পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন (টিকা) আবিষ্কার করার দাবি করেছে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটি গত ৮ মার্চ এই টিকা আবিষ্কারে কাজ শুরু করে। টিকা তৈরির সকল ধাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারলে আগামী ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে এটি বাজারে আনবে প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। এই টিকা আবিষ্কারে সার্বিক তত্ত¡াবধায়নে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. কাকন নাগ এবং সিওও ড. নাজনীন সুলতানা।
সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ৮ মার্চ ‘কোভিড-১৯ ‘শনাক্তকরণ কিট, টিকা এবং ‘ওষুধ’ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণা কর্মকান্ড শুরু করেন। এই প্রেক্ষাপটে টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।
তিনি বলেন, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। এসব সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে আমরা আমাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করেছি, যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছি। এই টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছি, যা ইতোমধ্যেই এনসিবিআই স্বীকৃতি দিয়েছে এবং প্রকাশিত হয়েছে (accession number: MT676411)। আমাদের গবেষণাগারে আবিষ্কৃত টিকার বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি অ্যানিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছি।
প্রতিষ্ঠানটির ইনচার্জ রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট ড. আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রিলিমিনারি ট্রায়ল সম্পন্ন করেছি, এরপর আবারো এনিমেল ট্রায়াল করবো। তারপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাব। একটি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করছি। এজন্য টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভাইরাস কালচারের প্রয়োজন নেই। এমনকি এ কাজে আমাদের বায়োসেফিটি-৩ মানের ল্যাবেরও দরকার নেই। আমরা এ পর্যন্ত যতগুলো জিনোম সিকুয়েন্স হয়েছে সেগুলো বিশ্লেষণ করেই গবেষণা পরিচালনা করছি। যেহেতু এটি আমাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত তাই আচিরেই আমরা এর পেটেন্ট এর জন্য আবেদন করবো।
তিনি বলেন, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড’ ২০১৫ সালে ক্যান্সার, আর্থ্রাইটিস, রক্তস্বল্পতা, উচ্চরক্তচাপ, অটোইমিউন ডিজিজসহ অন্যান্য দুরারোগ্য রোগ নিরাময়ের জন্য বায়োলজিক্স, নোভেল ড্রাগ এবং বায়োসিমিলার উৎপাদনের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ৬টি দুরারোগ্য ব্যাধির বায়োসিমিলার উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে, যা বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কঠিন নিয়ম-কানুনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদনের পথ রয়েছে। শিগগিরি আমরা এই ভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আবেদন করবো। আশা করছি অচিরেই এই টিকা বিশ্বের দরবারে স্থান করে নেবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন ইনিকলাবকে বলেন, ভ্যাক্সিন আবিস্কার নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে শুনেছি। আমাদেরকে বলেনি। তাই ছিলাম না। এখনো কেউ আমাদের কাছে অনুমোদনের জন্য আসেনি। হয়তো ওদের ডেভলপমেন্টটা জানালো। অনুমোদন প্রক্রিয়ায় হয়তো আমরা জানবো।
এদিকে, ২৪ জুন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবশেষ খসড়া তালিকা অনুযায়ী এখন বিশ্বে করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে ১৪৩টি উদ্যোগ চালু আছে। আর ২ জুন এমন উদ্যোগের সংখ্যা ছিল ১৩৩। অর্থাৎ, তিন সপ্তাহের মধ্যে আরও ১০টি টিকার উদ্যোগ যুক্ত হয়েছে। এখন ১৪৩টি উদ্যোগের মধ্যে ১৬টির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা মানবদেহে পরীক্ষা চলছে। বাকি ১২৫টি টিকা প্রথম বা দ্বিতীয় ধাপে আছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বব্যাপী করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে যে প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে সে তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।