Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের আইন নতুন করে নয় : মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত

আইভি ছিলেন নিরহঙ্কার রাজনীতিক : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের কথা আমি স্মরণ করছি। বিশেষ করে আইভি রহমানের কথা। প্রত্যেক আন্দোলনে-সংগ্রামে মাঠে থাকতেন উনি। একদম মানুষের সঙ্গে এবং মিটিংয়ে আমাদের কর্মীদের সঙ্গে বসতেন। কোনও অহমিকা ছিল না। কিন্তু এতো সুন্দর একটা মানুষের এ রকম বীভৎস মৃত্যু, যেটা সত্যি সহ্য করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এভাবেই স্মরণ করলেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানকে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে করা আইনের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তা সংশোধনী হিসেবে আনতে হবে, তবে নতুন হিসেবে আনা যাবে না। মন্ত্রিসভা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক (ভার্চুয়াল) হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা এই বেঠকে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকের শুরুতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমানসহ ২২ নেতাকর্মীকে তিনি স্মরণ করেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই আইভি রহমান রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমরা একসঙ্গে অনেক রাজনীতি করেছি। খুব আহত অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমএইচে এবং ২৪ তারিখে তাকে মৃত ডিক্লেয়ার করে। আজ তার মৃত্যুদিবস পালন করি। শেখ হাসিনা বলেন, নিহত ২২ জনের মধ্যে চারজন মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী। আর দুইজন অজ্ঞাতনামা ছিল। তাদের লাশও কেউ নিতে আসেনি। ধারণা করা হয়, এই অজ্ঞাতনামারা হয়তো আক্রমণকারী হতে পারে, কিছু জানি না! কিন্তু আমরা তখন আমাদের ২২ জন নেতাকর্মী হারিয়েছি। আরও প্রায় ছয়-সাতশ নেতাকর্মী আহত হয়। অনেকে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে পরে আবার মারা গেছেন। শরীরের ভেতরে অনেক স্পিøন্টার নিয়ে এখনও অনেকে বেঁচে আছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান গুরুতর আহত হন। চারদিন পর ২৪ আগস্ট সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি মারা যান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দ্য বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন অর্ডার, ১৯৭৩ সংশোধন নিয়ে আলোচনার সময় একটি মৌলিক পরিবর্তন এনেছে মন্ত্রিসভা। আজকে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাইকোর্ট থেকে অবজারবেশন দেয় তা হলো যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সাল এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পার্লামেন্ট না থাকার সময় যে অর্ডিন্যান্সগুলো হলো এর যেগুলো প্রয়োজন সেগুলো আইনে পরিবর্তন করা হবে, আর না হলে বাতিল হয়ে যাবে। এটা (হাউজ বিল্ডিং অর্ডার) যখন আনা হলো তখন দেখা গেল, এটা তো ওই কাভারেজের মধ্যে নয়। ওই এমবার্গোর মধ্যেও পড়ে না। এটা আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসছে। সেটা হলো, ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত যে আইনগুলো এখন থেকে পরিবর্তন হবে, সেগুলোও নতুন আইন হবে না। সেটা ওই আইনের সংশোধন হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দ্য বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (সংশোধন) অ্যাক্ট, ২০২০’ নিয়ে আসা হয়েছিল, নতুন সিদ্ধান্তের কারণে এখন আর এই নাম থাকবে না, হবে ‘দ্য বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন অর্ডার, ১৯৭৩।

খন্দকার আনোয়ার বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে সরকার ছিল এবং তখন রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনাটা কেমন ছিল- এই আইনগুলো যদি হারিয়ে যায় তাহলে আর পুরোপুরি বোঝা যাবে না। এই আইনগুলো যদি কার্যকর থাকে তাহলে যারা গবেষণা করবে কিংবা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে যারা কাজ করবে তারা কিন্তু এই আইনগুলো দেখলেই বুঝতে পারবে রাষ্ট্রের কাঠামোটা তখন কীভাবে ডেভেলপ করা হয়েছিল, কীভাবে রাষ্ট্র ও প্রশাসন পরিচালনা করা হয়েছে। এটা ক্যাবিনেটের একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এই আইন সংশোধন করতে গিয়ে এটা আলোচনার একটা বড় জিনিস। এছাড়া জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।



 

Show all comments
  • Kanti Sen ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:২৮ এএম says : 0
    চিরসত্য। এদেশ, দেশের মানুষকে চিরকাল গোলাম বানিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করেছিল তারা। বাংলাদেশ যেন কোন ভাবেই এগিয়ে যেতে না পারে সেই খেলাই খেলেছিল তারা।
    Total Reply(0) Reply
  • Nurul Alam Mollick ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৩০ এএম says : 1
    বাংলার শোষিত নিপীড়িত মানুষদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, যেখানে ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকলে মিলেমিশে বসবাস করবে, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে উঠে বাঙালি সংস্কৃতি লালন করে একটি সুখী সম্মৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সেই আদর্শের ভিত্তিতে অর্জিত হলো স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ধর্ম ভিত্তিক স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ও পাকিস্তানের দোসরা তা মেনে নিতে পারেননি। শুরু হয় ষড়যন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধা নামধারী দেশীয় মীর জাফরদের চক্রান্তে পনরই আগষ্ট বঙ্গবন্ধু স্ব পরিবারে শাহাদাৎ বরণ করলে ষড়যন্ত্রকারীরা ক্ষমতা দখল করেন। বঙ্গবন্ধু চলে গেলেন রেখে গেছেন আদর্শ। সেই আদর্শকে বুকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বঙ্গবন্ধুর কাংখিত বাংলাদেশ পূর্ণতার দ্বার প্রান্তে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Taher ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৩০ এএম says : 1
    রাইট বলেছেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ariful Islam Imran ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৩১ এএম says : 0
    আল্লাহ তাআলা উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Juton Kumar Bhowmik ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৩২ এএম says : 0
    বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নারী জাগরণের অগ্রদূত সাহসী নেত্রীর প্রতি। আপনার আদর্শ লালিত হোক সকল তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মীর বুকে।
    Total Reply(0) Reply
  • Zahangir Alam ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৩২ এএম says : 0
    বিনম্র শ্রদ্ধা আল্লাহ আইবি রহমান সহ সবাইকে শহীদের মর্যাদা দান করুন আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৫ আগস্ট, ২০২০, ১০:০৭ পিএম says : 0
    মন্ত্রীপরিষদ খুবই ভাল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত যে আইনগুলো এখন থেকে পরিবর্তন হবে, সেগুলোও নতুন আইন হবে না। সেটা ওই আইনের সংশোধন হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের মঙ্গলের জন্যে বলতে চাই ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাসে দেশে পুলিশদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার যে আইন ছিল সেটাকে জিয়া তাঁর শাসন আমলে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে পরিবর্তন করেছিলেন। আমার জানানেই সেইসব পুলিশের নিয়ন্ত্রণ অর্ডিন্যান্স পরবর্তীতে আইনে রূপায়িত হয়েছে কিনা। যদি না হয়ে থাকে তবে জিয়ার করা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ আইন (অর্ডিন্যান্সের মাধ্যে) এই সুযোগে বাতীল করে জাতীর জনকের করা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ আইন পুনরায় চালু করা হউক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ