পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাকালে সঠিক পদক্ষেপের কারণে সরকার অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। নগদ সহায়তা ও প্রণোদনাসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা খুব সময়মতো পদক্ষেপ নিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আমরা শিল্প ও অন্যান্য খাতের পাশাপাশি কৃষিখাতে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। আমরা ক্ষুদ্র, মাঝারি, বড় এবং পোশাক শিল্পে আলাদা করে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। এছাড়া, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সকল খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল (একনেক)-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন। নগরীর শের-ই-বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রী ও সচিবগণ অংশগ্রহণ করেন এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন থেকে এতে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপার্সন কোভিড-১৯ উপলক্ষে সরকারের প্রণোদনা প্রদান ‘অত্যন্ত সময়োপযোগী’ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কত টাকা আছে, কি আছে না আছে, সেটা চিন্তা করিনি। বরং একটাই চিন্তা করেছিলাম-এই দুঃসময়ে আমাদের অর্থনীতির চাকাটাকে যদি গতিশীল রাখতে হয় তাহলে অবশ্যই মানুষের হাতে আমাদের টাকা পৌঁছে দিতে হবে। সরকার প্রধান বলেন, যদি টাকা না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষদের জীবনটা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়ে। কাজেই তাদের সাহায্যার্থে নগদ অর্থ এবং বিভিন্ন সেক্টরে আমরা সরাসরি যে টাকা পাঠিয়েছি সেটা কিন্তু কাজে লেগেছে। গ্রামে মানুষের কিছু একটা করে খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেটা তারা করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, সর্বাগ্রে আমি কৃষির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বলেছি কৃষিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং খাদ্য উৎপাদনটা বাড়াতে হবে। মানুষের যেন খাবারের কষ্ট না হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা যে প্রণোদনাটা দিয়েছি সেই প্রণোদনাটা যখনই সকলে নিতে শুরু করেছে তখনই কিন্তু আস্তে আস্তে নিজ নিজ ব্যবসা-বাণিজ্যে তারা ফিরে আসতে পেরেছে। কারণ, এমন কোন খাত নাই যেখানে আমরা সাহায্য করি নাই। শুধু বড়লোক বা বিত্তশালী নয়, সব ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাই প্রণোদনাটা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা বা নগদ সাহায্য প্রদানের ধরণ সম্পর্কে বলেন, নতুন একটা পদ্ধতিতে আপনারা কাজটা করেছেন। কিন্তু রেজাল্ট যেটা দেখলাম সেটা আসলেই গ্রহণযোগ্য। তিনি এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, মাঠ পর্যায়ের কর্মী এবং বিবিএসকে ধন্যবাদ জানান। তিনি দেশের এক শ্রেণীর তথাকথিত সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলছেন, আসলে এই রেজাল্টটা প্রচার করলে, না জেনে যারা নানা কথা বলে যাচ্ছেন- এটা হলো না, সেটা হলোনা, তারা একটু তথ্য পাবেন। যদিও বলাটাই তাদের একটা অভ্যাস, তারা বলবেই।
শেখ হাসিনা বলেন, কোন একটা কাজের পর সেটার কি (ফলাফল) হলো, মানুষের কাছে এর কতটুকু (সুফল) পৌঁছালো, সেই ফলাফলটা জানা খুব দরকার। তিনি বলেন, এর ফলে পরবর্তীতে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার এবং কোন কোন জায়গায় আরো গুরুত্ব দিতে হবে বা কোথায় আরো সহযোগিতা পৌঁছাতে হবে সেই কাজটা সঠিকভাবে করার একটা সুযোগ হয়। এটাই সবথেকে বড় কথা।
এদিন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে হাটবাজারের মতো পরিস্থিতি না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ববিদ্যালয়কে বাজার পরিণত না করে বরং শিক্ষার্থীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে শিক্ষার মান বাড়ানোর করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই স্বকীয়তা নিয়ে থাকে। সেখানে ব্যাপক গবেষণা হতে হবে। সেসব গবেষণা বেশি বেশি প্রকাশের ব্যবস্থাও নিতে হবে।
একনেক সভায় ময়মনসিংহের ত্রিশালে ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে। তাই এটির মানসম্মত শিক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশি বেশি গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। এজন্য অর্থ কোনো সমস্যা নয়। তিনি বলেন, প্রয়োজনের আমি নিজেই টাকার ব্যবস্থা করবো। তবে এখন যেটা দেখা যাচ্ছে, গবেষণায় টাকা বরাদ্দ থাকে। কিন্তু খরচ হয় না। তাছাড়া সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপকহারে না বাড়ানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বানাবো। কিন্তু অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় শহর হয়ে যায়। হাজার হাজার শিক্ষার্থী এক জায়গায় পড়াশুনা করে। এতে পড়াশুনার মান রক্ষা সম্ভব হয় না। শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, সেতু কালভার্ট সংক্রান্ত যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে শীতের মধ্যেই। যাতে বর্ষাকাল পর্যন্ত না গড়ায়। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের জন্য নেয়া কয়েকটি প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন। ফলে তাদের কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার বিষয়টি সহজ হয়েছে। রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে আসার পর স্থানীয় জনগণের অনেক অসুবিধা হয়েছে। তাই এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় অবকাঠামোর নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। যেগুলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণেরও উপকারে আসবে।
চালের নমুনা পর্যবেক্ষণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবনে সারাদেশের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক খাদ্য গুদাম (সিএসডি ও এলএসডি) থেকে সংগৃহীত বোরো এবং আমন মৌসুমে বাংলাদেশে উৎপাদিত সেদ্ধ ও আতপ চালের নমুনা পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ সময় তিনি সরকারি গুদামে সংরক্ষিত চালের গুণগত মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর ভাদ্র মাসে গুদামগুলোতে সংগৃহীত নিচের দিকে রক্ষিত চাল ওপরে এবং ওপরের চাল নিচে রাখার নির্দেশনা দেন; যাতে করে অপেক্ষাকৃত আগে কেনা চাল প্রথমে বিতরণ করা যায়। তিনি ২০১৯ সালে সংগ্রহ করা চাল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণের জন্য নির্দেশ দেন।
এছাড়া, নওগাঁর শান্তাহারে স্থাপিত ওয়্যারহাউসের মতো দেশের অন্যান্য প্রান্তেও খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য এ ধরনের আধুনিক গুদাম নির্মাণের নির্দেশ দেন। এতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অধিক পরিমাণে খাদ্যশস্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। তিনি দেশের সব গুদামে সংগৃহীত চালের তথ্য একটি ডাটাবেজের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার নির্দেশনাও দেন। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।