পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর আক্রমণের ঘটনা নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব জানিয়েছে যুবলীগ নেতা আসাদুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা নিছক চুরি করার জন্য ইউএনওর ঘরে ঢুকেছিল। কিন্তু গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) মিলনায়তনে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, হামলা চুরির ঘটনা নয়, পরিকল্পিত আক্রমণ। এই আক্রমণের নেপথ্যে আরও অনেক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন। প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের দেয়া দুই ধরণের বক্তব্যে সন্দেহের ঢালপালা চারদিকে ছড়াচ্ছে। ঘটনা নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। চুরির উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে এমন দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করলেও সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন উল্টো কথা। তাদের দাবি একটি প্রভাবশালী মহল তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরা অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, ইউএনও’র ওপর হামলাকারী যেই হোক তিনি রেহাই পাবেন না। তার বিচার করা হবে।
ইনকিলাবের দিনাজপুর অফিস জানায়, এ মামলার আসামি নবিরুল ইসলাম ও সান্টুকে গতকাল দিনাজপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসুর আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাদের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তবে এই মামলার মূল আসামি যুবলীগ নেতা আসাদুল হক অসুস্থ থাকায় তাকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়নি। এ মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ইমাম জাফর। এছাড়াও এ ঘটনায় গ্রেফতার যুবলীগ নেতা আসাদুলের ভাই আশরাফুল ইসলাম ওরফে শাওন (৪০) ও ইউএনও কার্যালয়ের মালি মো. সুলতানকে (৩২) গতকাল আটক করেছে পুলিশ। এদিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ওয়াহিদা খানমকে এই মুহূর্তে বিদেশ পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। গতকাল রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তার চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজখবর নেয়ার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ওয়াহিদা খানমের মাথায় লোহার আঘাতের কারণে অপারেশন-পরবর্তী ইনফেকশনের ঝুঁকি রয়েছে। সেই ঝুঁকি বিবেচনায় সতর্ক রয়েছে চিকিৎসকরা। তবে তার স্বাস্থ্যগত উন্নতি ঘটছে। তবে সতর্কতার সঙ্গে তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান নিউরো সার্জন ও গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে অবজারভেশনে রেখেছেন। আজ রাতে তার অপারেশনের ৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত হবে। আগামীকাল সকালে তার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে তাকে আইসিইউতে রেখে অবজারভেশনে থাকবেন নাকি বেডে স্থানান্তর করা হবে। এটা বলতে পারি যে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তিনি বলেন, তার মাথার বাঁ দিকটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডানপাশের কিছু অংশ প্যারালাইজড অবস্থায় আছে। তবে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিচিতদের তিনি চিনতে পারছেন।
এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা সরকারি আবাসিক ভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। তার মাথা রক্তাক্ত করে। এ সময় চিৎকারে তার বাবা পাশের রুম থেকে ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে অন্য কোয়ার্টারের বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকা নিয়ে আসা হয়। এদিকে তার বাবা ওমর আলী শেখকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাপসাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে তার শরীরের নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা গতকাল রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, ওমর আলী শেখের আগে থেকে ডায়াবেটিস ছিল। ঘটনার রাতে তিনি ঘাড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতে স্পাইনালকর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাধারণত এ ধরনের জটিলতায় চার হাত-পা অবশ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তার দুই হাত কিছুটা সচল থাকলেও নাভির নিচ থেকে নিচের অংশ অবশ হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, সাধারণত এ ধরনের সমস্যা সেরে উঠতে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আপাতত তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। একটি চিকিৎসক দলের মাধ্যমে তার চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তার স্বজনরা ঢাকায় নিয়ে যেতে চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।