পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও’র ওপর বর্বরোচিত হামলার পেছনে নিছক ‘চুরির উদ্দেশ্য’ বা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে একটি মহল যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল এক বিবৃতিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও নৃশংস এই হামলায় সরাসরি জড়িত ও আড়ালে থাকা প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার ওপর এ জাতীয় হামলার ঘটনায় অন্য সবার মধ্যে সঙ্গত কারণেই যে নিরাপত্তাহীনতা ও আস্থাহীনতার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতে কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ইউএনও’র ওপর হামলার মতো একটি লোমহর্ষক ও উদ্বেগজনক ঘটনায় যেভাবে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির প্রাথমিক স্বীকারোক্তির ওপর নির্ভর করে একে ‘নিছক চুরি’ এবং একটি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে প্রচার করা হচ্ছে, তা খুবই হতাশাব্যঞ্জক ও সন্দেহজনক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এভাবে বেশ কিছুদিন ধরে তদন্ত শেষ করার আগেই সংবাদ সম্মেলন করে তাদের সিদ্ধান্ত দিয়ে দিচ্ছেন। এটা কর্মদক্ষতার প্রমাণ নয় বরং আইনি প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। এমন আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ আছে, এই প্রক্রিয়ায় পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়ে তারা আড়ালেই থেকে যায়। তদন্ত সংস্থার দায়িত্ব তদন্ত করা, মামলার দায় বা রায় ঘোষণা করা নয়। আমরা এই অপসংস্কৃতির অবসান চাই। একজন সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলার পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী, দুর্নীতি সহায়ক ও স্বার্থান্বেষীদের কোনো ভ‚মিকা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার সঠিক তদন্ত ও বিচারের দৃষ্টান্ত না থাকায় সংশ্লিষ্ট মহল ঘোড়াঘাটের ইউএনও’র ওপর হামলা করার সাহস পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন সময়ে অনেক স্পর্শকাতর ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন যেমন আলোর মুখ দেখেনি; তেমনি জড়িত প্রকৃত অপরাধীরাও নানামুখী পরিচয়ের আড়ালে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়া। রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি, বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ এই হামলার ঘটনা। একে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার কোনো অবকাশ নেই। বরং যারা এভাবে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার পায়তারা করছে তাদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে আরও সাবধান থেকে যথাযথ কারণ অনুসন্ধানপূর্বক ঘটনার মূলোৎপাটনে দৃশ্যমান ও নিরপেক্ষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তা, বিশেষ করে নারী কর্মকর্তা-কর্মচারী যেনো যেকোনো প্রকারের ভয়ভীতি ও রাজনৈতিক চাপের ঊর্ধ্বে উঠে সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন; তার অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ ও ন্যায়-নিষ্ঠ আচরণ দেখতে চাই।
টিআইবির বিবৃতিতে আরো বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ যেমন আছে; একইভাবে সৎ, নির্ভীক ও ন্যায়-নিষ্ঠ থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের দৃষ্টান্তও অনেক রয়েছে। টিআইবির নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিগত কয়েক বছর যাবত নারী ইউএনওরা অনেক ঝুঁকি মোকাবিলা করে স্থানীয় প্রশাসনে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন। তাদেরই একজনের ওপর এই জঘন্য হামলা রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সঙ্কটের বাস্তব ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভবপর না হলে দীর্ঘমেয়াদে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সৎ, নির্ভীক ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের ওপর। এছাড়া প্রতিটি অপ্রীতিকর ঘটনাতেই কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতার বিব্রতকর যে বিবরণ নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে, তাতে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য কঠোর আত্মবিশ্লেষণ করা এখন অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।