Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা মোকাবেলায় বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ারের পরামর্শ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২০, ৮:৫৬ পিএম

মহামারি করোনার প্রভাব দেশের ব্যাংকিং খাতেও পড়েছে। তাই সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সাতটি পরামর্শ দিয়েছে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)। সংগঠনটির সভাপতি কাজী মো. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শনিবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিডব্লিউএবি মনে করে, করোনা মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ অত্যন্ত সময়োচিত এবং বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত। এ প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথ বাস্তবায়নে ব্যাংকের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংকও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়ে সব ব্যাংকে যথাসময়ে সার্কুলার জারি করেছে। প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথ বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোর প্রয়োজন- সঠিক পরিকল্পনা নেয়া ও সতর্কতার সঙ্গে তা বাস্তবায়ন। প্রয়োজনে ব্যাংকের কর্মীদের উদ্দীপ্ত ও সম্পৃক্ত রাখা জরুরি। অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় সংগঠনটি সাতটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। এগুলো হলো- সরকার থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বর্তমানে নির্ধারিত কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে ব্যাংকগুলো আবেদন করতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর কনজ্যুমার লোনের উপর লোনের সুদহার কমপক্ষে ২শতাংশ বাড়ানো যেতে পারে। যেহেতু এসব লোন তদারকি খরচ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘আনসিকিউরড পারসোনাল লোন’ ও ক্রেডিট কার্ডের খেলাপি ঋণের বিপরীতে জেনারেল প্রভিশন ২শতাংশ নির্ধারণ করা যেতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক আরো নতুন ‘রিফাইন্যান্স ক্রেডিট স্কিম’ চালু করার জন্য পুনর্বিবেচনা করতে পারে। কোন ব্যাংকের লোকসান হলে এবং ডিভিডেন্ট দেয়া সম্ভব না হলে পরবর্তী অন্তত ২ বছর উক্ত ব্যাংকের শেয়ারকে জেড-ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভূক্ত না করা। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সরকারি ট্যাক্স ও ভ্যাট আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কমিশন নির্ধারণ করা। ইউটিলিটি বিলসহ অন্য সব সরকারি-বেসরকারি সেবার জন্য নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা যেতে পারে।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা এবং খবরের কাগজের মাধ্যমে সংগঠনটি জানতে পেরেছে- কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দিতে বাধ্য করেছে; যেমন- এবি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড। কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হয়েছে; যেমন- ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড এবং সিমান্ত ব্যাংক লিমিটেড। কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক অদ্যাবধি প্রণোদনা সুবিধা বাস্তবায়ন করেনি; যেমন- প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, সাইথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড, মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড এবং ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড।

তাই ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের মধ্যে চাকুরি হারানো, বেতন কমানো, প্রণোদনার সুবিধা না পাওয়ার ভয় ও অসন্তোষ রয়েছে। যার ফলে ব্যাংকের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং ভবিষ্যতে ব্যাংকের গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সমস্যা তৈরি হতে পারে যা ব্যাংকের আর্থিক সুরক্ষায় ভাল ফল বয়ে আনবে না।

তবে কতিপয় ব্যাংকের বিষয়ে আশা ব্যঞ্জক সংবাদ রয়েছে উল্লেখ করে সংগঠনটি জানায় -যে সব বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হবে না মর্মে ঘোষণা দিয়েছে; যেমন- এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, ইউসিবিএল, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড। যে সব ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছে; যেমন- জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবিসি, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউসিবিএল এবং সব ইসলামী ব্যাংক। উল্লেখ্য যে, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বোনাস দিয়েছে। যে সব ব্যাংক প্রণোদনা বাস্তবায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে; যেমন- পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ