পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বারবার আস্থা রেখে ভোট দিয়ে দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ যে, তারা বারবার আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমাদেরকে ভোট দিয়েছেন, তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে, যাতে দেশের একটি মানুষও গৃহহীন না থাকে। প্রতিটি মানুষকে অন্তত আমরা একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেব। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশের দায়িত্ব নিয়ে তিনি যেভাবে দেশকে পরিচালনা করছিলেন, তখন প্রয়োজন ছিল দেশের সব মানুষের একাত্ম হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো এবং সহযোগিতা করা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে- আমাদের দলের অভ্যন্তরে নানা খেলা শুরু হয়। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় দালালি করতে চেয়েছিল, তারা সমালোচনা মুখর হয়।
তিনি বলেন, সমালোচনার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমনভাবে তাদের লেখনী এবং কার্যকলাপ ছিল, (দৃশ্যত) পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাতির পিতার জনপ্রিয়তা নস্যাৎ করা। কিন্তু তারা যখন সেটা পারেনি, তখন হত্যার পথ বেছে নেয়।
এ সময় একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া যেমন বঙ্গবন্ধু ও চার নেতা হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, ...ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের ‘আসল খলনায়ক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ের কয়েক বছর পর একইভাবে তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মতো আরেকটি নারকীয় হত্যাযজ্ঞে একই চরিত্রে আবির্ভূত হয়।
প্রধানমন্ত্রী দু’টি ঘটনার তুলনা করে বলেন, প্রথম ঘটনায় বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। অন্যদিকে, দ্বিতীয় হত্যা পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল আমিসহ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পিছনে আসল খলনায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কলঙ্কজনক ঘটনার সবচেয়ে সুফল ভোগকারী ছিলেন জিয়া। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পরই তিনি সেনা প্রধান ও খন্দকার মোস্তাক আহমেদের উচ্ছেদের পরই তিনি প্রেসিডেন্ট হন। দন্ডপ্রাপ্ত খুনি ফারুক ও রশিদ বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে এই ষড়যন্ত্রে জিয়ার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া, রশিদ, ফারুক, ডালিম ও অন্যান্যদের সহায়তায় জাতির পিতাকে হত্যার পর পরই খন্দকার মোস্তাক স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হয়ে জিয়াকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি আরো বলেন, জিয়াকে সেনা প্রধান হিসেবে মোস্তাকের নিয়োগ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততার আরেকটি প্রমাণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে খালেদা জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী শান্তি সমাবেশে ভয়াবহ ও বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা ঘটায়।
তিনি বলেন, হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েও তাকে জনবিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, এই নৃশংস ও ঘৃণ্য অপরাধের প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ যে জন্য স্বাধীন হয়েছে, তা নস্যাৎ করে দেয়া। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনী ফারুক ও রশীদ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তারা বঙ্গবন্ধুকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে তারা তাঁকে হত্যা করেন।
অনুষ্ঠানে আইএমএলআই থেকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এমপি, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ আবু মো. দেলোয়ার হোসেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন বিষয়ক জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন বিষয়ক জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদশিত হয়।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।