পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তদন্ত কার্যক্রম ইতিবাচকভাবেই এগোচ্ছে : র্যাব
পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার বিষয়ে পুরো তথ্যচিত্র এখন র্যাবের কাছে পরিষ্কার বলে জানা গেছে। রিমান্ডে সাবেক ওসি প্রদীপ, ইনস্পেক্টর লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলালসহ রিমান্ড শেষ হওয়া ৭ আসামীর দেয়া তথ্যে সিনহা হত্যার বিষয়টি র্যাবের কাছে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এদিকে ৩১ জুলাই রাত এবং আগে-পরের টেকনাফ থানার সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়টি রহস্যের সৃষ্টি করেছে তদন্তকারীদের কাছে। আসন্ন বিপদ বুঝতে পেরে ৩১ জুলাইয়ের আগে পরের মোট ১১ দিনের টেকনাফ থানার সব সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করে আগেই কি বাঁচার পথ করে রেখেছিলেন ওসি প্রদীপ! প্রশ্ন উঠেছে কে গায়েব করল এগুলো থানা থেকে। কেন গায়েব করা হল সিসিটিভি ফুটেজ? কি ছিল সেখানে? তা হলে থানায় বসেই কি সিনহা হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। টেকনাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি থানার ফুটেজ এবাবে হাওয়া হয়ে যাওয়া রহস্যেজনক বলেই মনে করা হচ্ছে। মেজর (অব.) সিনহা হত্যার মামলা তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনার রাতে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসের গতিবিধির তথ্য তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে। ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন নাকি থানা থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এই প্রশ্নের উত্তর তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ কারণে বিপদ আঁচ করতে পেরে প্রদীপ কুমার দাস হয়ত থানার ফুটেজ নষ্ট করে ফেলতে পারেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের। গুরুত্বপূর্ণ ওই রাতসহ থানার ১১ দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কোথায় গেল এ সম্পর্কে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।
সিনহা হত্যা মামলার ৭আসামীকে রিমান্ড শেষে গতকাল কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। এদের প্রত্যককে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ্ তাদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। এরা গত ১৪ আগস্ট থেকে র্যাবের হেফাজতে রিমান্ডে ছিলো।
এদিকে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে আসামি সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব। এছাড়া এপিবিএনের তিন সদস্য এখনো কারাগারে তাদের রিমান্ড শুরু হয়নি এখনো।
তদন্ত কার্যক্রম ইতিবাচকভাবেই এগোচ্ছে: সিনহা হত্যা মামলা রিমাÐে থাকা চার পুলিশ সদস্যসহ সাত আসামী চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়ে তদন্ত কার্যক্রম ইতিবাচকভাবেই এগুচ্ছে বলে জানান র্যাবের মিডিয়া উইং পরিচালক লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহ। তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে তদন্তের কার্যক্রম আরো এগিয়ে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। মেজর সিনহা হত্যার ব্যাপারে পূর্ণ তথ্যচিত্র এখন র্যাবের হাতে বলেও জানান তিনি। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের দেয়া তথ্য আপাতত প্রকাশ করা যাচ্ছেনা বলে জানান, র্যাবের এই কর্মকর্তা। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহ একথা বলেন।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, এই হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামী সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও নন্দদুলাল রক্ষিতসহ গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, আলামতসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কিছু নিয়ে এই মামলারটি তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
সর্বশেষ বুধবার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশের জব্দ করা হার্ডডিস্ক ডিভাইস ২৯টি সামগ্রী আমাদের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেন আদালত। বৃহস্পতিবার রামু থানা পুলিশ এগুলে তাদের হেফাজতে রাখার আবেদন জানালে আদালত ২৯ সামগ্রী র্যাবের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার আগের আদেশ বহাল রাখেন। অন্যদিকে সিনহার বোনের দায়ের করা মামলার নয় আসামীর মধ্যে যে দুইজন আসামী গ্রেফতার হয়নি। তাদের পরিচয় সনাক্তের জন্য পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আবেদন করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
টেকনাফ থানা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে র্যাবের মিডিয়া প্রধান আরো বলেন, অঘটন ঘটলে যে কেউ এমন ঘটনা ঘটায়। সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবও এমন ঘটনা। সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার জন্য আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি। আশা করছি তাও পেয়ে যাবো।
এদিকে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান ও তার সহযোগীদের নিকট থেকে জব্দ করা সামগ্রী নিজেদের হেফাজতে রাখতে পুলিশের একটি আবেদন খারিজ দিয়েছে আদালত। রামু থানা পুলিশ এই আবেদন করলে শুনানী শেষে তা খারিজ করে দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দীন। পুলিশের এই আমলী আবেদন খারিজ করে সামগ্রীগুলো র্যাবের কাছে হস্তান্তরের আদেশ বহাল রাখেন আদালত। শুনানী শেষে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত র্যাব-১৫ এর এএসপি বিমান চন্দ্র সাহা সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তিনি জানান, গত বুধবার র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিহত সিনহার সহযোগী শিপ্রা দেব নাথকে আসামী করে রামু থানা পুলিশ কর্তৃক জব্দ করা সিনহা ও তার সহযোগীদের হার্ডডিস্কসহ ২৯টি সামগ্রী র্যাবকে হস্তান্তর করতে আদেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালত।
কিন্তু সামগ্রীগুলো নিজেদের হেফাজতে রাখতে আবেদন করেন রামু থানা পুলিশ। পুলিশের আবেদনটি খারিজ করে পূর্বের আদেশ বহাল রাখেন আদালত। ফলে সামগ্রী হস্তগত করতে আর কোনো আইনী বাধা রইল না।
অন্যদিকে র্যাবের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, সাত দিনের রিমান্ড শেষে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাত আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের জন্য পুন: রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।
তদন্ত কমিটি ৭ দিন সময় চায় : সিনহা হত্যাকান্ড তদন্তে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমাদিতে আবারো একসপ্তাহ সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে না পারায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিতে আরো ৭ দিনের সময় চেয়েছে বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে এই আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করাসহ বাকী কাজ সম্পন্ন করতে আরো কিছু সময়ের প্রয়োজন। এজন্য কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় আরো ৭ কর্মদিবস বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
শিপ্রার রিট খারিজঃ সিনহা রাশেদের সহকর্মী শিপ্রা দেবনাথের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ এনে সাতক্ষীরার এসপি মোস্তাফিজুর রহমান ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান শেলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে করা রিটটি খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুই এসপির বিরুদ্ধে করা রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেন। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।