Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হঠাৎই শিথিল অভিযান

ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের এক বছর

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের ইয়াংমেনস স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান দিয়ে শুরু হয় র‌্যাবের ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান। এরপর একের পর এক চলে অভিযান। তবে, হঠাৎ বন্ধ কেন এই অভিযান, এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে; স¤প্রতি অনলাইনে ক্যাসিনো কান্ড বন্ধেও কাজ করছে র‌্যাব। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য ক্লাবগুলোতে র‌্যাবের ধারাবাহিক অভিযানে বেরিয়ে আসতে থাকে ক্যাসিনোর অন্ধকার জগৎ। ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ একে একে গ্রেফতার হন ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন বড় নেতা। বর্তমান সরকারের অন্যতম আলোচিত এ শুদ্ধি অভিযান ছিল মূলত টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ, মাদক এবং ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে।
আইন-শৃংখলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে প্রায় ২৭০ কোটি টাকার মতো এফডিআর ও নগদ টাকা উদ্ধার হয়। ক্যাসিনো অভিযানের ঘটনায় ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ১৪টি মামলা তদন্ত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় র‌্যাব। এর মধ্যে ১৪টি মামলার মধ্যে ১৩টি মামলার চার্জশিট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বাকি একটি মামলা আদালতের নির্দেশক্রমে চার্জশিট স্থগিত আছে। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফকিরাপুলের ইয়াং ম্যান্স ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। ওইদিন রাতেই একে একে ওয়ান্ডার্স ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা চিত্তবিনোদন ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ ক্লাবে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ক্যাসিনোর পায়। একই দিন রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গুলশানের বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করেন র‌্যাব সদস্যরা। ২০ সেপ্টেম্বর আরেক যুবলীগ নেতা ‘টেন্ডারবাজ’ খ্যাত জি কে শামীমকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তার অফিস থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর উদ্ধার করা হয়।
গতকাল র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালনাক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, শুক্রবার ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের এক বছর। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হয়। সারা দেশব্যাপী ক্যাসিনো বিরোধী যে অপারেশন বর্তমান সময়ে স্থগিত আছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে র‌্যাবের ক্যাসিনো বিরোধী অপারেশন ফৌজদারি দন্ডবিধি চলমান রয়েছে। এরমধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সা¤প্রতিক সময়ে অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনো অপারেশন র‌্যাব সা¤প্রতিক সময়েও পরিচালনা করে আসছে। অর্থাৎ, ক্যাসিনো বিরোধী যে অভিযান তা বর্তমানেও অব্যাহত আছে।
ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেফতার সম্রাটট ও জি কে শামীমদের মতো গডফাদার বা তাদের প্রশ্রয়দাতাদেরও চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে জানানো হলেও কার্যত পরবর্তিতে দেখা যায় নি, এ বিষয়ে আশিক বিল্লাহ বলেন, মূলহোতা বা পৃষ্ঠপোষক এরকম কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমেও এসেছে যা র‌্যাবের নজরে এসেছে। এখানে মূলত র‌্যাব পরিষ্কার করতে চায়, ফৌজদারি অপরাধভিত্তিক যে বিষয়গুলো থাকে সেগুলোতে র‌্যাব চার্জশিট দাখিল করেছে। চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। বিচার প্রক্রিয়ায় যদি এরকম কোনোকিছু উপস্থাপিত হয় তাহলে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমান সময়ে ছোটখাটো যে অভিযোগগুলো পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনভিত্তিক, কিন্তু তারা সেরকম কোনো বড় গ্রুপ নয়, ছোটখাটো বিদেশি ডোমেইন থেকে মূলত এগুলা পরিচালিত হয়। এরকম বেশ কিছু বিষয় র‌্যাবের নজরে এসেছে এবং সে সকল বিষয় নিয়েও র‌্যাব কাজ করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ