Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সাথে কথা না বলে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকুন -যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম

প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত সংস্থার সঙ্গে কথা না বলে ‘কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, এ ধরনের প্রতিবেদনে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। গতকাল রোববার মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মনিরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে কথা না বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে, তদন্তকারী কর্মকর্তার স্বাধীন তদন্ত কাজে চাপ অনুভব করতে পারেন। ফলে তদন্ত বিঘিœত হতে পারে। কাজেই আমি অনুরোধ করব, তদন্তকারী কর্মকর্তা অথবা তদন্ত সংস্থার সঙ্গে আলোচনা না করে এই ধরনের কথিত অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, এটা আমরা আশা করব।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হাসনাত রেজা করিম ও তাহমিদ হাসিব খানের দু’টি ছবি নিয়ে একটি দৈনিক পত্রিকা কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। কিন্তু এখানে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য নেয়া হয়নি। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না, সেটি বলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, তদন্ত চলাকালে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ করা ঠিক নয়। তিনি আরো বলেন, গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন তামিম চৌধুরী কল্যাণপুরে অভিযানের সময় ঢাকাতেই অবস্থান করছিলেন। তাঁকে ধরতে অভিযান চলছে।
গুলশান হামলার পর ২ জুলাই ভোরে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির ছাদে হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিব খানের নতুন কয়েকটি ছবি সংবাদমাধ্যমে এসেছে, যেখানে আরেকজনকে দেখা যাচ্ছে, যাকে রোহান ইমতিয়াজ বলা হচ্ছে পত্রিকাগুলোতে। পরে কমান্ডো অভিযানে আরও পাঁচজনের সঙ্গে নিহত হন রোহান।
ওই ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত এবং কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তাহমিদের ভূমিকা নিয়ে সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে এসব প্রতিবেদনে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, হাসনাত করিম ও তাহমিদকে পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। হলি আর্টিজানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
হাসনাত ও অস্ত্র হাতে তাহমিদের যে ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মনিরুল বলেন, তারা রিমান্ডে আছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আপনাদের স্পষ্টভাবে এই বিষয়গুলো জানাব। কী পরিস্থিতিতে তাদের হাতে অস্ত্র উঠল এগুলো জানার জন্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা। তদন্ত সংস্থার কাছে যদি তাদের এ মামলায় জড়িত বলে মনে হয়, সেক্ষেত্রে তাদের এ মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, যে সমস্ত পুলিশ সদস্য সেখানে প্রথমেই হাজির হয়েছিল তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ইন্টারভিউ হচ্ছে, অসংখ্য মানুষের ইন্টারভিউ হচ্ছে। সুনির্দিষ্টভাবে বলাটা এই মুহূর্তে সম্ভব নয় যে ঠিক কত মানুষকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
ছবি নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, এ ধরনের ছবি যদি আর কারও কাছে থাকে, তাহলে সেগুলো তদন্ত সংস্থার কাছে সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ রইল। আমরা অনেক ছবি পেয়েছি যেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
অস্ত্রের জোগানদাতা প্রাথমিকভাবে শনাক্ত
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি নামের রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনার তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় অস্ত্রের জোগানদাতাসহ অনেককেই প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে অনির্ধারিত এক আলোচনায় তিনি এ কথা জানান।
মনিরুল বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া প্রকৌশলী হাসনাত রেজা করিম ও কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খানকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গুলশানে হামলার ঘটনায় অস্ত্রের জোগানদাতাসহ অনেককেই প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে তাদের সংখ্যা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ