পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্যক্তিগত পছন্দের ঊর্ধ্বে থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সততা, দক্ষতা, পেশাদারিত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে ন্যায়নীতির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীতে পদোন্নতি দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর নিজের আস্থা রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটুকু অনুরোধ করবো ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে উপযুক্ত কর্মকর্তারা যাতে প্রমোশনটা পায়। গতকাল সোমবার সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব) এ দেয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাসদর, নৌবাহিনী সদর দপ্তর ও বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব)- এ অংশ (ভার্চ্যুয়াল) নেন।
সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনী পর্ষদে আপনারা সব জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা একত্রিত হয়েছেন। আপনাদের প্রজ্ঞা, আপনাদের বিচার-বুদ্ধি, আপনাদের ন্যায়পরায়ণতার ওপর আমরা যথেষ্ট আস্থা আছে। আমি এটুকু অনুরোধ করবো এসব ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে উপযুক্ত কর্মকর্তারা যাতে প্রমোশনটা পায়। আপনারা ন্যায়নীতির ভিত্তিতে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই প্রমোশন দেবেন। যাতে সবার ভেতরে একটা আস্থা আসে। আমি জানি অনেকে উপযুক্ত, তবে সবাইকে দেয়া যায় না। কারণ পদটা সীমিত। তারপরও আপনারা অবশ্যই দেখবেন যারা সত্যিকার উপযুক্ত তারা যেন প্রমোশন পায়।
সশস্ত্র বাহিনীর পদোন্নতিতে ব্যবহৃত আধুনিক পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে যেমন সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের পদোন্নতির জন্য আধুনিক পদ্ধতি অর্থাৎ ট্র্রেস ট্যাবুলেটেড রেকর্ড অ্যান্ড কমপারেটিভ ইভালুয়েশনের মাধ্যমে কারা প্রমোশন পাওয়ার উপযুক্ত, সেই দক্ষতা কার কতটুকু আছে তার তুলনামূলক মূল্যায়ন করে আপনারা সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে এটুকু দেখতে হবে শুধু খাতা-কলমে বেশি নম্বর পাওয়া না, যারা ফিল্ডে ভালো কাজ করতে পারে, কমান্ড করতে পারে বা নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা আছে কিনা বা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ক্ষমতা আছে কিনা সেগুলো আপনাদের বিচারে আনতে হবে।
সশস্ত্র বাহিনীতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী, যারা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাসী নিশ্চয়ই তাদের আদর্শ নিয়েই চলতে হবে। দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাসী হবে তারাই যেন দায়িত্ব পায়। যাতে সঠিক পথে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সশস্ত্র বাহিনী যারা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক তাদের সম্মানটা বজায় রেখেই আমাদের সেই চেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেটা আপনারা দেখবেন।
দক্ষতার সঙ্গে শৃঙ্খলা-সততা-বিশ্বস্ততার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু একটা সুশৃঙ্খল বাহিনী, এই সুশৃঙ্খল বাহিনীতে যারা পদোন্নতি পাবে তারা সব সময় একটা শৃঙ্খলা রক্ষা করে চলতে পারে। কারণ শৃঙ্খলাটাই হচ্ছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটা মেরুদন্ড হিসেবে কাজ করে। কাজেই শৃঙ্খলা সম্পর্কে যারা যথেষ্ট সচেতন, অনুগত, তারা যেমন উপরে যারা থাকবে তাদের প্রতি অনুগত থাকবে আবার অধনস্তনদের ব্যাপারে দায়িত্ববান হবে। এই বিষয়টাও দেখতে হবে, তাদের প্রতিও সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বসম্পন্ন হতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য যদি না থাকে তাহলে কখনো ভালো লিডার হতে পারে না, ভালো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে না। কাজেই সেটা অত্যন্ত জরুরি। সেদিকে আপনারা বিশেষ দৃষ্টি দেবেন যারা সৎ, ভালো গুণাবলীসম্পন্ন তাদের। আপনারা বোর্ডে বসে আপনাদের উপযুক্ত যারা তাদের নিয়ে আসবেন। যাতে আগামী দিনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আরও সুদক্ষ হয়। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় এবং আমরা যেন সব সময় গর্ববোধ করতে পারি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে সেভাবে গড়ে তুলবেন সেটাই আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সব দিকে নজর রেখে আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে ঢেলে সাজিয়েছি এবং সেই ধরনের ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছি যাতে সব ধরনের ট্রেনিংটা পায়। আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একটা সশস্ত্র বাহিনী আমরা গড়ে তুলতে চাই। আর সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা এই দেশটাকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা আমাদের নীতিমালাও নিয়েছি।
অন্যদিকে গতকাল আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদ ১১ সেপ্টেম্বর এবং বিমান বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদ ১০ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত স্ব স্ব সদরদফতর থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
এ নির্বাচনী পর্ষদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর কর্ণেল হতে ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল এবং লে. কর্ণেল হতে কর্ণেল পদবিতে পদোন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অন্যদিকে নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন হতে কমডোর, কমান্ডার হতে ক্যাপ্টেন ও লে. কমান্ডার হতে কমান্ডার পদবিতে পদোন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়া এ নির্বাচনী পর্ষদের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন হতে এয়ার কমডোর, উইং কমান্ডার হতে গ্রুপ ক্যাপ্টেন ও স্কোয়াড্রন লীডার হতে উইং কমান্ডার পদবিতে পদোন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অনূষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল(অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।