Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ বিপর্যস্ত

প্রবল স্রোত-নাব্যতা সঙ্কট

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নাব্যতা সঙ্কট ও উজানের ঢলের প্রবল স্রোতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের সংক্ষিপ্ত নৌপথ মিয়ারচর চ্যানেলটি গত প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ। ফলে প্রতিদিন শতশত নৌযানকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরে বিকল্প চ্যানেলে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সব ধরনের নৌযানের চলাচলের সময় বেড়েছে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির সাথে বাড়ছে জ্বালানি ব্যয়ও। ফলে প্রতিদিন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অর্ধ লক্ষাধিক যাত্রীকে।

ইতোমধ্যে নৌ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক সভায় বরিশাল-চাঁদপুর সেকশনে উলানিয়া চ্যানেলটি উন্নয়ন করে সব ধরনের নৌযান চলাচল উপযোগী করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের জ্বালানি বহনকারী নৌপথ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওই ড্রেজিং সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কতদিনে সম্ভব হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিষয়টি নিয়ে হাইড্রোগ্রাফী সার্ভেসহ আরো বেশ কিছু জরিপ এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পরে কাজ শুরু করতে কমপক্ষে দেড় মাস সময় লেগে যেতে পারে। এর পরে খনন কাজ শুরু ও শেষ করতে লাগবে আরো অন্তত দুই থেকে আড়াই মাস। ফলে আগামী ৩-৪ মাসে দেশের দুটি সমুদ্র বন্দরসহ দ্বিতীয় বৃহত্তম বরিশাল নদী বন্দরের সাথে রাজধানীসহ উত্তরবঙ্গের নৌ যোগাযোগ নির্বিঘ্ন হচ্ছে না।

বিআইডবিøউটিএ সম্প্রতি নৌ সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে ‘ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল নৌপথের মিয়ারচর ড্রেজিং খাড়িতে ৮ ফুট পানির গভীরতা পাওয়া গেলেও চলমান বন্যায় ও প্রবল স্রোতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পলি জমা হয়ে পানির গভীরতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে’ বলে জানায়। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে পূর্ণ ভাটার সময় মিয়ারচরের কিছু কিছু এলাকায় ৬ ফুট পানির গভীরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানায়। অনধিক ৮ ফুট গভীরতার নৌযানকে হিজলা-শৌলা-চরপ্রকাশ-ল²ীরচর চ্যানেল ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করে। পাশাপাশি ৮ ফুটের অধিক গভীরতার নৌযানগুলোকে কালিগঞ্জ-উলানিয়া-ইলিশা-চাঁদপুর হয়ে চলাচলের নির্দেশনা জারি করে।

বরিশাল-মিয়ারচর-চাঁদপুর নৌপথের মিয়ারচর এলাকাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে নৌযানের কাপ্তানদের কাছে। চ্যানেলটি ব্যবহার করে দক্ষিণাঞ্চল থেকে চাঁদপুর, ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের নৌ যোগাযোগ সহজ। এজন্য বিআইডবিøউটিএ গত কয়েক বছরে একাধিকবার চ্যানেলটি ড্রেজিং করে। কিন্তু উজানের অত্যাধিক বালু মিশ্রিত স্রোতের কারণে বার বারই চ্যানেলটি বরাট হয়ে নাব্যতা সঙ্কটে পড়ে।

এরপরেও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডবিøউটিএ বিষয়টি নিয়ে অনেক সমীক্ষা করে। পুনরায় চ্যানেলটি চালুর লক্ষ্যে ড্রেজিংয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সেখান থেকে সরে এসে উলানিয়া চ্যানেলটির উন্নয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বিআইডবিøউটিএ’র চেয়ারম্যান সরেজমিনে মিয়ারচর চ্যানেলটি পরিদর্শনও করেছেন।
বরিশাল চেম্বারের সভাপতি ও সুন্দরবন নেভিগেশনের সত্ত্বাধিকারী সাঈদুর রহমান রিন্টু অবিলম্বে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের নৌ যোগাযোগ নিরাপদ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে সহজ ও বিকল্প নৌপথ চালুর দাবি জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ