Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় সংঘর্ষ ও গণপিটুনিতে ৪ জন নিহত, আহত ৭

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। গুলিবর্ষণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গণপিটুনিতে মেরে ফেলেছেন একজনকে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো সাতজন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মশিয়ালী এলাকার ইস্টার্ন গেটে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে।
ঘটনাস্থলে নিহত দু’জন হলেন, মশিয়ালী এলাকার মৃত মো. বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০) ও মো. ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০)। ওই দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ মো. সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরো আটজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নেয়া হয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মো. সাইফুল ইসলাম (২৭)। গুলিবর্ষণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে রাত ২টার দিকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেন জিহাদ শেখকে (৩০)।
এলাকাবাসী সংঘর্ষের জন্য দায়ী করছেন খানজাহান আলী থানা আ.লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া এবং তার দুই ভাই খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি জাফরিন ও মিল্টনকে। তাদের অভিযোগ, মশিয়ালীতে ওই তিন ভাইয়ের একটি বাহিনী রয়েছে। তাদের সঙ্গে এলাকার ফকির গংদের দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে। এ পূর্ব শত্রুতার জেরে জাকারিয়া ও জাফরিন এলাকার নিরাপরাধ ব্যক্তি মুজিবরকে অস্ত্রসহ পুলিশে ধরিয়ে দেন। খানজাহান আলী থানা পুলিশ বিকেলে মুজিবরকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এরপর এলাকাবাসী জাকারিয়া ও জাফরিনকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় জাকারিয়া এবং তার দুই ভাই জাফরিন ও মিল্টন স্থানীয়দের ওপর গণহারে গুলিবর্ষণ করলে সংর্ঘষ বেধে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই তিন ভাইয়ের বাহিনীর ওপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল। জনতার ওপর তাদের গুলিবর্ষণের ঘটনায় তা তীব্র আকার ধারণ করে। রাতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এলাকার ৩/৪টি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টনের বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেন। এসময় গণপিটুনিতে মারা যান জিহাদ শেখ।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কানাই লাল সরকার জানান, ঘটনাস্থলে দুইজনের মৃত্যুর পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন সাইফুল ইসলাম মারা যান। ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী প্রতিপক্ষের জিহাদ নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
খানজাহান আলী থানার ওসি সফিকুল ইসলাম ও এসআই শওকাত আলী জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাতেই জাকারিয়াকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ। এলাকায় চাপা উত্তেজনা ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ