পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের প্রতারণার কথা এখন সবার জানা। তার প্রতারণার শিকার অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। এছাড়াও ইতোমধ্যে অনেকেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু উল্টো চিত্র রয়েছে রাজধানীর মিরপুর এলাকায়। সেখানে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে কেউ কিছু বলতে নারাজ। বিগত দিনে সাহেদের কর্মকান্ড ও এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মিরপুর ১২ নম্বরে রিজেন্ট হাসপাতালের আশপাশ এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের এক নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাসায় রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের অবস্থান। মিতি প্লাজা নামের ওই ভবনের নিচতলায় কয়েকটি দোকান। দোকানগুলো খোলা রয়েছে। তবে হাসপাতালটি সিলগালা করা। এছাড়াও ভবনের নিচে রয়েছে রিকশা স্ট্যান্ড।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে হানিফ নামের এক ব্যক্তি প্রথমে মিম হাসপাতাল নামে একটি হাসপাতাল দিয়েছিলেন ওই ভবনে। পরে সাহেদ ওই ব্যক্তিকে (হানিফ) হুমকি দিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের সাইনবোর্ড দিয়ে দেন। এর প্রতিবাদ করায় হানিফ নামের ওই ব্যক্তিকে গুম করার হুমকিও দেন সাহেদ। এরপর নিরুপায় হয়ে চলে যান হানিফ। তারপর থেকেই সেখানে বসে প্রতারণা শুরু করেন সাহেদ। শুধু তাই নয়, সাহেদ যখন মিরপুরে যেতেন তখন সেখানে রাস্তা ফাঁকা করা হত। হাসপাতালের নিচে রিকশা স্ট্যান্ডে কোনো রিকশা রাখা যেত না। সাহেদ যতক্ষণ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতেন; ততক্ষণ পর্যন্ত সেই এলাকা ফাঁকা রাখা হত। রিকশা স্ট্যান্ডে রাখা হত সাহেদের গাড়ি। এ সময় যদি কোনো রিকশা চালক সেই এলাকায় যেতেন তাহলে মারধরও করা হত।
আবুল হোসেন নামের এক রিকশাচালক গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে রিকশা চালান। এই সুবাদে রিজেন্ট হাসপাতালের নিচে রিকশা স্ট্যান্ডে যান তিনি। কিন্তু তিনি বেশ কয়েকবার সেখানে গিয়ে সাহেদ বাহিনীর সন্ত্রাসীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে। এক পর্যায়ে ভয়ে সেই এলাকাও ছেড়ে দেন তিনি। কিন্তু রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে; এমন তথ্য জেনে সেই এলাকা ফের রিকশা চালানো শুরু করেছেন তিনি।
সাহেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে শুধু রিকশা চালকরাই বিপাকে পড়েননি, সেই এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু ভয়ে কেউ কথা বলতে নারাজ। এখনো সাহেদ আতঙ্ক বিরাজ করছে সেই এলাকায়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, সাহেদ যখন সেই এলাকায় অবস্থান করতেন; তখন এক সাথে কয়েকটি গাড়ি নিয়ে যেতেন। মন্ত্রী-এমপিরা যেভাবে চলাফেরা করতেন; তাদের মতো সাহেদও চলাফেরা করতেন। এছাড়াও সেই এলাকার দোকানগুলো থেকে কোনো কিছু ক্রয় করলে টাকা দিতেন না বলেও অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী।
শুধু আশপাশের ব্যবসায়ী নয়, স্বয়ং মিতি প্লাজা মালিকও সাহেদের প্রতারণা শিকার হয়েছেন। ছয়তাল বিশিষ্ট ভবনটির চার তলাই সাহেদের কাছে ভাড়া দেন তিনি। কিন্তু ভাড়া বাবদ তিনি ৪৫ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। ওই টাকা পরিশোধের কথা বললে সাহেদ উল্টো ভবন মালিককে হুমকি-ধমকি দিতেন।
ভবনটির মালিক মো. ফিরোজ আলম চৌধুরী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, উনার কাছে ভাড়া বাবদ ৪৫ লাখ টাকা পাই। কিন্তু ভাড়া চাইতে গেলে উনি হুমকি-ধমকি দিতেন। তবে হাসপাতলটি সিলগালা করার পর তিনি পল্লবী থানায় সাহেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান।
ফিরোজ আরো বলেন, এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিয়েছি ভবনটি। কিন্তু পরে দেখি আরেক ব্যক্তি এসে হাসপাতাল বানাচ্ছেন। এরপর থেকে ভাড়াটিয়াকে কাছে জিজ্ঞাস করলাম, কী ব্যাপার আমি তো ভাড়া দিয়েছি আপনার কাছে, উনি কে? তিনি বললেন, সমস্যা নেই। কিন্তু সেই যে ভবনে হাসপাতাল করলো, ভাড়া দেয়ার পর থেকেই ভাড়া পাচ্ছি না। সে একটা প্রতারক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।