পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের কল্যাণে সব সময় কাজ করে যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জাতির পিতার কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের এটাই প্রতিজ্ঞা- বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো। বাঙালি জাতির প্রতিটি মহৎ, শুভ ও কল্যাণকর অর্জনে আওয়ামী লীগের ভ‚মিকা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে আমরা আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের জন্য কথা বলে গেছে, মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছে, মানুষের জন্য কাজ করছে।
গতকাল সংসদের মূলতবি অধিবেশনের শুরুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের দুঃখ কষ্ট থাকলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই মানুষ ভালো আছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রতিটি ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া থেকে শুরু করে লাশ দাফনসহ প্রতিটি কাজে মানুষের পাশে রয়েছে। প্রত্যেকটি এলাকায় আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। ঘুর্ণিঝড় আম্পানের সময়ও তারা সকলে সক্রিয় ছিলো।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের প্রতিজ্ঞা এদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো। মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। আজকের দিনে জাতির পিতার কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, জাতির পিতা শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার আকাক্সক্ষা আমাদের পূরণ করতে হবে। তার অস্তিত্ব আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এক সময় তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু মুছে ফেলা যায়নি। সত্যকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের জন্য কাজ করে। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের মানুষ কিছু পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটিয়ে বাংলার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, সেই সূর্যকে উদিত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, পলাশীর প্রান্তরে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছে জাতির পিতার নেতৃত্বে সেই সূর্য উদিত হয়েছে ১৯৭১ সালে। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে জীবন দেয়া নেতা-কর্মীদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতা-কর্মী যারা জীবন দিয়েছে আমি তাদের কথা স্মরণ করি। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মুজিববর্ষ উদযাপন কর্মসূচি সীমিত করার মতো আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সীমিত করে অনলাইনে করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সীমিত আকারে আমরা এটি উদযাপন করছি।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি এবং শামসুল হক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তখনকার তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক, যদিও তিনি তখন জেলে ছিলেন। জেলে থাকা অবস্থায় তাকে যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভবিষ্যতেও জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত ও আধুনিক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অপশাসন, দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে পুনরায় বিজয় অর্জন করে। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১১ বছরে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভ‚তপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। স্বাস্থ্যসেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায়। মানুষ বিনামূল্যে ৩০ ধরণের ওষুধ পাচ্ছেন। শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার কমেছে, গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছরে পৌঁছেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। সাক্ষরতার হার ৭৩ ভাগের উপরে উন্নীত হয়েছে। ৯৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, ২৮টির অধিক হাই-টেক পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২, গভীর সমুদ্র বন্দর, পদ্মাসেতু, এলএনজি টার্মিনাল, এক্সপ্রেসওয়ে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করেছি। ওয়াদা অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য পরিচালনা করছি। জঙ্গিবাদ ও হরতালের অবসান ঘটিয়ে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি। ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রশংসনীয় ভ‚মিকা পালন করছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করবেন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পারব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, গণজমায়েত না করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।