পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার নামে রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথকেয়ারের নজিরবিহীন প্রতারণার ঘটনা এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। এই ঘটনায় জেকেজির আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর তার স্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সাহেদ করিমকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সাহেদকে গ্রেফতার করতে না পারা নিয়ে সর্বত্রই বিতর্ক হচ্ছে ‘তবে কী সাহেদ এ যুগের ইমদু হয়ে কোনো কাশেমের বাসায় রয়েছেন?’ তা ছাড়া দুটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষা করতে দেয়া ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চলছে দোষারোপের খেলা। প্রশ্ন হচ্ছে কোন খুঁটির জোরে তারা ‘ধরাকে সরা জ্ঞানে’ এমন ভয়াবহ প্রতারণা করার দুঃসাহস দেখালেন?
ডা. সাবরিনার স্বামীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওভাল গ্রæপের জেকেজি কেবল করোনা পরীক্ষার অনুমতিই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ-এর অনুষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনারও কাজ করত। শুধু তাই নয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরে আলাদা প্রভাব নিয়েও চলাফেরা করতে আরিফ দম্পতি। তাদের সেই প্রভাবের উৎস সন্ধান করতে গিয়ে উঠে এসেছে নানা রকম তথ্য।
আবার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিমের সঙ্গে উপর তলার এতো বেশি মানুষের ছবি প্রকাশ পেয়ে তা দেখে অনেকেই অবাক। দেশে সিনিয়র সিটিজেট, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্টজনেরা যেখানে যেতে সাহস দেখান না সেখানেও সাহেদ করিমের ছিল অবাধ বিচরণ। ৬ বছর আগে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে মন্ত্রীর সামনেই চুক্তিপত্র করার দৃশ্য এখন ভাইরাল। তার চেয়েও বড় কথা দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনী যখন সাহেদকে খুঁজছেন তখন ৫/৬ দিনেও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান প্রশ্ন উঠেছে।
এর মধ্যেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে করোনা চিকিৎসার চুক্তি করা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের বেøম গেইম শুরু হয়ে গেছে। আমলারা সাহেদের বদলে একে অন্যের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন, সত্যিই সাহেদ, সাবরিনাদের খুঁটি শক্ত। তারা এতোই ক্ষমতাধর যে তাদের জন্য একটি মন্ত্রণালয় এবং তার অধিনস্ত অধিদপ্তর মুখোমুখি হয়েছে। শক্তিধর আমলারা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মধ্যে করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই সমন্বয়হীনতা ছিলো। করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনা বেরিয়ে আসার পর সেই সমন্বয়হীনতা আরো বেশি প্রকাশ্যে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চলছে দোষারোপের খেলা। স্বাস্থ্যখাতের নানা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর এর জন্য মন্ত্রণালয় দুষছে অধিদফতরকে। অন্যদিকে অধিদফতর বলছে, মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতেই হচ্ছে সব কাজ। করোনা মহামারির এই দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন; সেখানে সমন্বয়হীনতা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় দেশের স্বাস্থ্যখাতের নড়বড়ে অবস্থা।
সাইনবোর্ড সর্বস্ব হাসপাতাল ও বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে করোনা চিকিৎসা ও নমুনা পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়ায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। বিশ্লেষকরা বলছেন, রিজেন্ট ও জেকেজির প্রতারণা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের অদক্ষতা ও ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করেছে। লাইসেন্সবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালের অপকর্ম প্রকাশ হওয়ার পর প্রশ্ন ওঠে, করোনা চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে দেয়া হলো। এর দায় কার? লাইসেন্সবিহীন রিজেন্ট হাসপাতাল কীভাবে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সনদ পেলো?
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে রিজেন্টের প্রতারণার ভয়াবহ চিত্র উঠে আসায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে মন্ত্রণালয় চিঠি দেয় কেন ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাচে ব্যাখ্যা তলব করে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। এই চুক্তির আগে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিমের সঙ্গে পরিচয় থাকা তো দূরের কথা স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ তাকে চিনতেনও না। অধিদফতরের এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১২ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে শোকজ করেছে। মন্ত্রণালয়ের ওই শোকজ নোটিশে স্বাস্থ্য অধিদফতর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে কী বেঝাতে চেয়েছে তা চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, কেউই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নন। আমি ব্যাখ্যা দেবো। তবে লিখিত নির্দেশনাই যে সবসময় হয় তা নয়। মৌখিকভাবেও অনেক সময় অনেক নির্দেশনা দেয়া হয়। আমার কথার পক্ষে যে প্রমাণ রয়েছে সেটাদেবো। গণমাধ্যমে পাঠানো ডিজির বক্তব্যের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে এ ধরনের ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে শোকজ করা হয়েছে। মন্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কিছুই জানে না। মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়নি, মন্ত্রণালয়ে কোনো চিঠিও দেয়া হয়নি।’ করোনা মহামারির মধ্যে যারা প্রতারণা করে মানুষের জীবন বিপন্ন করেছেন, সেই প্রকারকদের নিয়ে সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ‘বেøমগেইমে’ প্রশ্ন চলে আসে সাহেদ-ডা. সাবরিনাদের খুঁটির জোর কোথায়? রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্র তাদের কাছে অসহায়! সরকারি অফিসে কাজ করার কারণে সাবরিনাকে গ্রেফতার করা গেলেও এতোদিনেও সাহেদকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না? সাহেদ কাদের শেল্টারে নিরপদে রয়েছেন?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।