পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা। স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ছে অনেক শিশু, বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশুশ্রম, মেয়ে শিশুরা বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। পথশিশুদের স্বাস্থ্য ও সার্বিক নিরাপত্তায় সকলকে একত্রিত হয়ে কাজের আহ্বান।
বুধবার (২১ অক্টোবর) অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি)’র ‘ডেভেলপমেন্ট অব চিলড্রেন অ্যাট হাই রিস্ক (ডিসিএইচআর)’ প্রকল্পের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অনলাইন সংলাপের আয়োজনে বক্তারা তাদের আলোচনা তুলে ধরেন।
নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংলাপে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক্সিলারেটিং প্রোটেকশন ফর চিল্ড্রেন (এপিসিপি) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) এস. এম. লতিফ এবং শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবা বিলকিস।
এছাড়াও সংলাপে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুছ সহিদ মাহমুদ, আইএলও'র সৈয়দা মনিরা সুলতানা, ছায়াতল বাংলাদেশ এর সোহেল রানা, এডুকো বাংলাদেশ’র আফজাল করিম খানসহ উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
অনলাইন সংলাপে ডিসিএইচআর প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউকেএম ফারহানা সুলতানা করোনায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা কেমন আছে তা নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, এএসডি সংস্থা ‘ব্রেদ ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড’ জার্মানির আর্থিক সহায়তায় ২০১২ সাল থেকে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নে কাজ করে আসছে।
এ সময়ে তিনি প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং কার্যাবলীসহ পুরো বিষয়টি আলোচনা করেন। করোনায় পথশিশুদের অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, করোনায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে পথশিশুরা। এদের অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে নিযুক্ত আছে, হাতে কাজ না থাকায় তাদের পুষ্টিচাহিদা পূরণ হচ্ছে না। নাইটশেল্টারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারনে রাত্রিকালীন থাকার সুযোগ বন্ধ থাকায় যারা আগে নিরাপদ ছিল তারাও এখন খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে আবার অনেকে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
শিশু শ্রমের উপর করোনার প্রভাব আলোচনায় এএইচডি এর একটি জরিপ তুলে ধরা হয়। করোনার কারণে ৩৬ দশমিক ৬ ভাগ শিশু কোন কাজ হারিয়েছে। জরিপকৃত শিশুর ৮৬ দশমিক ৬ ভাগ শিশুর কাজের ক্ষতি হয়েছে। ৫০ দশমিক ৫ ভাগ শিশুরা তাদের করোনা প্রাদুর্ভাবের পর পেশা পরিবর্তন করেছে। করোনার পূর্বে ৫৭ দশমিক ২ ভাগ শিশুর গড় আয় ছিলো ১০০১-৩০০০ টাকা যা করোনার পর ৪৭ দশমিক ৪ ভাগ হয়েছে। ৭৭ দশমিক ২ ভাগ শিশু কাজে যাবার সময় মাস্ক ব্যবহার করে। ৩০ দশমিক ৯ ভাগ শিশুর আয়ের উপর তাদের পরিবার নির্ভর করে। ৬৮ দশমিক ১ ভাগ শিশু সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা পেয়েছে।
করোনাকালীন সময়ে শিশু নির্যাতনের চিত্রঃ মোট ১০৭৮ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে তাদের মধ্যে ১৩০ জনের বয়স ৬ বছরের কম এবং ২৪২ জনের বয়স ৭-১২ বছরের মধ্যে -৬২৭ জন শিশু ধর্ষনের এবং ১৫১ জন শিশু ধর্ষনের চেষ্টার শিকার হয়েছে ২০ জন ছেলে শিশু বলাৎকারের শিকার হয়েছে -১২ জন গৃহকর্মী শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। মোট ৪৪৫ জন শিশু হত্যার শিকার হয়েছে যার মধ্যে ১০৮ জনের বয়স ৬ বছরের নিচে আর ৮৩ জনের বয়স ৭-১২ বছরের মধ্যে ২৭ জন শিশুকে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে। এসময় শিশুদের এসব নানাবিধ সমস্যা বিবেচনায় তাদের নিরাপত্তায় সুপারিশও করা হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবা বিলকিস বলেন, শিশু শ্রম নিরসন এবং শিশু উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়কেও কাজ করতে হবে। এবং একই সাথে বিভিন্ন সংস্থাগুলোকেও সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে, নয়তো শিশু উন্নয়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, করোনাকালীন অবস্থায় কিছু সংস্থার এক্টিভিটি কমে গিয়েছে, ২শত ৮৪ কোটি টাকার শিশু শ্রম নিরসন কার্যক্রমের মেয়াদ বৃদ্ধির আলোচনা হচ্ছে এবং সংস্থা এনজিও গুলোকে তালিকাবদ্ধ করা হবে।
এপিসিপি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) এস. এম. লতিফ বলেন, আমারা সবাই এখন একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশটা নিন্মমধ্য আয়ের দেশ, তাই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। করোনার জন্য শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র সহ অনেক কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। সরকারি সহায়তায় বর্তমানে অনেকগুলো ক্লাব কাজ করছে, যেখানে উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে এবং তারা অনেক সচেতনতামূলক কাজ করে চলেছে। আলোচনায় তিনি বাল্যবিবাহের কথাও উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।