পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসিড সন্ত্রাসের মত ধর্ষণ নামের পাশবিকতা নিয়ন্ত্রণেই সরকার আইন সংশোধন করে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদেন্ডের বিধান সংযুক্ত করেছে। ধর্ষণ একটা পাশবিকতা, মানুষ পশু হয়ে যায়। যার ফলে, আমাদের মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেইজন্য আমরা এই আইনটি সংশোধন করে ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবনের সঙ্গে মৃত্যুদেন্ডের বিধান রেখে মন্ত্রিসভায় সেই আইন পাশ করেছি। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, এসিড নিক্ষেপকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কারণ, সেখানে আমরা আইন সংশোধন করেছিলাম। যেহেতু, সংসদ অধিবেশন নেই, তাই আমরা এক্ষেত্রে অধ্যাদেশ জারি করে দিচ্ছি। যে কোন একটা সমস্যা দেখা দিলে সেটাকে মোকাবেলা করা এবং দূর করাই আমাদের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ আজকে সমগ্র বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার পদাংক অনুসরণ করে আমরা মনে করি যেকোন অবস্থাতেই যেকোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে আমরা পারবো এবং বাঙালি পারে। জাতির পিতা আমাদের যে পথ দেখিয়ে গেছেন সেই পথেই বাংলাদেশের মানুষকে আমরা দুর্যোগ থেকে মুক্ত করবো।
কোভিড-১৯কে আরেকটি দুর্যোগ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তাদেরকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে অনেক সময় মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়। তিনি বলেন, এরআগে আপনারা দেখেছেন বিএনপি-জামায়াতের সেই অগ্নি সন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেটাও কিন্তু আমরা মোকাবেলা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জিজিটাল পদ্ধতিতে বিনামূল্যে ১৭ হাজার ৫টি দুর্যোগ সহনীয় গৃহ প্রদান এবং ১৮ হাজার ৫০৫ জন নারী কর্মী সম্বলিত ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’ এর নতুন একটি মহিলা ইউনিটও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে তার পক্ষে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৪২ জন পুরুষ এবং ৪২ জন নারীর মাঝে পদক ও বিতরণ করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। দুর্যোগ সহনীয় ঘরপ্রাপ্ত উপকারভোগীদের পক্ষে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার বেদেনি নুরুন্নাহার এবং গাইবান্দার মো. রিয়াজুল হক এবং মহিলা সিপিপি কাশফিয়া তালুকদারও নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের দেশে বন্যা হবে, খরা হবে, ঘূর্ণিঝড় হবে, জলোচ্ছ্বাস হবে, অগ্নিকান্ড, সেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমাদের বাঁচতে হবে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন করা এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় স্থাপনা নির্মাণের সময় জলাধার সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রাস্তাঘাট যা কিছু তৈরি করি না কেন সকলকে আমি এটাই অনুরোধ করবো, আমাদের জলাধার, নদীনালা, খালবিল-এগুলো যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপক‚লে ব্যাপকহারে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, দুর্যোগ সহনীয় ঘরবাড়ি তৈরি করার মতো কার্যক্রম তাঁর সরকার বাস্তবায়ন করছে। ড্রেজিং করে, খাল খননের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
তিনি বিরোধী দলে থাকার সময়ও বিভিন্ন সময় দেশে আসা ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের সময় তার দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের উল্লেখ করেন এবং ’৯১ পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ে বিএনপি’র সরকারের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি সম্পর্কে অসচেতনতা এবং ত্রাণ নিয়ে সে সময়কার মানুষের দুর্ভোগ তুলে ধরে তাদের কঠোর সমালোচনা করেন।
কোভিড কালীন খাদ্য উৎপাদনে অধিক গুরুত্বারোপ করাতেই দেশে কোন খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময়ই ভেবেছি কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়। কারণ, ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সবচেয়ে জরুরি।
উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে টেকসই করা ও সম্পদের ঝুঁকি কমানোর জন্য দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসের বিষয়টি সকল উন্নয়ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক অঙ্গীকার ‘২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার’ দৃঢ় প্রত্যয়ও পুনর্ব্যক্ত করেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।