পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন আরেকটি মাইলফলক অতিক্রম করেছে। কোরবানির ঈদের পরও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স উর্ধ্বগতিতে রয়েছে। সোমবার (১৭ আগস্ট) দিন শেষে রিজার্ভ রেকর্ড ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বেশি রিজার্ভ আগে কখনই ছিল না। রেমিট্যান্স বাড়ায় গত দেড় মাসে ৩৪ বিলিয়ন ডলার থেকে রিজার্ভ ৪০০ কোটি ডলার বেড়ে ৩৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেব করে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাড়ে নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, মহামারীর কারণে হুন্ডি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অর্থমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনায় উৎসাহিত হওয়ায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়ার একটি কারণ। এছাড়া সঙ্কটকালে পরিবারের সহায়তার জন্য প্রবাসীরা যেমন বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন, আবার সঙ্কটে পড়ে বিদেশের পাট চুকিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলেও তা রেমিট্যান্স বাড়ায় প্রভাব ফেলছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ পাঁচ বার রেকর্ড গড়েছে। গত ৩ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২৪ জুন সেই রিজার্ভ আরও বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ৩০ জুন রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এক মাস পর ২৮ জুলাই রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরও অতিক্রম করে। তিন সপ্তাহ পর সোমবার (১৭ অগাস্ট) রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল রিজার্ভের নতুন রেকর্ডের তথ্য জানিয়ে বলেছন, মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপর ভর করেই রিজার্ভ একটার পর একটা রেকর্ড গড়ছে। মহামারীর এই কঠিন সময়ে বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অবদান রাখার জন্য তিনি প্রবাসীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, এই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারের বড় ভূমিকা আছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছরের জুলাই থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে সরকার তার সঙ্গে ২ টাকা যোগ করে স্বজনকে ১০২ টাকা দেয়া হচ্ছে। এতে প্রবাসীরা উৎসাহিত হচ্ছেন। বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রিজার্ভের এই উল্লম্ফন আমাদের সাহস জোগাচ্ছে; আমরা সাহসিকতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করতে পারব বলে আশা করছি। রেমিট্যান্সের পাশাপাশি বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও এআইআইবির ঋণ সহায়তাও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। গত চার মাসে (এপ্রিল-জুলাই) এই দাতা সংস্থাগুলোর সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ-সহায়তা যোগ হয়েছে রিজার্ভে। এক বছর আগে গত বছরের ৮ অগাস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার।
করোনাভাইরাস মহামারীতে রেমিটেন্সের গতিতে ছেদ তো পড়েইনি, বরং তা আরও বেড়েছে। গত জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই এক মাসে এত বেশি রেমিটেন্স দেশে আসেনি। সবাই আশঙ্কা করছিলেন, কোরবানির ঈদের পর চলতি অগাস্ট মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ কমবে। কিন্তু তা ঘটছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, চলতি অগাস্ট মাসের ১৬ দিনে (১ অগাস্ট থেকে ১৬ অগাস্ট) ১০১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। গত বছরের আগস্ট মাসের এই ১৬ দিনে ৮১ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। মূলত রেমিট্যান্সের উপর ভর করেই রিজার্ভে রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ছাইদুর রহমান।
জুলাইয়ের আগে এক মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল গত জুন মাসে, ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। দেশের জিডিপিতে এই রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। এবার করোনাভাইরাস মহামারীতে মার্চ থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ওলটপালট হয়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্সও কমে গিয়েছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতির ধারা চলছে। ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ (১৮.২০ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। ওই অঙ্ক ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন রেমিট্যান্স এসেছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।