসব আদেশের অনেক আগেই পি কে হালদার গোপনে দেশত্যাগ করে কানাডায় পাড়ি জমান।