Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই উদ্যোগে রেমিট্যান্সে অবিশ্বাস্য প্রবৃদ্ধি-সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৩২ পিএম | আপডেট : ৭:৩৩ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও চলতি বছরের জুলাইয় ও আগস্টে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধিকে অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছোট্ট একটু প্রণোদনা এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোতে ঝামেলা কমানো এই উদ্যোগের কারনেই এটি সম্ভব হয়েছে বলও জানান তিনি। এছাড়া জুলাই আগস্টে রফতানি বাণিজ্যে দেশে ঐতিহাসিক রেকর্ড সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ রিসোর্স অনেক বেশি। সেগুলোকে কখনো মূল অর্থনীতির সাথে যুক্ত করতে পারিনি। মূল অর্থনীতিতে তাদের কম পেয়েছি। এখন আস্তে আস্তে তাদের মুল স্রোতধারায় নিয়ে আসতেছি। এতে অর্থনীতিতে গতিশীলতা আরো অনেক বাড়বে। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) জুম অ্যাপসের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ। গত বছর ছিলো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে হায়েস্ট আর্নিং বছর। গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের তুলায় ৫০ ভাগ বৃদ্ধি এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। ছয় মাসে যেটা পেতাম দুই মাসেই সেটা এসে গেছে।

এত বেশি বাড়ছে কেনো এ বিষয়ে তিনি বলেন, যখন পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলাম তখন নিজ উদ্যোগে একটা স্টাডি করেছিলাম। স্টাডিতে দেখা গেছে ৫১ শতাংশ রিমিট্যান্স আসে বৈধ পথে আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ বা হুন্ডির পথে। আমি তখন থেকেই ভাবতে আরম্ব করলাম যে শতভাগ রেমিট্যান্স বৈধ পথে আনতে হবে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা চাই যে পরিমান রেমিট্যান্স আয় হয় তার পুরোটাই বৈধপথে দেশে আসুক। সে জন্য দুটি কাজ করি। একটি হচ্ছে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রনোদণা প্রদান। রেমিট্যান্স বাড়ার বিষয়ে এ প্রনোদণা কাজ করেছে। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আগে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোটা ছিলো অনেক জটিল। নানাবিধ প্রশ্ন করা হতো, এখন এগুলো সহজ করে দিয়েছি। গত এক বছর যাদের রেমিট্যান্স এসেছে কাউকে প্রশ্ন করা হয়নি। কারো রেমিট্যান্স মার যায়নি। সে জন্যই এত রেমিট্যান্স রেড়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা আয় করে আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নিজেরাও শক্তিশালী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। কারন তারা তাদের কাষ্টার্জিত অর্থ বৈধ পথে পাঠানো শুরু করেছে। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান। কোনো না কোনো দিন এর সুফল আপনারা পাবেন।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৬ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে), যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ কোটি ৯২ লাখ ডলার বা ৩৬ শতাংশ বেশি। আগের বছরের আগস্ট মাসে ১৪৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। একক মাস হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এখন যারা স্মল, একদিন তারা মিডিয়াম হবে। এরপর তারা লার্জ হবেন, এটাই নিয়ম। আমি বলবো তাদের এক্যাউন্ট আছে এবং তারা কি ব্যবসা করে এটা যদি তারা প্রমাণ করে আবেদন করলে আমরা তাদের যতোটা সহায়তার দরকার করবো। তাদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আলাদা উইং আছে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন এর বাইরে কেউ না। তিনি নিজেও এগুলো তদারকি করেন। ফলে এবার হইচই কম হয়েছে। সবাই সরাসরি সহায়তা পাচ্ছে।

এদিকে সভায় ১৭৭৫ কোটি ৮৪ লাখ ৬০ হাজার ১৮৪ টাকার ১০টি ক্রয় প্রস্তাব দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে মরক্কো ও কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির প্রস্তাব রয়েছে। ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভা শেষে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ