Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাপাউবো চার যুগ পর নিজস্ব ভবন পাচ্ছে

আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০২ এএম

দেশের পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন সাধন। বন্যা, খরা, জলাবদ্ধতা, আন্তর্জাতিক নদীর প্রবাহ, লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও প্রাকৃতিক পরিবেশের যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি, মৎস্য, বন ইত্যাদি ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পানি সম্পদের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা করা। সে কারণে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব অফিস ছিল না স্বাধীনতার ৪৮ বছর ধরে। এবার স্বাধীনতার ৪৯ বছরে নিজস্ব পানি ভবন পাচ্ছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

২৬১ কোটি টাকা ব্যায়ে পানি ভবন নির্মাণের কাজ গত বছর শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানি ভবন আজ সকাল ১০টার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন বলে গতকাল বুধবার জানিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
তিনি বলেন, ২৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১২ তলা বিশিষ্ট পানি ভবন ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী পানি ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। আগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বিদ্যুতের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সে কারণে বিদ্যুৎ ভবনে এ অফিসের কার্যক্রম চলে আসছিল। উপমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর বেসরকারি ভাড়া বাড়িতে প্রদত্ত ভাড়ার ৫.৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মীদের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ দেয়া। পানি ভবন প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ুর বিরূপ পরিবর্তনের উদ্ভূত নানা দুর্যোগ মোকাবিলাসহ শতবর্ষী ডেল্টাপ্ল্যান ২০২১ বাস্তবায়নে যুগোপযোগি ও আধুনিক কর্মপরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বোধ করা। পরে প্রধানমন্ত্রীর সদয় সম্মতি, অনুমোদন ও পরামর্শে পানি ভবন নির্মিত করা হয়। ভাটি অঞ্চলে অবস্থান বলে পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা ছাড়া কোনো উন্নয়নই স্থায়ী করা যায় না। আজ থেকে কার্যক্রম শুরু হবে এ নতুন ভবনে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৪ এবং ১৯৫৫ সালের উপর্যুপরি ভয়াবহ বন্যার পর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৫৭ সালে জাতিসংঘের অধীনে গঠিত ক্রুগ মিশনের সুপারিশক্রমে এতদঞ্চলের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ইপিওয়াপদা) গঠন করা হয়। বর্তমান বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ইপিওয়াপদা এর পানি উইং হিসেবে দেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রধান সংস্থা হিসেবে কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্টর আদেশ নং-৫৯ মোতাবেক ইপিওয়াপদা এর পানি অংশ একই ম্যান্ডেন্ট নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সম্প‚র্ণ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। সেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব অফিস ছিল না স্বাধীনতার ৪৮ বছর ধরে। এবার স্বাধীনতার ৪৯ বছরে তা নিজস্ব ভবন পাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি ভবন নির্মাণের ম‚ল লক্ষ্য হলো পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষতা উন্নয়নসহ আন্তঃবিভাগের সমন্বয় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রতি বছর বেসরকারি ভাড়া বাড়িতে প্রদত্ত ভাড়ার ৫.৩০ কোটি টাকা সাশ্রয়। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মীদের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ পাবেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
পানি ভবনে যা রয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব প্রকৌশলীদের নকশায় প্রায় ৪,২০,০০০ বর্গফুটবিশিষ্ট এ ভবনের নির্মাণে লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর। কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পানি ভবনে সোলার প্যানেল, সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, রেইন ওয়াটার রিজার্ভারের মতো পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থাসহ ৫৩৬ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন অডিটরিয়াম, ৪৫০০ বর্গফুটের হেলিপ্যাড, ৩৭৬টি গাড়িপার্কিংসহ অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে। উপরন্তু, এই কমপ্লেক্সে প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র স্মৃতিবিজড়িত পুকুরটি (২১,৪৮৪ বর্গফুট) সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া ২০,৬২৫ বর্গফুটের একটি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। উন্নত ব্যবস্থাপনা, কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিবীক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫টি সংস্থার দপ্তর একই স্থানে থাকছে। প্রতিটি সংস্থার কারিগরি, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সহজতর সমন্বয় সাধন করা।
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ডিপিপি অনুমোদন করা হয়। প্রথম ব্যয় ধরা হয় ২১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। গত ২০১৮ সালে তা বাড়িয়ে করা হয় ২৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০১৩ সালে জুলাই এবং শেষ হওয়র কথা ২০১৬ সালের ৩০ জুন। কিন্তু কাজ দেরিতে শুরু করার কারণে বাস্তবায়নের কাজ ২০১৯ সালের জুন মাসে শেষ হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মুর‌্যাল না হওয়ার কারণে উদ্বোধন করা হয়। এখন বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল হওয়ার পরে আজ পানি ভবনের কাজ উদ্বোধন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ