পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তৈরি হচ্ছে শ্রমিকদের জন্য কোয়ারেন্টিন সেন্টার
গতি ফিরছে মেট্রোরেলে। করোনার কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল সরকারের মেগা প্রকল্পের অন্যতম মেট্রোরেলের কাজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আবার শুরু হয়েছে কাজ। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে, চলতি মাসের মাঝামাঝিতেই পুরোদমে কাজ শুরু করার লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে দুইটি হাসপাতালের সাথে চুক্তি করা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে শ্রমিকদের কোয়ারেন্টিন সেন্টার।
প্রকল্প সূত্র জানায়, করোনার মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে গত ৪ জুন থেকে উত্তরায় মেট্রোরেলের ‘সিপি-৩, সিপি-৪ এই দুই প্যাকেজের কাজ আবার শুরু হয়েছে। এছাড়া উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটের বিভিন্ন অংশে কাজ চলছে। মেট্রোরেলের প্রথম অংশ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সবগুলো সেগমেন্ট প্রস্তুত হয়েছে।
সূত্র জানায়, যে সব কাজে যন্ত্রের ব্যবহারের আধিক্য বেশি সেসব কাজ চলছে এখন। স্টেশন ফেব্রিকেশনে কম লোকবল লাগে বলে আপাতত সেই কাজ চলছে। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে যাতে পুরোদমে কাজ শুরু করা যায় সে লক্ষ্যে শ্রমিকদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। এজন্য প্রকল্প এলাকায় একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনাও করা হয়েছে। কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইতোমধ্যে দুইটি হাসপাতালের সাথে চুক্তি করা হয়েছে। একই সাথে যারা নতুন কাজে আসছে তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, করোনা টেস্টসহ ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এ জন্য ৭০নম্বর পিয়ার এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে শ্রমিকদের কোয়ারেন্টিন সেন্টার। মালিকানাধীন কোম্পানী, পরামর্শক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, প্রজেক্টের কর্মচারী কর্মকর্তাদের নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে একাধিক বিকল্প গ্রæপ- যাতে প্রকৃতপক্ষে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা যায়।
জানা গেছে, দিয়াবাড়ীতে মেট্রোরেলের ডিপো এলাকা থেকে মতিঝিলগামী যে উড়াল পথ শুরু হয়েছে তাতে স্থায়ী রেললাইন বসানোর কাজের প্রস্তুতি চলছিলো। দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর মার্চের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায় মাঠ পর্যায়ের কাজ। সে সময় মেট্রোরেলের কাজের সঙ্গে যুক্ত অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হন। করোনার ঝুঁকি এড়াতে বিদেশি শ্রমিক ও প্রকৌশলীরাও দেশে ফেরেননি। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গত মাসের শুরুর দিকে মেট্রোরেলসহ সব প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরুর তাগিদ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু অনেকেই করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কাজে গতি আনা সম্ভব হয়নি। কর্মকর্তারা জানান, মেট্রোরেলের কাজে যুক্ত ৫৫ কর্মকর্তা ও শ্রমিক করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন। যাদের মধ্যে ৩১ জন ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাকিরাও সুস্থ হওয়ার পথে।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি মাসের মাঝামাঝিতে যাতে পুরোদমে কাজ শুরু করা যায় সে লক্ষ্যে এগোচ্ছেন তারা। উত্তরা উত্তর স্টেশনের কিছু আগে ভায়াডাক্টের ওপর সার্ভে করছেন ইটালিয়ান প্রকৌশলীরা। ২ ও ৩ নম্বর স্টেশনেও ফেব্রিকেশনের কাজে যোগ দিয়েছেন ভারতীয় প্রকৌশলীরা। মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত এমন নানা কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বিদেশি কর্র্মীরা। তবে এর কিছুটা ছন্দপতন হচ্ছে ১২জন জাপানি পরামর্শকদের অনুপস্থিতিতে। ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, তারা ফ্লাইট চালু হওয়া মাত্র আসবেন। তিনি জানান, মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাও পর্যন্ত অংশের ১১ কিলোমিটার উড়ালপথ নির্মাণ শেষ হয়েছে। প্রথম অংশের কাজের অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। দ্বিতীয় অংশ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজও শুরু হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। এ অংশের বাস্তব অগ্রগতি ৪০ শতাংশ।
এদিকে ট্রায়াল রানের জন্য জাপানের কারখানায় প্রথম সেট কোচ তৈরি হওয়ার পর তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম সেট কোচ। করোনা সঙ্কট কেটে গেলেই সমুদ্রপথে যা জাপান থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে। মেট্রোরেল প্রকল্পে দেশি-বিদেশি কনসালটেন্ট, ঠিকাদার, কর্মকর্তাসহ প্রায় ৯ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। দেশের বাইরে থেকে এ প্রকল্পে কাজ করছেন জাপান, থাইল্যান্ড এবং ভারতের প্রকৌশলীরা। এমআরটি লাইন-৬ এর একজন কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পে এখন চীনের ৭/৮ জন কর্মকর্তা রয়েছেন এবং উত্তরায় মেট্রোরেলের ভবন অবকাঠামো কাজে ৩০ থেকে ৪০ জন দেশীয় শ্রমিক কাজ করছেন। বাকিরা কেউ এখনও কাজে যোগ দেয়নি। আশা করছি শিগগিরি তারা কাজে যোগ দিবেন।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগমী বছর বিজয় দিবসে মেট্রোরেল চালু হবে। প্রথম মেট্রোরেল চলবে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সাড়ে ২১ কিলোমিটার পথ। প্রতিটি ট্রেনে ৬ টি কোচের মধ্যে একটি কোচ শুধুমাত্র নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বাকি সবগুলো নারী-পুরুষ ব্যবহার করতে পারবেন। মেট্রোরেল হবে চালকবিহীন। এগুলো রিয়েলটাইমের সঙ্গে চলবে। তবে প্রথমদিকে কিছুদিন একজন করে চালক রাখা হবে। প্রতি ৪ মিনিট অন্তর উত্তরা থেকে কমলাপুর ট্রেন চলবে। এপথে উত্তরা ও কমলাপুরসহ মোট ১৭টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে উত্তরা সেন্টার, বিজয় স্মরণী ও মতিঝিল স্টেশন হবে আইকনিক স্টেশন। বাকিগুলো হবে সাধারণ স্টেশন। জাপানের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।