পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারী ও টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করা সম্পর্কে গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করছেন মহাপ্রতারক সাহেদ। রিমান্ডে গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্যের মধ্যেও কোনো প্রতারণা রয়েছে কি না তা পুনঃযাচাই করতে তার দুই সহযোগি পারভেজ ও শিবলীর মুখোমুখিও করা হচ্ছে। এছাড়া আলাদাভাবে ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তবে বর্তমানে সাহেদকে র্যাব হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্যদিকে সাহেদের বিরুদ্ধে র্যাবে প্রতিদিনই বাড়ছে অভিযোগের সংখ্যা। গতকাল পর্যন্ত র্যাব সদর দফতরে ১৭০টি অভিযোগের বিপরীতে সাড়ে ১৫ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ পেয়েছে র্যাব। র্যাবের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতারণার। তবে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সাহেদের অমানবিকতা রূপকথাকেও হার মানাবে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সাহেদের ফাঁদে পড়তে বাধ্য হয়েছেন। তবে সাহেদ তার অপকর্মের কাহিনি আড়ালে রেখে বিভিন্ন টার্গেট হাসিলের পেছনে অনেক প্রভাবশালী পৃষ্ঠপোষকের ভ‚মিকার বিষয়টি উঠে আসায় বিব্রত বোধ করছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।
সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন এমন একজন কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ জানিয়েছেন, গত চার-পাঁচ বছর ধরে নিজেকে কথিত বুদ্ধিজীবী বা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ বা রাজনীতি গবেষণা কেন্দ্র নামে একটি প্রতিষ্ঠানও চালাতেন তিনি। এজন্য প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন টক শো’তে অংশ নিতেন। টক শো’তে বিরোধী রাজনীতিকদের বিষয়ে বেশি বেশি সমালোচনা করা করতেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায়ের জন্য ‘নতুন কাগজ’ নামে একটি নামসর্বস্ব পত্রিকাও খুলেছেন তিনি। নিজেকে সেই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি। এসবই ছিল তার বিভিন্ন অপকর্ম থেকে নিজেকে বাঁচানোর ঢাল। নারী ও টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করতেন। তবে কাউকে কাউকে দুটোই দিতে হতো তার কাজের জন্য এমন তথ্য জানিয়েছেন সাহেদ।
গতকাল বুধবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আব্দুল বাতেন জানান, সাহেদকে নিয়ে অভিযানে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করবে ডিবি। সাহেদকে গ্রেফতার থেকে শুরু করে র্যাব কাজ করেছে। মামলা ডিবি তদন্ত করছিল। ৫ দিন আমাদের কাছে রিমান্ডে ছিল, অনেক তথ্য আমরা পেয়েছি।
সাহেদকে গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে অভিযানে উদ্ধার অস্ত্র কোনো কাজে ব্যবহৃত হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে আব্দুল বাতেন বলেন, অস্ত্রটি কোথাও ব্যবহারের তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা তদন্ত করছি। মাঝে মাঝে অপরাধীরা বৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি অপরাধ আড়াল করতে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে। ইতোমধ্যে দুইজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আশা করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অস্ত্র মামলার চার্জশিট দেয়া হবে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন থানায় সাহেদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট থানা তদন্ত করবে। ডিএমপিতে এ পর্যন্ত ২০টির মতো মামলা রয়েছে, এগুলোর মধ্যে কিছু আমরা (ডিবি) আর কিছু সংশ্লিষ্ট থানা তদন্ত করবে।
কী পরিমাণ করোনার নমুনা পরীক্ষায় সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা করেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি, রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে মোটামুটি ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার করোনার রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছিল। সাড়ে ৫ হাজার রিপোর্টই যে গরমিল ছিল সেটা বলা যাবে না। যে সার্টিফিকেটের মধ্যে একজন ব্যক্তি করোনা পজিটিভ না হয়েও পজিটিভ দেয়া হয়েছে কিংবা পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে কিন্তু অনুমান করে বলা হয়েছে পজিটিভ, সেসব প্রতারণা প্রমাণের জন্য তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। মাদক উদ্ধার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। হয়তো তিনি মাদক সেবন করতেন। তবে মাদককারবারি ছিলেন কি-না সে বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য পাইনি।
রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসেন চিকিৎসক : রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসক নেয়া হবে, ফেসবুকে মো. সাহেদের এমন পোস্ট দেখে যোগাযোগ করেন এক নারী চিকিৎসক। এই হাসপাতালের মিরপুর শাখায় চাকরি হলেও মাস দেড়েক পর তিনি পালিয়ে আসেন। ঘুমানো ছাড়া দিনের বাকি সময় পুরোটাই তাকে কাজ করতে হতো। ওই হাসপাতালে তখন তিনিই ছিলেন একমাত্র চিকিৎসক। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীও সেখানে ছিল না। কিন্তু জোড়াতালির এই হাসপাতালটিতেই ভরসা খুঁজে পায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রিজেন্ট ও অধিদপ্তরের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে হাসপাতালটিকে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, তার চাকরি হওয়ার এক মাস পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সেখানে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর তিনি এক ভোরবেলায় পালিয়ে আসেন। কিন্তু ১০ দিন পর গাড়ি পাঠিয়ে তাকে আবারও নিয়ে যাওয়া হয়। এবার তাকে উত্তরা শাখায় নিয়োগ দেয়া হয়। দৈনিক আট কর্মঘণ্টা হিসেবে মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকা ঠিক হলেও দেড় মাস পর তাকে দেয়া হয় ৩০ হাজার টাকা। একপর্যায়ে তিনি উত্তরা থেকেও পালিয়ে আসেন। তিনি জানান, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও সেখানে থাকতে পারেননি। উল্লেখ্য, গত ১৫ জুন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর বেইলি ব্রিজের পাশে নর্দমার মধ্যে থেকে বোরকা পরা অবস্থায় সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাব। তার কাছ থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। পরবর্তীতে ডিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।