পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাকালে সরকার ও আ.লীগ ছাড়া কেউ মানুষের পাশে ছিল না মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ দেশে অনেক লোক, অনেক রকমের প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা সাধারণত দরিদ্র লোকদের সহায়তা করে থাকেন। তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে তাদের কার্যক্রম দেখা যায়নি। করোনাকালীন দেশের এই খেটে খাওয়া মানুষের পাশে সরকার এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ ছিল না। আওয়ামী লীগের মতো কেউ ত্যাগ স্বীকার করেননি।
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তৃণমূলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের দুর্দিন-দুঃসময়ের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাদের ঠাঁই দিতে হবে। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ‘মাই ম্যান’ নেতাদের জায়গা দেওয়া যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল হওয়ায় করোনায় মানুষের পাশে ছিল, মানুষের কল্যাণে কাজ করে। আমরা সর্বদা তাদের পাশে থাকব। করোনা মহামারিকালে আওয়ামী লীগের ৫২২ নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এত বড় ত্যাগ স্বীকার করেনি। তারা কেবল মুখে কথাই (লিফ সার্ভিস) বলেছে, তাদের মাঠে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দেখা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন অনেক ভালো ভালো মিডিয়া আছে। যে যার মতো আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে বলেই যাচ্ছে। কিন্তু তাদের মাঠে মানুষের পাশে দেখা যায়নি। তারা কেউ আবার বিচার করে; আওয়ামী লীগ কতটুকু করল, কতটুকু করল না। কিন্তু তারা আয়নাতে নিজেদের চেহারা দেখেন না। এ দেশে গরিব মানুষের সেবা করার অনেক লোক, অনেক রকমের প্রতিষ্ঠান, অনেক কার্যক্রম আমরা দেখি। কিন্তু করোনাকালীন তো তাদের কোনো কার্যক্রম আমরা দেখিনি। তখন সবাই ঘরে, তখন মানুষের পাশে আর কেউ নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্যই জাতির পিতা স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সেই স্বাধীনতার সুফল যেন প্রত্যেক মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছায়। আমরা যেন দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারি, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, আমি দেশবাসীকে এইটুকু বলতে চাই যে, জনগণের সংগঠন হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে আছে এবং সেটা এবারও এই দুর্যোগ করোনা মহামারির সময় প্রমাণ হয়েছে। এ অবস্থায় যেখানে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি কমেছে। অনেকে তো মাইনাসে চলে গেছে। তারপরও আমরা কিন্তু ৫ দশমিক ৬ এর কাছাকাছি অর্জন করতে পেরেছি। হয়তো আমরা আরও বেশি করতে পারব। একদিকে দুর্যোগ মোকাবিলা, অপরদিকে দেশের অর্থনীতি সচল করা, মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তাদের উন্নত জীবন দেওয়া এ লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করায় সরকার দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমি জরুরি ভিত্তিতে তাদের যে নির্দেশনাই দিয়েছি তারা তা করেছে। তারা সঠিকভাবে কাজ করেছে বলেই আমরা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকার জরুরিভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক ও তিন হাজার নার্সের পাশাপাশি কিছু টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছে। আমি অর্থ ও জনপ্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে একসাথে বসতে বলেছি। এসব চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগে আমি সিদ্ধান্ত দিয়েছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে কাগজে সাইন করেছি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশের আরও চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান দরকার হওয়ায় সরকার এ বিষয়ে কিছু নীতি শিথিল করে। মহামারির শুরুতে যত দ্রæত সম্ভব সরকার জেলা পর্যায় পর্যন্ত হাসপাতালগুলোকে অক্সিজেন সরবরাহ ও আইসিইউ ব্যবস্থাসহ প্রস্তুত করে তুলে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের জন্যই জনগণ সহযোগিতা পেয়েছে। এই সময় যদি অন্য কোনো দল (ক্ষমতায়) থাকত তবে করোনায় অসংখ্য মানুষ মারা যেত। মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়ত।
বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তাদের দুর্ভোগ লাঘবে চেষ্টা করেছে। এমনকি তাদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ বিমান পাঠিয়েছে। তারা এ মাটির সন্তান, আমরা তাদের মানুষ হিসেবে দেখি, আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা বিদেশে তাদের প্রণোদনা দিয়েছি।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, সাংগঠনিক কাজ করতে গিয়ে কে কোথায় কি সমস্যা ফেস করছে, সেটা আমাকে অবহিত করবে। আমি চাই তৃণমূলে দলের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাকর্মীসহ সমাজে যারা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষজন আছে তাদেরও দলে টানতে হবে। তোমরা কাজ করতে গিয়ে কমিটি করতে গিয়ে কোথাও কি সমস্যা হচ্ছে তা আমাকে জানাবে। দলে সেক্রেটারি আছে তাকে জানাবে।
সংগঠন ও সরকারের যৌথ সহযোগিতায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি দেখেছি যখনই যাকে বলেছি প্রত্যেকে এতটুকু পিছপা হয়নি। মানে সব রকমের সহযোগিতা নিয়ে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, এই করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী একটা অর্থনৈতিক মন্দা আসবে। আর মন্দার সঙ্গে কিন্তু দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, খাদ্যভাব দেখা দেয়। বাংলাদেশে যেন কোনোমতে খাদ্যভাব দেখা না দেয়। সেই জন্য কৃষক মাঠে থাকে, ফসল যেন উৎপাদন হয় উৎপাদিত ফসলটা আমাদের কাছে থাকলে পরে অন্তত খাবারের অভাবটা যেন না হয়। আল্লাহর রহমতে সেটা কিন্তু হয়নি।
কৃষকের ধান কাটা দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের এগিয়ে এসে সহযোগিতা করার ব্যাপারেও সবার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ওবায়দুল কাদের ছাড়াও দেশের ৮ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ৭ জন বক্তৃতা করেন। দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সভাপতিমন্ডলীর সদস্যদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় সদস্য গোলাম কিবরিয়া চিনু, মেরিনা জাহান কবিতা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।