পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড। তিনি বলেন, এতে করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র চিহ্নিত করা সহজ হবে। একই সঙ্গে উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে এবং বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে।
রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে আগামী নভেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগের উদ্দেশে একটি বৈঠক অনুষ্ঠানে একমত পোষণ করা হয়।
সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ড বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেয়। বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সুইজারল্যান্ড প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে এবং বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। ফার্মাসিউটিক্যালস এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
উভয় দেশের মধ্যে একটি বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, এতে করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র চিহ্নিত করা সহজ হবে। করোনা মোকাবিলা এবং করোনাকালে রফতানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখার প্রশংসা করে তিনি বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ রয়েছে, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, এগুলোর প্রায় অর্ধেকের কাজ সমাপ্তির পথে। এগুলোতে জাপান, ভারত, চীন, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের জন্য লাভজনক বিনিয়োগস্থল হতে পারে। সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী দল বাংলাদেশ সফর করলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতিতে চীন থেকে আমেরিকা, জাপানসহ অনেক দেশ তাদের শিল্পকলকারখানা রিলোকেশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। দেশগুলো বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান মনে করছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা সহজ ও দ্রুত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। অতিসহজেই বাণিজ্য করার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিনিয়োগের জন্য এখন বাংলাদেশ উপযুক্ত স্থান।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮৩ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। সরকার রফতানি খাতের পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে কৃষিজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি, পাটজাত পণ্য সেক্টরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষজনশক্তি রয়েছে। এছাড়া সেবাখাতেও বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষজনশক্তি রয়েছে। সুইজারল্যান্ড চাইলে তা ব্যবহার করতে পারে।
তিনি বলেন, জাপানের বিখ্যাত মিসশুবিশি এবং ভারতের টাটা কোম্পানি বাংলাদেশে গাড়ি তৈরির কারখানা স্থাপনের চিন্তা করছে। ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ কোম্পানি আইন সময়োপযোগী করাসহ ব্যবসা সহজীকরণের অন্যান্য সূচকেও প্রয়োজনীয় সংস্কারসাধন করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সুইজারল্যান্ডে রফতানি করেছে ১০৬ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ২৭০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১০৬ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে এবং জুলাই-মার্চ সময়ে আমদানি করেছে ২৪৫ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।