পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে প্রতিটি ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। খাদ্য উৎপাদনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে, কাজেই এদেশে আর কোনো দিন কেউ না খেয়ে থাকবে না। বিশ্বকে ক্ষুধামুক্ত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল শুক্রবার বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এই কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাটা যেন নিশ্চিত থাকে এবং প্রতিটি মানুষের ঘরে যেন খাবার পৌঁছায় সেজন্য হতদরিদ্রের মাঝে আমরা বিনে পয়সায় খাবার দিয়ে যাচ্ছি এবং এটা আমরা সব সময় অব্যাহত রাখব। একটি মানুষও যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়। একটি মানুষও আর গৃহহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটি মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা পায় সেজন্য তাদের দোরগোড়ায় আমরা চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিচ্ছি, কেউ পুষ্টিহীনতাতেও ভুগবে না, সেজন্য মায়েদেরকেও আমরা মাতৃত্বকালীন আর্থিক সাহায্য দিচ্ছি, সদ্য প্রসূত মা বা যারা বেস্ট ফিডিং করান তাদেরকেও আমরা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি, বিশাল সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের যে কর্মসূচি রয়েছে তার মাধ্যমেও আমরা আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন এই বিশ্বকে আমরা ক্ষুধামুক্ত করি। আর বাংলাদেশ সম্পর্কে আমাদের একটাই চিন্তা জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমরা তা অর্জন করতে পারব। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সাহসী এবং তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো ক্ষমতা রাখে।
তিনি বলেন, আমরা এই করোনার সাথে সাথে ঝড়, বন্যা সবই মোকাবিলা করে যাচ্ছি। কাজেই এভাবে আমাদের বাঁচতে হবে প্রকৃতির সাথে। কিন্তু আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাটা যাতে নিশ্চিত থাকে, প্রতিটি মানুষের ঘরে যেন খাবার পৌঁছায় হতদরিদ্র যারা আমরা তাদের মাঝে বিনা পয়সায় খাবার দিয়ে যাচ্ছি এবং এটা অব্যাহত রাখব সব সময়। একটি মানুষও না খেয়ে কষ্ট পাবে না, একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবে, তাদের দোরগোড়ায় আমরা চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিচ্ছি এবং কোনো মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে না। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মানুষকে সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেন খাদ্যের সাথে সাথে পুষ্টির নিশ্চয়তা হয়, মানুষ যেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা ভূ-খন্ডের দিক থেকে বাংলাদেশ আসলে খুবই ছোট, মাত্র ১ লাখ ৪৭ হাজার বর্গকিলোমিটার আমাদের ভূমি। কিন্তু আজ আমাদের মানুষের সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ১৭ কোটির কাছাকাছি। এই মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়াটা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তখন ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল বাংলাদেশ। এরপর খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে ২০০১ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার পাঁচ বছর পূর্ণ করে তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্ধৃত্ত ছিল। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে জাতির পিতার নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরার পাশপাশি কৃষকদের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলেন। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা কাজের লক্ষ্য কৃষকদের সুবিধা দেয়া। সেদিকে লক্ষ্য রেখে যখনই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে তখনই আমরা সব থেকে গুরুত্ব দিয়েছি খাদ্য উৎপাদনে। আমরা নিশ্চিত করেছি আমাদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। খাদ্য নিশ্চয়তা রাখতে হবে। কারণ এই করোনাভাইরাসের কারণে যখন সারাবিশ্ব স্থবির তখন একটা দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে যেন তার প্রভাব না পড়ে, বাংলাদেশের মানুষ যেন এ ব্যাপারে কোনো কষ্টভোগ না করে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছি। মহামারির মধ্যে সরকার যে প্রণোদনা দিচ্ছে, তা জিডিপির চার শতাংশ। কৃষকদের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে সরকার সহায়তা করছে জানিয়ে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে সরকার বিশেষভাবে উৎসাহিত করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই ক্ষেত্রে আমরা তিন হাজার ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছি এবং খুব অল্প মূল্যে যেন তারা কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করতে পারে, বাকি অর্থ সরকারের পক্ষ থেকেই দেয়া হচ্ছে। কৃষি সহায়তার জন্য সরকার নয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সেটা আমরা কৃষি সহায়তা হিসেবে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করি, যাতে কৃষক তাদের উৎপাদনে উৎসাহ না হারায়, তারা যেন উৎপাদন করতে পারে। সেই সাথে সাথে আমরা মানুষকে উৎসাহিত করছি যে, এক ইঞ্চি জমিও কেউ ফেলে রাখবেন না। গাছ লাগান, তরিতরকারি যা পারেন কিছু লাগিয়ে নিজের উৎপাদন বাড়ান।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক কু ডংইয়ু ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন। এই সময় গণভবন প্রাণে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল প্রান্তে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।