পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় সমাজতান্তিকে দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, করোনার মহাদুর্যোগে ইতোমধ্যেই মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। এ অবস্থায় সরকার যে বাজেট দিচ্ছে তাতে আয় বৈষম্য কমাতে না পারলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব চরম হুমকিতে পড়বে। বুধবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আ স ম রব এবারের বাজেট গতানুগতিক না হয়ে গণমুখী বাজেট হবে এমনটাই দাবি করেন। তিনি বাজেটে স্বাস্থ্যখাত, কৃষিখাত ও শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার দাবি করেন। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কলকারখানা চালু এবং কয়েক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সহ গণমুখী পরিকল্পনা গ্রহণেরও দাবি জানান। রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অংশীদারিত্ব গণতন্ত্র ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে সংকট মোকাবেলারও আহবান জানান।
আ স ম রব বলেন, করোনায় আর্থসামাজিক খাতে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, কোন কোন খাত বেশি আক্রান্ত হয়েছে, কত কোটি মানুষ কর্ম হারিয়েছে আর কত কোটি মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে নেমে এসেছে সরকার তার চূড়ান্ত তথ্য-উপাত্ত ছাড়াাই বাজেট পেশ করছে। আমরা বহুদিন থেকেই বিদ্যমান বাজেট প্রনয়ন ও বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কারের কথা বলে আসছি। সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের বেড়াজালে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় এবং প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রিক উন্নয়নের আখ্যান দাঁড় করিয়ে বাংলাদেশকে নতুন সংকটে ফেলেছে। ধনী গরিবের পার্থক্য কমিয়ে আনার জন্য সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কর্মসংস্থান নির্ভর, মানবিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা খাত উপেক্ষা করে তথাকথিত উন্নয়ন এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। মেগা প্রজেক্টের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের প্রতিযোগিতা এবং বিপদজ্জনক আয় বৈষম্য রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। জাসদ সভাপতি বলেন, করোনার কারণে দেশের প্রায় সব সেক্টরের উৎপাদন বন্ধ থাকায় আমদানি রপ্তানি খাতে বিরাট প্রভাব পড়েছে। এটা শুধু আমাদের দেশের জন্য নয় করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা অতীতের যেকোনো দুর্যোগের চেয়ে বেশি। করোনা পুরো বিশ্বকে গ্রাস করেছে, আর্থিকভাবেও বিপর্যস্ত করেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ আশংকার দিক হচ্ছে করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী ৩০ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যেতে পারে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটও চরম আকার ধারণ করতে পারে।
রব বলেন, করোনায় সৃষ্ট গত দুই মাসে বিপর্যস্ত অর্থনীতির কারণে আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বহু পরিবারের আয় কমেছে, সার্বিকভাবে দারিদ্রের হারও বেড়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর হিসাবে করোনার কারণে দারিদ্রের হার বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি বলেছে করোনার সময়ে ৫ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের শ্রেণি কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। শুধু অতি ধনী ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। আয় বৈষম্য বেড়েছে অনেক। বাংলাদেশ ছিলো উচ্চ ‘আয় বৈষম্যের’ দেশ। সিপিডির মতে বাংলাদেশ এখন বিপজ্জনক ‘আয় বৈষম্যের’ দেশে পরিণত হয়েছে। এই বিপদজ্জনক আয় বৈষম্য কমাতে না পারলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব চরম হুমকিতে পড়বে। বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোতে এবং জিডিপি নির্ভর পরিকল্পনায় মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া আয় বৈষম্য কমানো সম্ভব হবে না।
এখ্যফ্রন্ট নেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রতিদিন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই। অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে লন্ডভন্ড পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমাদেরকে অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করতে হবে। এই ভয়াবহ সঙ্কটে জাতীয় ঐক্য স্থাপন না করে সরকার আত্মম্ভরিতায় একলা চলো নীতি অনুসরণ করে সমগ্র জাতিকে চরম বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এই সঙ্কট উত্তোরণের জন্য সংবাদ সম্মেলনে তিনি বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সামাজিক নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ ও শিক্ষা খাতে বাজেট প্রনয়ননে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া। জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠন করে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রনসহ করোনা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান। মেগা প্রজেক্টসমূহের অপচয় বন্ধ করা। রেন্টাল পাওয়ারের ভর্তুকি বন্ধ করা। গার্মেন্টস সহ সকল শিল্প কলকারখানায় শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা ও জীবন সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া ইত্যাদি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।