Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর সঠিক পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৩০ পিএম

তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশ সরকারের কাছে এখনও সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই বলে জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলছেন, বিশেষ একটি জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান অবস্থা বিবেচনা করে তাদের কল্যাণে কোনো জাতীয় পরিকল্পনা বা সময়সীমাভিত্তিক পদক্ষেপ নেয়ার আগে তাদের সঠিক সংখ্যা জানা অপরিহার্য। অন্যথায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অসম্ভব। অথচ তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সার্বিক উন্নয়নের নানা আশ্বাসের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত সঠিক কোনো পরিসংখ্যানই করতে পারেনি সরকার। এমনকি আদমশুমারিতেও অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি তাদেরকে।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠির অধিকার বিষয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার এম আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক মো. শাহাদাত হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় এইডস ও এসটিডি প্রোগ্রামের পরিচালক ড. এনামুল হক। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এবং বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পরিচালক মো. মেসবাহ-উল বিরাজ। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক হিসেবে ছিলেন এফপিএবি’র প্রোগ্রাম অফিসার দেওয়ান তানভীর আহমদ। সভায় এফপিএবি, ব্রাক, পদ্মকুঁড়ি, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, টিডিএইচ নেদারল্যান্ড, সুস্থ জীবন, লাইটহাউস, সাদাকালো, বাংলাদেশ সেক্স ওয়ার্কার নেটওয়ার্ক, অবয়ব ও আইসিডিডিআরবি’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে হিজড়া জনগোষ্ঠী স্বীকৃতি পেলেও তা সাংবিধানিকভাবে পূর্ণতা পায়নি। আবার যতটুকু স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তার মধ্যেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ব্যাংক ঋণ দেওয়ার বিধান থাকলেও তারা ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না। তারা বলেন, প্রত্যেকেরই যার যার অবস্থান থেকে দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাছাড়া প্রতিবন্ধী কল্যাণ তহবিলের মত হিজড়াদেরও একটি কল্যাণ তহবিল থাকা প্রয়োজন। এ সময় তারা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার এবং শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিতের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

বক্তারা বলেন, জনশুমারিতে বাংলাদেশের নারী ও পুরুষের সংখ্যা ও অনুপাত প্রকাশ করা হয়, কিন্তু নারী ও পুরুষের বাইরে যারা আছেন, তাদের কোনো পরিসংখ্যান কখনোই আমরা পাই না। শুমারি থেকে তারা বরাবরই বাদ পড়ে যায়। যেখানে তাদের সংখ্যাই অজানা সেখানে কি উন্নয়ন হবে। আশা করছি ভবিষ্যতে যে আদমশুমারি করা হবে সেখানে অবশ্যই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তারা বলেন, গত কয়েক বছরে এ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে তেমন কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। তাদের ট্রাফিক পুলিশে চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাউকে চাকরি দেয়া হয়নি। তারা আরও বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে সামাজিক ভাবে গ্রহণ না করার কারণেই চিকিৎসা, শিক্ষা, কর্মসংস্থানসহ নানা স্থানে বিভিন্ন ভাবে বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়।

বক্তারা বলেন, দক্ষিন এশিয়ার বিভিন্ন দেশে হিজড়া জনগোষ্ঠীদের অধিকার তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ থেকে বেশি আইনগত অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশে এই নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী।



 

Show all comments
  • মোস্তাফা মাহমুদ সা‌রোয়ার ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:২০ পিএম says : 0
    হিজড়া‌দের ভাতা, প্রশিক্ষণ, অনুদান, উপবৃ‌ত্তি সব ‌দি‌চ্ছে সমাজ‌সেবা অ‌ধিদফতর। অথচ এখা‌নে সমাজ‌সেবার কেউ নেই। এস‌ব লু‌কোচু‌রির মানে কী?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ