পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)। না, আষাঢ়ের প্রথম দিনে বাদলের (বৃষ্টি) দেখা মেলেনি। কেউ কদম ফুলও দান করেননি। অথচ আষাঢ়ের প্রথম দিনের দৃশ্য হওয়ার কথা ছিল সকাল থেকেই অন্ধকার মেঘে ঢাকা আকাশ, জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার’ গানের মতোই দিন-রাত বোঝার উপায় থাকবে না। কেঁদেই চলবে আকাশের ভাঁজে ভাঁজে মেঘ।
পুঞ্জে পুঞ্জে, উড়– উড়– আর ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ। দল বাঁধা মেঘ। মেঘের কত রঙ! সাদা-সবুজ-ধূসর মেঘ। কিছুরই দেখা মেলেনি আষাঢ়ের প্রথম দিন। অদৃশ্য করোনাভাইরাসের নির্মম নৃত্য হঠাৎ যেন বিষাদে ভরিয়ে তুলেছে সারা পৃথিবীর মতো শ্যামল বাংলার পথ-ঘাট-মাঠ জনপদ। আষাঢ়ের চিরায়ত দৃশ্য কদম ফুলের মনকাড়া হাসি। রজনীগন্ধার কী মিষ্টি গন্ধ! আউশের ক্ষেতে চাষি কাটছে মুঠি মুঠি ধান। বাঁধছে আঁটি। আঁটি মাথায় ছুটছে ক্ষেতমজুর। পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি করছে দুষ্টু বালকের দল। হাঁসগুলো নতুন পানিতে ছুটছে জোরে। সাঁতার কাটছে। টইটম্বুর পুকুর। এটাই তো হওয়ার কথা। আহা রে! সেই চিরচেনা আষাঢ় কোথায়? করোনায় তো প্রকৃতি তার নিজের মতো করে সাজার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু সেই প্রকৃতির রঙ-রস-গন্ধ উপভোগ করার সুযোগ যেন কেড়ে নিয়েছে করোনা।
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত,শীত, বসন্ত। এ ছয় ঋতুর আবর্তন বাংলাদেশকে করে তুলেছে বৈচিত্র্যময়। প্রত্যেকটি ঋতুরই রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সবুজ সৌন্দর্যে ভরা অপরূপ প্রকৃতির এ দেশে নব নব সাজে সজ্জিত হয়ে পরপর আসে ছয়টি ঋতু। এমন বৈচিত্রময় ঋতুর দেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তাই তো কবি লিখেছেন ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি/ সকল দেশের রানি সে জে আমার জন্মভ‚মি’। বছর ঘুরে প্রতিবারই আষাঢ় আসে নানা রূপ সাজ নিয়ে। বৃষ্টির ধারায় নবতর জীবন আসে পুষ্প-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার হয় প্রকৃতির অবয়বে। কিন্তু ইটপাথরের শহর থেকে করোনার কারণে যে বের হওয়ার উপায় নেই।
গতকাল আষাঢ়ের প্রথম দিনে বৃষ্টির দেখা না মিললেও ঋতু বৈচিত্রের কারণেই প্রকৃতি তার নিজস্ব নিয়মে হয়তো পরিবর্তন হয়েছে। অথচ করোনা নামের অদৃশ্য মরণঘাতী ভাইরাসের ভয়ে সবাই ঘরবন্দী। আহা রে!! আষাঢ়ের সতেজ বাতাসে বন-বনান্তরে কতোই না জুঁই, কামিনী, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা ফুঁটেছে! নাম না জানা আরো হাজারো ফুলের কত সুবাস!! লেবু পাতার বনেও যেন চলেছে অন্য আয়োজন!!! উপচেপড়া পদ্মপুকুর রঙিন হয়ে উঠেছে। কেয়ার বনে চলছে কেতকীর মাতামাতি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, ‘আবার এসেছে আষাঢ়, আকাশও ছেয়ে --আসে বৃষ্টিরও সুবাস ও বাতাসও বেয়ে...’।
দেশের সাধারণ মানুষ আষাঢ়ের প্রথম দিনেই গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে দেয়; রাজধানী ঢাকায় কবিতা, গান ও নাচের মাধ্যমে আষাঢ়কে বরণ করে নেন। গান-কবিতা উৎসব-আলোচনা-স্মৃতিচারণের আয়োজন করেন। আষাঢ় নিয়ে নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে নানান মিথ।
কক্সবাজারের রাখাইন স¤প্রদায় আষাঢ় বরণ করে ভিন্ন মাত্রায়। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে তারা মাসব্যাপী বরণ উৎসবের আয়োজন করে। কিন্তু এবার করোনার পাদুর্ভাবে সবকিছু বন্ধ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।