পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ (প্রথম সংশোধন) এক হাজার ৬৫৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা খরচে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে সরকারি ব্যয় হবে ৭৪০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আর ৯১৯ কোটি ২০ লাখ টাকার জোগান হবে বিদেশী অনুদানে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আর একনেক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক সভায় অংশ নেন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আজকের একনেকে তিনটি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম জেলা উপক‚লীয় এলাকার পোল্ডার নং-৬২ (পতেঙ্গা), পোল্ডার নং-৬৩/১ বি (আনোয়ারা এবং পটিয়া) পুনর্বাসন’ প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প’ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘হাতেকলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে বিটাকের কার্যক্রম স¤প্রসারণপূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্যবিমোচন (ফেজ-২)’।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশোধনীতে প্রকল্পটির খরচ বাড়ানো হয়েছে। তবে এর সময়কাল আগের মতোই রয়েছে। সংশোধনীতে প্রকল্পে ৪৯১ কোটি ৩৪ লাখ থেকে খরচ বেড়ে ৮৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। ২০১৮ সালের জানয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম জেলা উপক‚লীয় এলাকার পোল্ডার নং-৬২ (পতেঙ্গা), পোল্ডার নং-৬৩/১ বি (আনোয়ারা এবং পটিয়া) পুনর্বাসন’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে। এতে খরচও বাড়ছে, সময়ও বাড়ছে। ২৮০ কোটি ৩০ লাখ থেকে খরচ বেড়ে প্রথম সংশোধনীতে হয় ৩২০ কোটি ২৯ লাখ এবং গতকাল সংশোধনের পর আরও বেড়ে দাঁড়াল ৫৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের মে মাসে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২০ সালের জুন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত।
স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর’ প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। এই প্রকল্পটিরও ব্যয় ও সময়ও বেড়েছে। এক হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ থেকে ব্যয় বেড়ে এক হাজার ৯৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২১ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন হবে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ, কালভার্ট, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টার, সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ, এফএসসিডি’র বিদ্যমান ফেসিলিটি উন্নয়ন, অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রপাতি, পরিচালন ও মিনি পাইপে পানি সরবরাহ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কমিউনিটি ল্যাট্রিন, রক্ষণাবেক্ষণসহ বায়োগ্যাস ল্যাট্রিন, ওয়াটার অপশন স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণসহ পয়ঃনিস্কাশন ও কঠিন ময়লা নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন। এছাড়া বিদ্যমান টয়লেট সংস্কারসহ বাসা-বাড়িতে বায়োফিল টয়লেট স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় জনসাধারণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। এছাড়া অগ্নি দুঘর্টনায় ক্ষয়ক্ষতি কমবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন এস্টেটে নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত শিবিরে আশ্রয় নেয়। এতে সংশ্লিষ্ট উপজেলার জনসংখ্যা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়। বিদ্যমান অবকাঠামো যেমন, রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট, ড্রেন, সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর চরম চাপ সৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অগ্নিজনিত দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তারা অতিমাত্রায় ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অনুদানে মোট ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেকে মূল প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের কার্যক্রম এলজিইডি, এফএসসিডি এবং ডিপিএইচ এই তিনটি সংস্থার আওতাভুক্ত। একই প্রকল্পের আওতায় ডিপিএইচ’র কার্যক্রম নিজেরা বাস্তবায়ন করছে এবং এফএসসিডি ও এলজিইডির অঙ্গগুলো এলজিইডি বাস্তবায়ন করছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘হাতেকলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে বিটাকের কার্যক্রম স¤প্রসারণপূর্বক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্যবিমোচন (ফেজ-২)’ নামে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে একনেক সভায়। এতে খরচ করা হবে ১২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
একনেক সভায় আরও অংশ নেন- কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন; ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।