পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশিদের ইতালি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে। ভিসার মেয়াদ বাড়ানো নিয়েও কোনও ঘোষণা দেয়নি দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে হতাশাগ্রস্ত দেশে এসে আটকে পরা ইতালি প্রবাসীরা। উপায়ান্ত না দেখে তিন দফা দাবি নিয়ে তারা মাঠে নামতে যাচ্ছেন। আজ রবিবার ঢাকায় ইতালির দূতাবাসের সামনে মানববন্ধনের মধ্যদিয়ে আন্দোলন শুরু হবে তাদের।
ইতালি প্রবাসীরা জানিয়েছেন, আজ সকালে প্রথমে ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের সামনে অবস্থান নেবেন তারা। সেখানে মানববন্ধন শেষ করে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে আরেকটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। মানববন্ধন থেকে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করা হবে বাংলাদেশ ও ইতালি সরকারের কাছে। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি করা, বাংলাদেশ থেকে ইতালির ফ্লাইট চালু করা, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতালি প্রবাসীদের সহায়তা করা।
আটকে পড়া ইতালি প্রবাসীদের একজন হৃদয় আহমেদ। ১০ বছর ধরে তিনি ইতালিতে আছেন। করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে দেশে এসে আটকা পড়েছেন ৯ মাস ধরে। হৃদয় আহমেদ বলেন, আমি ইতালিতে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতাম। দুই মাসের জন্য ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিলাম। অথচ আজকে ৯ মাস পার হয়ে গেছে। সেখানে আমার বাসা ভাড়া অন্যান্য খরচ ঠিকই দিতে হবে, অথচ আমার কোনও আয় নেই এখন। এখন যদি দ্রæত ফিরে না যেতে পারি, তবে কাজও হারাতে হবে। আমাদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট আশ্বাস এখনও পাইনি। ইতালি প্রবাসীরা জানিয়েছেন, কোনও ব্যক্তি ইতালির নাগরিকত্ব পেলে পরিবারের জন্য তিনি ফ্যামিলি ভিসা পাবেন। অনেকের ফ্যামিলি ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এখন ভিসার মেয়াদ না বাড়ালে তাদের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। অথচ সেখানে (ইতালিতে) তাদের পরিবারের সবকিছু পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করার তথ্য প্রকাশ করে আইইডিসিআর। সংস্থাটি জানায়, আক্রান্তদের মধ্যে দুই জন ইতালি ফেরত। তাদের একজন নারী, যিনি ইতালি ফেরত একজনের পরিবারের সদস্য। দেশে ফিরে কোয়ারেন্টিন না মানার প্রবণতা ছিল প্রবাসীদের, এর মধ্যে ইতালি প্রবাসীরাও ছিলেন। অন্যদিকে যারা ইতালিতে ফিরে গেছেন, তাদের অনেকেই সেদেশের স্বাস্থ্যবিধি ও কোয়ারেন্টিন মানেননি বলেও দেশটির সংবাদপত্রে খবরে প্রকাশ হয়।
করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে মার্চে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রাখে। তবে সে সময়ে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় বেশকিছু চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফেরেন ইতালি প্রবাসীরা। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকেও চার্টার্ড ফ্লাইটে ইতালিতে ফেরেন অনেকেই। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যবিধি ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নীতিমালা অনুসরণ করে ১৬ জুন থেকে সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয়। বাংলাদেশ থেকে কাতার এয়ারওয়েজ কাতার হয়ে বিভিন্ন দেশে যাত্রীদের নিয়ে যায়। এরমধ্যে অন্যতম গন্তব্য ছিল ইতালি। গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া একটি ফ্লাইটের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ইতালি। এ ঘোষণার পরও ৮ জুন বাংলাদেশ থেকে কাতার হয়ে ইতালিতে যাওয়া দুটি ফ্লাইটের ১৬৮ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে দিয়েছে দেশটি।
ইতালি প্রবাসীদের অভিযোগ, বাংলাদেশে ইতালি দূতাবাসে যোগাযোগ করেও কোনও তথ্য পাচ্ছেন না তারা। ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা, কবে বাড়াবে এ বিষয়ে ইতালি দূতাবাস সিদ্ধান্ত দেয়নি। ইতালিতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকার দূতাবাসে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু দূতাবাসে যোগাযোগ করলে একেক সময় একেকজন ফোন রিসিভ করেন এবং একেকজন একেক ধরনের উত্তর দেন। ইতালির ভিসা সেন্টার ভিএফএস গেøাবালও কোনও তথ্য দিতে পারছে না। ১৫ দিন আগে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে মো. রুহুল আমিন তালুকদারের। ইতালিতে ব্যবসা করতেন। ১১ মাস ধরে দেশে আছেন তিনি। রুহুল আমিন বলেন, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন আমাদের করণীয় কী বুঝতে পারছি না। করোনার এ সময়ে দেশে আটকে আছি, কেউ তো খোঁজও নিতে আসেনি। এখনও আমাদের কাজে ফিরে যেতে কোনও তৎপরতা দেখছি না। এখানে একজন ব্যক্তি শুধু ব্যক্তি নয়, একটি পরিবার। তাকে কেন্দ্র করে অনেক মানুষের জীবন চলে। আমরা যদি ফিরে যেতে না পারি, তবে পুরো পরিবার বিপদগ্রস্ত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।