Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রিজেন্টের দুই হাসপাতাল সিলগালা : ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন

রিজেন্ট হাসপাতালের সব কার্যক্রম বাতিল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২০, ৭:৫৪ পিএম

রাজধানীর উত্তরায় রিজেন্টের মূল কার্যালয়সহ রোগীদের স্থানান্তরের পর উত্তরা ও মিরপুর শাখার হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসার নামে প্রতারণা করায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. সাহেদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে র‌্যাব। লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকা, ভুয়া করোনা টেস্ট ও অন্যান্য অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা সিলগালা করা এবং মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান। 

অন্যদিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ও নমুনা পরীক্ষায় নানা ধরনের অনিয়ম-প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় আর কোনো ধরনের কার্যক্রম চলতে পারবে না। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর এই হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিানিক) ডা. আমিনুল হাসান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, েেসামবার রাতেই মো. সাহেদের মালিকানাধীন হাসপাতাল থেকে অননুমোদিত র‌্যাপিড টেস্টিং কিট ও একটি গাড়ি জব্দ করা হয়।
র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, ওই গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্টিকার লাগানো ছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনের চোখে ধুলো দিতেই ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্টিকার ব্যবহার করতেন মো. সাহেদ।
র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার নামে প্রতারণা, করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ায় রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। করোনার মনগড়া রেজাল্ট দেয়ার অভিযোগে গত সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সেখান থেকে আটজনকে আটক করা হয়।
র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা হাসপাতালটির মিরপুর ও উত্তরা শাখায় অভিযান চালিয়েছি। উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে হাসপাতালটির কাছের একটি ভবনের দোতলা ও তৃতীয় তলায় তাদের অফিস। আমরা সেখান থেকে ডকুমেন্টস উদ্ধার করেছি। তাদের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ। এছাড়া টেস্ট না করে করোনা রোগীদের পজিটিভ ও নেগেটিভ রেজাল্ট দেওয়া হতো। এসব কারণে হাসপাতালটির অফিস সিলগালা করা হয়েছে। হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিানিক) ডা. আমিনুল হাসান আরো বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাসপাতালটি কোনো কার্যক্রম চালাতে পারবে না। এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন প্রস্তুত করা হয়েছে। কিছু সময়ের মধ্যেই এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পৌঁছে যাবে।
অধিদফতর বলছে, প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, হাসপাতাল দু’টি রোগীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বিরাট অঙ্কের টাকা আদায় করছে। অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিতে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, তাগিদ দিলেও লাইসেন্স নবায়ন না করে আরও অনিয়ম করেছে বলে নানা অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের কারণে ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুযায়ী হাসপাতালটির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলো।



 

Show all comments
  • Peyar Ahmad ৭ জুলাই, ২০২০, ১০:৫৯ পিএম says : 0
    Why not other Pvt hospital also ...we don't want to see take one gate one free ...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ