পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গায়ে হলুদের দিনে শহরজুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও সাথীদের নিয়ে বাইক র্যালি (মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা) করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছেন যশোরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ। ইসলামি রীতি ভেঙে ব্যতিক্রমীভাবে বিয়ের এমন আয়োজন করায় ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন ওই নারী। অনেকে বিয়ের ভিডিও দেখে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আবার ফেসবুকে অনেকে বিষয়টি ইতিবাচকভাবেও নিয়েছেন।
যদিও ফারহানার বিয়ে হয়েছে আরও তিন বছর আগে। দেড় মাস আগে তার কোলজুড়ে এসেছে এক ছেলে সন্তানও। গত ১৪ আগস্ট গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হওয়ায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। নতুন করে ভাইরাল হয় বিয়ের সেই ছবি। ফারহানা নিজেও গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি পরিস্কার না করায় বিভ্রান্তি বাড়ে।
১৩ আগস্টে সাজগোজ ও অনুষ্ঠানের বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ঢাকাতে দেখেছি, অনেক বিয়েতে বর নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যান। আমি মোটরসাইকেল চালাতে পারি। আমারও ইচ্ছে হয়েছে। আমি ইচ্ছেপূরণ করেছি। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একটু হইচই-আনন্দ করেছি।’
ফেসবুকে মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘যে দেশে ৩০ বছর ধরে এনজিও কর্মী মহিলারা বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালিয়ে সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছে, পুরুষ প্যাসেঞ্জাদের পিছনে তুলে মহিলা বাইকাররা রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে জীবনধারণ করছে, সেই দেশে কোন মহিলা তার বিয়ের অনুষ্ঠানে বাইক চালিয়ে রোড শো করায় এত আলোচনার হেতু কি আমার বুঝে আসেনা? ৩০ বছর ধরে যে দেশ মহিলা প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী দ্বারা শাসিত হচ্ছে। এখন স্পিকার মহিলা, অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেত্রীও মহিলা। মন্ত্রী, এমপি মহিলা। জেনারেল থেকে শুরু করে বিচারপতি, সচিব, রাষ্ট্রদূত, ডিসি, এসপি, টিএনও, ওসি, পাইলট, সাংবাদিকের মত চ্যালেঞ্জিং পেশায় কৃতিত্বের সাথে যে দেশের মহিলারা কাজ করছে। যে দেশের প্রধান রফতানি খাতের শীর্ষ নেত্রী একজন মহিলা। সেই দেশে কোন এক মহিলা বিয়ের অনুষ্ঠানে মোটরসাইকেল চালানোতে তাতে জাত গেল জাত গেল বলে শোরগোল তোলা কিংবা তাকে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী মুক্তির অগ্রদূত বানিয়ে দেয়া কতটা বিবেচনাপ্রসূত আমার বোধে আসেনা।’’
নিলুফা জাহান মিম লিখেছেন, ‘‘এই সমাজেকে ভিন্ন ভিন্ন ধারায় নষ্ট করার পরিকল্পনা চলছে। এরা হলো সেই পরিকল্পনাকারী অংশ। এদের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য, বাংলাদেশ একটি ইসলামিক সুন্দর সামাজিক সমাজকে ধ্বংস করা। তাই তাদেরকে ঘৃণা করো এবং তাদের বিরুদ্ধে সবাই আওয়াজ তোলো।’’
মোঃ আশরাফুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা অনেক সুন্দর। কিন্তু কনের জায়গায় বর হলে সুন্দর হতো। আমার কাছে কনের উপস্থাপন অতিরিক্ত মনে হচ্ছে। যা মুসলিম জাতি হিসেবে অগ্রহনযোগ্য। যে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা অতি সাধারণ, সে বিয়ের স্থায়িত্ব ও বরকত বেশি।আশা করি তাদের জীবন সুখময় হোক।’’
মেহেদী হান সোলাইমান লিখেছেন, ‘‘বাজে মেয়েদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলে তারা খুব খুশী হয়। কারণ এতে তাদের পরিচিতি বাড়ে পরবর্তীতে তাদের ডিমান্ড বাড়ে, নৈতিক-অনৈতিক পারিশ্রমিক বাড়ে। যেমন মিথিলা, সুজানাদের পারিশ্রমিক এখন তুঙ্গে।এখন তার নাম ঘরে ঘরে।মনে মনে খুশীতে আটখানা হয়ে আছে মেয়েটা।সে এখন নিজেকে মিস বাংলাদেশ ভাবছে!’’
বিল্লাল খাঁন লিখেছেন, ‘‘মুসলিম সমাজের একজন সচেতন নারী এ কাজ কখনো করতে পারে না, তিলে তিলে ধ্বংস হচ্ছে আমাদের দেশের সংস্কৃতি, মার্জিত সভ্যতা। আমাদের উচিত এসব বিপথগামী কাজগুলোকে এড়িয়ে চলা, নয়তো নারীরা ভুল পথে হাটবে..।’’
আর এস রিপন লিখেছেন, ‘‘শালীনতা সৌন্দর্য মেয়েদের অলংকার, যখন তারা সেটা ভুলে যায় বা ব্যতিক্রম কিছু করে তখন সমালোচিত হবেই। বিয়ে নারীদের লজ্জা ও বিরহে আবৃত করে দেয়। নিজের পরিবার ছেড়ে নতুন একটা পরিবারে যাওয়া সত্যিই একটা মেয়ের জন্য বেদনা ও শংকার।গ্রাম বাংলার চিরায়ত প্রথা ভেঙে একজন নারীর এই আস্ফালন কেউ সহজ ভাবে নিবেনা। শুধুমাত্র ভাইরাল হওয়ার জন ব্যতিক্রমী এসব কর্মকান্ডের ফল হিসেবে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আপনাকে সহ্য করতেই হবে, এটা সহজ ভাবে মেনে নেয়াই উত্তম।’’
মোঃ কফিল উদ্দিন লিখেছেন, ‘‘তার ব্যক্তি স্বাধীনতা এইটা নয় যে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা। বিয়ে না হয়ে অন্য অনুষ্ঠান হলে তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার বলা যেতে পারতো।কিন্তু মুসলিম বিয়ের রীতিতে এগুলো বেহাইপনায় ছাড়া কিছুই না।’’
মোঃ ফয়সাল উদ্দীন লিখেছেন, ‘‘আমরা বাঙালি। আমাদের সুন্দর এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটা সাংস্কৃতি আছে। আমাদের সুন্দর পারিবারিক বৈশিষ্ট্য আছে। এরপরও আমরা মুসলিম বাঙালি আমাদের ধর্মীয় শিষ্টাচার ও রীতি এবং নীতি আমাদের ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য আমরা বসবাস করছি। আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় রীতি এবং নীতি কে কখনোই এই ধরনের ন্যক্কারজনক শিক্ষা দেয় নাই। একশ্রেণীর নিম্ন মন মানসিকতার অভিভাবক আছে যাদের পরিবারেই এই ধরনের কাজগুলো তাদের সন্তানেরা করে থাকে। এবং যে পরিবার এই মেয়েটা কে পুত্রবধূ হিসেবে গ্রহণ করবে সেই পরিবার টাও কত নিম্নশ্রেণির। তা না হলে এগুলো হবার কথা ভাবাই যায় না।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।