পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর উত্তরখানের রাজবাড়ি এলাকায় কলেজশিক্ষার্থী মো. সোহাগ হত্যার মূল দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মাহবুবুল ইসলাম রাসেল ওরফে কাটার রাসেল (২০) ও হৃদয় (২২)। তারা দুইজনই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব। এদিকে ছেলে হত্যার বিচারের জন্য দাবি জানিয়েছেন নিহত সোহাগের বাবা-মা।
র্যাব জানায়, গত সোমবার দিনগত রাতে দক্ষিণখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাসেল ওরফে কাটার রাসেল ও মো. হৃদয়কে গ্রেফতার করে র্যাব। তারা দু’জনই উত্তরা এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। পরে গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে নিহত সোহাগের পিতা-মাতা ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, গত ২৭ আগস্ট রাতে উত্তরখানের রাজাবাড়ী খ্রিষ্টানপাড়া রোডের ডাক্তারবাড়ী মোড়ে কিশোর গ্যাং ‘দি বস’র হৃদয়, রাসেলসহ বেশ কয়েকজন সদস্য আড্ডা দিচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে একই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটি রিকশার চাকা থেকে কাদা ছিটকে হৃদয়ের গায়ে লাগলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রিকশাচালককে মারধর করতে থাকে। একজন অসহায় রিকশাচালককে সমবয়সী একজন ছেলেকে মারতে দেখে সোহাগ এগিয়ে আসে। সোহাগের প্রতিবাদে হৃদয় ও রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে ফোন করে তাদের গ্যাংয়ের অন্য সদস্য নাদিম, সানি, মেহেদী, সাদ, সাব্বিরসহ বেশ কয়েকজনকে ডেকে আনে এবং সবাই মিলে সোহাগের ওপর চড়াও হয়। এ সময় নাদিমের কাছে থাকা ধারাল ছোরা নিয়ে কাটার রাসেল সোহাগের পেটে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেয়ো হলে মারা যায় সোহাগ।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে র্যাব হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে। গত সোমবার রাতে দক্ষিণখান থানাধীন মোল্লারটেক থেকে রাসেল ওরফে কাটার রাসেল ও মো. হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও আট রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। কাটার রাসেল জানায়, সে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফায়দাবাদ আলিয়া মাদরাসায় দাখিল পর্যন্ত পড়াশোনা করে। বর্তমানে সে উত্তরা আইডিয়াল কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। সে হৃদয়ের নেতৃত্বাধীন কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘দি বস’র সদস্য। এই গ্রুপ ‘হৃদয় গ্যাং’ নামেও পরিচিত। হৃদয়ের গ্যাংয়ের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তাদের সঙ্গে ওঠাবসা করার সুবাদে কোনো ঝামেলা হলেই সে পায়ের রগ কাটার ভয় দেখাত। সে প্রায় সময় ছুরি, ক্ষুর সঙ্গে রাখত। পায়ের রগ কাটার হুমকি দেয় বলেই সমবয়সী সবাই তাকে ‘কাটার রাসেল’ নামে ডাকে।
ঘটনার পর রাসেল গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। কোনো স্থানেই সে এক-দুদিনের বেশি অবস্থান করত না। হৃদয় জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়াশোনা বাদ দিয়ে উত্তরায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করে। তার সাথে রাসেল, নাদিম, সানি, মেহেদী, সাদ, সাব্বিরসহ এলাকার উঠতি বয়সের কিশোরদের সুসম্পর্ক থাকায় সবাইকে নিয়ে কিশোর গ্যাং ‘দি বস’ প্রতিষ্ঠা করে এবং তার নেতৃত্ব দেয়। ঘটনার পর থেকে সবাইকে আত্মগোপনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে সেও আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তারা দেশত্যাগ করারও পরিকল্পনা করে। তার আগেই গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে নিহত সোহাগের মা পারভীন বেগম বলেন, আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। যারা আমার বুক খালি করছে তাদের ফাঁসি চাই। সন্তানহারানোর যে কী জ্বালা, কষ্ট তা যেন আর কোনো মায়ের জীবনে না ঘটে।
বাবা মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আমার ছেলে উত্তরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। পাশাপাশি টঙ্গী বাজারে ভগ্নিপতির দোকান দেখাশোনা করত। আমার পাঁচ সন্তানের মধ্যে ছোট সোহাগ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী। ওকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এভাবে ছেলেটাকে খুন হতে হবে ভাবিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।