পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস মহামারিতে দেশের প্রতি মমত্ববোধ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রবাসী ডা. ফেরদৌস খন্দকার ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে। দেশে এসে পড়েছেন নানা সমালোচনা ও বিপত্তির মুখে। নিজের পরিচয়, ব্যাকগ্রাউন্ড ও দেশে ফেরাসহ নানা বিষয়ে কথা বলতে আজ সোমবার ফেসবুক লাইভে এসে ডা. ফেরদৌস খন্দকার বললেন, আমি আজীবন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। তিনি বলেন, আমি এসেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য। তিনি আরও যেসব কথা বলেছেন তা ইনকিলাবের পাঠকদের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো।
দেশবাসীর সাথে কুশল বিনিময় করে ডা . ফেরদৌস খন্দকার বলেন , গতকাল বিকেলে এক বুক আশা নিয়ে এসেছিলাম আপনাদের পাশে দাঁড়া বো বলে। আসার পর এয়ারপোর্টে বুঝতে পারলাম যে , কিছু দুষ্টু মানুষ আমার পেছনে লেগেছে। তিনি বলেন , যেহেতু আমার নামের পেছনে খন্দকার আছে তাই তারা রাষ্ট্রময় বলতে চেয়েছে আমি খুনি খন্দকার মোস্তাকের আত্মীয়। বলতে চেয়েছে , আমি খুনি কর্নেল রশিদেরও আত্মীয়। এগুলো নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা কর ছি না। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির পাশে আমি ছিলাম বরাবরই। কিছু ডিফিকাল্টিস ছিল প্রথম দিকে। পরে মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছে। আমি তাই এক বুক আশা নিয়ে আপনাদের পাশে এসেছি , আপনাদের পাশে থাকব এই ক্রান্তিকালে। আপনারা আমায় গ্রহণ করবেন তো ? আপনারা প্রস্তুত , আমি আছি আপনাদের সাথে।
করোনাযোদ্ধাদের জন্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে এসেছি জানিয়ে ডা . ফেরদৌস বলেন , যাই হোক , বেশকিছু প্রায় আটটি স্যুটকেস নিয়ে এসেছিলাম সেটায় মাস্ক , গ্লাভস , পিপিই ইত্যাদি সামগ্রী হটলাইনের যোদ্ধা , ডাক্তার , নার্সদের দেবো বলে। এয়ারপোর্টে আটকে দিলো , এগুলোর নাকি ট্যাক্স দিতে হবে এ রকম করোনা ক্রান্তিকালে। রেখেই দিলো , সাথে আনতে পারিনি। তিনি বলেন , আপনাদের কেউ যদি থাকেন , ছাড়াতে পারবেন , ছাড়িয়ে নিয়ে যান। হটলাইনের যে কাউকে দিতে পারেন , আমার কোনো দাবি নাই। আমি এসেছি আপনাদের পাশে আমার কাজটুকু আমি করেছি। উপর থেকে আশা করি , আপনাদের মধ্যে কেউ যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন , এই বাকি কাজটুকু করবেন। যেকোনো একটি হাসপাতালে দিয়ে দেবেন , যেকোনো একটি হাসপাতালে , আপনাদের কাছে আমার একটি অনুরোধ।
ডা . ফেরদৌস খন্দকার বলেন , আমি আজ আমার পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে তুলে ধরব। আগামী পরশু থেকে আমি করোনা নিয়ে কথা বলব। যেহেতু আমার পরিবার নিয়ে কথা উঠেছে , মানুষ পরিবার নিয়ে কথা বলছে , তাই কিছু কথা না বললেই নয়। আপনারা সবাই জানেন ইতিমধ্যে আমার পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন। আমার দাদা ১৯৪৯ সনে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন , আমার বাবা তখন খুবই ছোট , বোধ হয় চার বছর বয়স। আমার বাবারও দাদার স্মৃতি মনে নেই। তিনি বলেন , ‘ আমার দাদা এক ছেলে ছিলেন , উনার বাবাও এক ছেলে ছিলেন , কুমিল্লারই। আমরা সবাই দেবিদ্বারের ছোট্ট একটি গ্রামে থাকি। আমরা সবাই গ্রামের অংশ। সো , আমার বাবা অল্প বয়সে বাবা হারান। এরপর আমার নানি যিনি উনার খালা হন , খুব অল্প বয়সে তার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন , বাবা খুব ভালো স্টুডেন্ট ছিলেন। তো যাই হোক , বাবা এয়ারফোর্সে ঢুকেন। খুব ভালো করেন। আমাদেরও জন্ম হয়। আমি এক ছেলে। আমার ছোট দুটি বোন। আর আমার বাবার একটি বোন , বোনটি গ্রামেই থাকে। আমার বাবা শহরে চলে আসেন। আমরা এই চারজন মানুষের একটি সংসার। পড়ে আমরা বিদেশে চলে যাই , আমেরিকা চলে যাই আপনারা জানেন।
হতাশ কণ্ঠে ডা . ফেরদৌস বলেন , ‘ ঘুমাইনি আজকে , একেবারেই টেনশন হচ্ছে। আপনারা জানেন যে অনেক কিছুই হচ্ছে। নিজের মায়ের পরিবার সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন , ‘ আর আমার মায়ের পরিবার দেবিদ্বারের পাশের মুরাদনগরের কেষ্টপুর গ্রাম। আমার নানা সামরিক বাহিনীতে অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টে কাজ করতেন। সহজ - সরল মানুষ। উনার ছয় ছেলে , এক মেয়ে। আমার হচ্ছে সেই এক মেয়ে। তার প্রথম ছেলে খুরশিদ আনোয়ার সাহেব , উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ওই সময় সেই এলাকার মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার ছিলেন তিনি। পরে ফার্মাসিস্ট হয়ে বিদেশে চলে গিয়েছেন। আমেরিকায় সেটেল ড। দ্বিতীয় ভাই উনার মুক্তিযোদ্ধা , অ্যাকাউন্টেন্ট। বেশ নামকরা মুক্তিযোদ্ধা , ঢাকার বনানীতে। এরপর বাকি যে চার মামা সবাই আমেরিকাতে থাকে। তিনি বলেন , ‘ আমার চার নম্বর মামা মুশতাক আহমেদ। কিছু দুষ্টু লোক এই মুস্তাকের সঙ্গে আমাদের নামের খন্দকার অ্যাড করে বলা শুরু করেছে , আমি খন্দকার মোস্তাকের ভাতিজা। অত্যন্ত আশ্বর্যজনকভাবে সত্য , এই মুশতাক আহমেদ বেঁচে আছে এবং তার বয়স হবে ৫৩ বছর। আর খুনি রশিদের সঙ্গেও এটি মিলিয়ে দিয়েছে। আসলে মানুষ যার যা ইচ্ছা বলে , মানুষের গায়ে কালিমা লাগাতে।
তিনি বলেন , দেখুন আমি বাংলাদেশে এসেছি - আমি কিন্তু মন্ত্রী , এমপি কিচ্ছু হতে চাইনি। আমার হাতে অনেক সুযোগ ছিল। স্বেচ্ছাসেবী কাজগুলো আমি খুব অল্প বয়স থেকে করি। সেই গ্রামে - আপনারা জানেন , কিন্তু আমি কখনোই চাইনি মানুষের সামনে যেতে , নিজের সম্পর্কে বলতে। এগুলো আমার জন্য না। আপনারা এখন যা দেখছেন , গত ৪ - ৫ বছর ইউটিউবে থাকার কারণে আপনারা দেখছেন। তিনি বলেন , ‘ এই খন্দকার নাম হলেই খন্দকার মোস্তাকের ফ্যামিলি হয় ? অথচ কত লক্ষ লক্ষ খন্দকার বাংলাদেশে আছে , তাই না ? এটি কী ঠিক ? বলুন আপনারা। আর এরকম একটি অ্যালিগেশন নি য়ে আজকে আমি ঘরের মধ্যে।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই চিকিৎসক আরও বলেন , ‘ যাই হোক , আমি আজীবন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগ করেছি অ্যাকটিভলি এবং তার আদর্শও ধারণ করেছি। তার মানে এই নয় , অন্য মতের মানুষগুলোকে আমি গালাগালি করছি। আমি তাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছি , তাদের মতের সঙ্গে আমার মিল ছিল না , যুক্তি - তর্কে যা করার তাই করেছি। তার মানে এই নয় , আমি হেরে গেছি , তাদের মতের সঙ্গে মিলে গেছি। এটা আমি স্পষ্ট বলতে চাই এবং করেও যাব। এটিই তো কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। আমি সেই নীতিতে বিশ্বাস করি। দে শের সেবা করতে এসেছেন জানিয়ে ডা . ফেরদৌস বলেন , দেখুন আমি দেশে এসেছি সেবা দিতে। আমি শুধু মুখে বলেই ক্ষান্ত হইনি। আমি পরিবারকে পেছনে ফেলে ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছি। আমি কিন্তু জানিও না , কবে প্লেন খুলবে , আমি আমার পরিবারের কাছে যেতে পারব। আমি কিন্তু আপনাদের দেশে , আপনাদের টানে এসেছি। আমি হেরে যাওয়ার জন্য আসিনি।
তিনি আরও বলেন , ‘ আমার ব্লাড টেস্টে করোনা অ্যান্টিবডি পজিটিভ। আমার কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই। কাকে বোঝাব বলুন ? এই যে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনের নামে আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
তিনি বলেন , যাই হোক , এটিই বুঝি নিয়ম বোধ হয়। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই , আমি এসেছি। আমি এসেছি আপনাদের পাশে সেবা দিতে। আমি জানি আমার মতো এই দুটি হাত বিশিষ্ট , একটি মানুষ না থাকলেও হয়তো কিছুই হবে না। এ রকম হাজারো ফেরদৌস খন্দকার আপনাদের এই মাটিতে আছে। তাও বুকের ভেতর ভালোবাসা নিয়ে এসেছিলাম। আমি চাইনি এখানে অপমানিত হতে , ভালোবাসা না দিক , ধিক্কার যেন না দেয়। তিনি বলেন , আমি এসেছি এই করোনাযুদ্ধে শামিল হতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার মতো করে চেষ্টা করছেন। আমি একজন ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে , একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হয়ে , একজন ডাক্তার হয়ে , একজন মানবদরদী মানুষ হয়ে আমি চেয়েছি এই মুহূর্তে আমাদের যে কাণ্ডারী , আমাদের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় জননেত্রী শেখ হাসিনা র হাতকে শ ক্তিশালী করার জন্য।
ডা. ফেরদৌস বলেন , এই বিরুদ্ধাচারণ হচ্ছে , আমি এই ভূ - খণ্ডে থেকে ফাইট কর বো এবং আপনাদের পাশে দাঁড়াব। আমৃত্যু আমি আপনাদের সাথে আছি। আশা করছি , আপনারাও আমাকে গ্রহণ করবেন সেভাবে। ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন। জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।