পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভিসা ও আকামার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে-পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিন দিন যাবত কলা-রুটি খেয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের অফিসের বাইরে ফ্লোরে অবস্থান করছে শতশত যাত্রী। সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজার দেশের বাইরে থাকায় যাত্রীদের কেনা টিকিট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কালোবাজারে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। শুধু সউদীতে যাওয়ার একটি টিকিট ৬০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। চরম দুর্ভোগের শিকার এসব যাত্রীর একটাই প্রশ্ন সউদী থেকে নগদ টাকা দিয়ে আসা যাওয়ার টিকিট নিয়ে ছুটিতে দেশে এলাম, আর সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের অফিসের অসাধু সেলস সুপারভাইজার খুররমের নেতৃত্বে কয়েকটি এজেন্সি এসব কনফার্ম টিকিট কিসের বিনিময়ে কালোবাজারে বিক্রি করার সাহস পেল? সাউদিয়ার এসব অসাধু কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন তারা। আজ মঙ্গলবার সোনারগাঁও হোটেলের সামনে বিক্ষুদ্ধ একাধিক যাত্রী এসব কথা বলেন।
সউদী আরবের ফিরতি টিকিটের জন্য যাত্রীদের মধ্যে চলছে হাহাকার। সাউদিয়া অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সহ¯্রাধিক যাত্রীর নির্ধারিত ওয়ান ওয়ের টিকিট চড়া দামে কালোবাজারে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সোনারগাও হোটেলের সামনে হাজার হাজার সউদী গমনেচ্ছু যাত্রী সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের টিকিট কালোবাজারে বিক্রির প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ করে। এসময়ে বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্থানীয় পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বিক্ষুদ্ধ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের আত্মীয় স্বজনরাও সউদীসহ বিদেশে চাকরি করেন। আমরা আপনাদের ব্যথা বুঝি। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা রাস্তা অবরোধ না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করুন। এতে বেশি কাজ হবে। পরে কয়েক হাজার বিক্ষুদ্ধ যাত্রী রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে মিছিলসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পরে পাঁচজন বিক্ষুদ্ধ যাত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সাথে দেখা করে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের টিকিট কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ তুলে ধরেন। টিকিট নিয়ে নানা অনিয়ম ও ভোগান্তির কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনোযোগসহকারে শোনেন। এসময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাউদিয়ার টিকিট কালোবাজারে বিক্রি বিষয়টি অস্বীকার করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অপেক্ষমান যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যাদের ভিসা ও আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তাদের ভিসা ও আকামার মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জরুরি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ছুটিতে দেশে এসে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি সকলকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার সজাগ দৃষ্টি রাখছে।
সোনারগাঁও হোটেলের সাউদিয়ার অফিসের সামনে তিন দিনের ক্ষুধার্ত ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের কাবিল হোসেন (টোকেন নং ২৬৪) ও হবিগঞ্জের আবুল হাসান খান জানান, আজ ও আগামীকাল এবং আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর সাউদিয়ার তিনটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে সউদী যাওয়ার কথা। তিনশ’ জনের মধ্যে মাত্র ১৬ জন ফিরতি টিকিট পেয়েছে। বাকি টিকিট চিহ্নিত ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকায় কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। ময়মনসিংহের সিদ্দিক, ইসমাইল, বাবুল হোসেন বলেন, সাউদিয়ার অফিসের কর্মকর্তারা যাত্রীদের কোনো মানুষই মনে করে না। তিন দিন ধরে রাস্তায় রোদ বৃষ্টিতে ভিজে রাত কাটাচ্ছি ওরা ডাকেও না অফিসও খোলে না। এসব বিষয় দেখার কী কেউ নেই। তারা বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর হাজার হাজার সউদী প্রবাসী কর্মীর ভিসা ও আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। নগদ টাকা দিয়ে টিকিট কিনেও সউদীতে যেতে না পেরে এখন আমারা চাকরি হারানোর ঝুঁকির সম্মুখীন। নারায়ণগঞ্জের আক্তার হোসেন, সোনারগাঁও এর দেলোয়ার হোসেন ও সিলেটের হারিস মিয়াও গত রোববার থেকে টোকেন নিয়ে সাউদিয়ার অফিসের সামনের ফ্লোরে অবস্থান করছেন। সেখানে প্রায় তিনশ’ যাত্রী রাত দিন অবস্থান নিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন আমরা সাউদিয়ার টিকিট না নিয়ে বাড়ী ফিরবো না। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ ফ্লোরে অবস্থানকারী যাত্রীদের সাথে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বাড়ী ফিরে যাওয়ার জন্য এবং আগামীকাল বুধবার সকালে সাউদিয়ার অফিসে প্রবেশ করার সুযোগ দেয়া হবে। যাতে তারা ফিরতি টিকিট কনফার্ম করতে পারেন। এদিকে, মতিঝিলস্থ বিমান অফিসের সামনেও সউদী গমনেচ্ছু যাত্রীরা টিকিটের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিক্ষুদ্ধ এসব যাত্রীরা বিমানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং টিকিট ইস্যুতে দুর্নীতি ও অহেতুক ভোগান্তি অবিলম্বে নিরসনের জোর দাবি জানান। রাতে আটাবের সাবেক সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ (মাহবুব) ইনকিলাবকে বলেন, সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের কতিপয় সিন্ডিকেট চক্র (টপটেন ট্রাভেলস এজেন্সি) অনৈতিকভাবে সউদী গমনেচ্ছুদের ফিরতি টিকিট কয়েকগুণ বেশি দামে কালোবাজারে বিক্রি করে মানবতা বিরোধী কাজ করছে। সরকারের উচিৎ গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে দ্রুত এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। ইতিপূব্যেও এসব সিন্ডিকেট বিদেশগামী যাত্রী এবং হজ ও ওমরাযাত্রীদের টিকিট চড়া দামে কালোবাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে আটাবের সাবেক নেতা মাহবুব বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিধিতে নির্দেশনা রয়েছে ট্রাভেলস এজেন্সিগুলো কোনো ক্রমেই সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি করতে পারবে না। তার পরেও সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের হাজার হাজার টিকিট বিক্রির সুবাধে এসব সিন্ডিকেট চক্র চড়া দামে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির সাহস পাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে সউদী গমনেচ্ছু যাত্রীদের ফিরতি টিকিট কনফার্ম করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আটাবের সাবেক নেতা বলেন, ৬ / ৭ মাস আগে ছুটিতে আসার সময়ে নগদ টাকা দিয়ে সউদী থেকেই আসা যাওয়ার টিকিট ক্রয় করে কর্মীরা দেশে এসেছেন। এসব বিক্রিত ফিরতি টিকিট কী ভাবে সিন্ডিকেট এজেন্সি চড়া দামে অন্য যাত্রীর কাছে ইস্যু করছে তা’ খতিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।